দায়িত্ব
( Nanda Mukherjee)
************** হঠ্য়