Friday, March 10, 2023

একদিন ভালোবাসবে (২৯ পর্ব)

একই বিছানায় বন্দ দরজার ভিতরে নিলয় ও তিয়াসা। তিয়াসা আজ অনেক কিছু মনেমনে ঠিক করে রেখেছিল নিলয়ের কাছ থেকে জানবে বলে। কিন্তু হঠাৎ করেই নিলয় "লাইট অফ করে দিচ্ছি" - বলেই লাইটটা অফ করে দিয়ে তিয়াসার পাশে শুয়ে পরে। এই প্রথম স্বামী,স্ত্রী পাশাপাশি জেগে এক বিছানায়। দু'জনেই উসকুশ করছে কারোরই ঘুম আসে না। শরীর এবং মন দু'জনেরই অন্যকিছু চাইছে। কিন্তু দু'জনের মনের মধ্যেই একটা কিন্তু কিংবা জড়তা কাজ করছে। প্রকৃতির ডাককে কেউই উপেক্ষা করতে পারছে না। নিলয় অন্ধকারের মাঝেই একটু একটু করে তিয়াসার একদম পাশে গিয়ে জানতে চাইলো,
-- পায়ের ব্যথাটা কমেছে।
আধো স্বরে তিয়াসা বললো, "এখন একদম ব্যথা নেই।" কথাটা শুনেই নিলয় একটা হাত দিয়ে তিয়াসাকে কাছে টেনে নিলো। তিয়াসা তার লোমশ বুকে মুখটা গুজে দিতেই নিলয় মুখটা তুলে তার ঠোঁট দুটোতে চুমু করে তিয়াসার জিহবাটা ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করতে করতে মিশে গেলো তারা একে অপরের শরীরের সাথে। একবার নয় বারবার। ফুলশয্যার তিনরাত পরে প্রথম যৌবনের প্রকৃতির এই চরম স্বাদ পেয়ে বাকি রাতটুকু একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দু'জনেই এক শান্তির ঘুম দিলো।

 ভোরের আলো জানলা দিয়ে তিয়াসার মুখে এসে পড়ায় ওর ঘুম ভেংগে গেলো।নিজেকে আবিষ্কার করলো নিলয়ের দুই বাহুর ভিতর। দিনের আলোতে এইভাবে স্বামীর বাহুবন্ধনে খুব লজ্জা করতে লাগে ওর। নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করতেই নিলয় বলে উঠলো,
-- উহু যেভাবে আছো সেইভাবেই থাকো
-- তুমি জেগে আছো
-- ইয়েস ম্যাডাম। 
 কথাটা বলেই আরও জোরে তিয়াসাকে বুকের সাথে চেপে ধরে পুণরায় ঠোঁট দুটোতে আশ্রয় নিল।
নিলয়ের পাগলামিতে তিয়াসা মৃদু হেসে বললো,
-- এই এখন ছাড়ো। অনেক বেলা হল।এখুনি পিয়া এসে উল্টোপাল্টা কথা বলবে।
-- বলুক।নিজের বউকে নিয়ে শুয়ে তাকে আদর করছি সেটা কেউ বললে আমার একটুও গায়ে লাগবে না।
-- খুব না? আচ্ছা মশাই একটা কথা বলো তো? এই যে তোমার এত চাহিদা তাহলে ফুলশয্যার রাতে কী করে নিজেকে সরিয়ে রাখলে।
 বাচ্চা ছেলের মত নিলয় বলে উঠলো,
-- ভুল করেছি। বুঝতে পারিনি এইরূপ একজন সুন্দরী নারীর সংস্পর্শে থাকলে আমি গলে যাবো। উফ্ কী রূপ তোমার। বিয়ের সময় তো ভালো করে দেখিনি। দেখলাম তো গতকাল সকালে হলুদ নাইটি পরা অবস্থায়। ইচ্ছে করছিল তখনই --
কথাটা বলেই নিলয় নিজের মুখটা নিয়ে তিয়াসার গলা,পিঠে ঘষতে লাগলো। আর মৃদু স্বরে বলতে লাগলো,
-- পাগল করা রূপ। ওই রূপ দিয়েই আমায় পাগল করে দিয়েছো। আমি ভাবতেই পারিনি তোমার পাশাপাশি শুয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবো না। 
--- তুমি খুশি
 দুহাতে তিয়াসাকে বুকের সাথে চেপে ধরে নিলয় বলে,
-- খুশি,খুশি,ভীষণ খুশি।
-- তবে মশাই ফুলশয্যার রাতে ওই ন্যাকামোটা কেন ছিল?
-- বলবো একদিন। তবে এই মুহূর্তে ওসব কথা তুলে আমি এই সুখটাকে বিসর্জন দিতে চাই না।
 বলেই পুণরায় তিয়াসার ঠোঁটে চুমু করে নিলয়। তিয়াসা তার প্রতিদান দিয়ে বলে,
-- লক্ষীসোনা আমার এবার ছাড়ো। সত্যিই খুব বেলা হয়ে গেছে।
 বলতে বলতেই পিয়ার ডাক শোনা গেলো,
--- ও দিদি, তোদের কি ঘুম ভাঙ্গার সময় হল? নাকি তোরা অন্য কোন রাজ্যে আছিস?
 ভিতর থেকেই পিয়ার হাসির আওয়াজ শুনতে পেলো ওরা। নিলয় তিয়াসাকে মুক্ত করে বললো,
-- এসে গেছে।আমি বাবা শুয়েই থাকবো চোখ বন্ধ করে।পিয়ার মুখে কিছুই আটকায় না।
 কথাটা বলেই হাসতে হাসতে পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো নিলয়। যথা সম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে তিয়াসা দরজা খুলে দিয়ে বললো,
-- ও তুই চা নিয়ে এসেছিস। তুই তোর নিলয়দাকে ডাক ওতো আবার বেড টি না হলে ওঠে না। আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি।
 পিয়ার দিদির পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে দিদি একদম নর্মাল ভাবে হাঁটছে। সে দিদির কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
-- এই দিদি , তোর পা তো একদম ঠিক হয়ে গেছে রে! তা রাতে নিলয়দা তোকে কী ওষুধ দিলো যে তোর পা একদম ঠিক হয়ে গেলো। নাকি কাল বরের কোলে ওঠার জন্য ওটা তোর --
 তিয়াসা বোনের কান ধরে টেনে বলে,
-- সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে একটু কৃষ্ণ নাম করতে হয়।এরকম খারাপ কথা বলতে নেই।
-- কী বলছিস দিদি! তুই না সেই একইরকম থেকে গেলি। পৃথিবীর সব চেয়ে পবিত্র সম্পর্ক তো স্বামীর,স্ত্রীর রাতের কার্যকলাপ!
 বলেই জোরে জোরে হাসতে লাগলো। তিয়াসা পিয়ার পিঠে গুপ করে এক ঘুষি বসিয়ে দিয়ে বললো,
-- দাঁড়া বাবাকে বলবো তোর আর পড়াশুনার দরকার নেই। তোর এখুনি একটা বিয়ে দেওয়া দরকার।
 কথাটা বলেই পিয়ার হাত থেকে বাঁচতে তিয়াসা ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলো।
 নিলয় পাশ ফিরে থেকে শালীর সব কথা শুনে মনেমনে ভাবলো 'কি ডেঞ্জারাস মেয়ে রে বাবা! মুখে কিছুই আটকায় না। ভাগ্যিস ঘুমের ভান করে পরে আছি। তানাহলে তো আমাকেও এই একইভাবে অ্যাটাক করতো।" কিন্তু নিলয় বুঝতেই পারেনি তার একমাত্র আদরের শালীটি একটি ধানীলঙ্কা।নিলয়কে ডেকে চা দেওয়ার পর তার মুখ,বুকের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
-- নিলয়দা কাল কি সারারাত দিদির সাথে সিঁদুর খেলেছো? তোমার মুখ, বুক,গেঞ্জি সব জায়গায় সিঁদুর লেগে আছে।
 ফিকফিক করে হেসে চলেছে পিয়া।আর লজ্জা পেয়ে নিলয় কী বলবে বুঝতে না পেরে চায়ে চুমুক দিয়ে বললো,
-- আহ্ সকালে এইরূপ এককাপ চা পেলে আর কিছু লাগে না।
-- তার আগে রাতের খেলাটা জম্পেশ হওয়া দরকার।কি বলো?
 নিলয় পিয়ার মাথাটা ধরে নিচু করে পিঠে গুপগুপ করে কয়েকটা হালকা ঘুষি দিয়ে বললো,
-- শালী জী সবই তো বোঝো।এইভাবে কেন লজ্জা দিচ্ছ বলো তো?
 পিয়া হাসতে হাসতে নিচুতে চলে গেলো।

ক্রমশ 

  

No comments:

Post a Comment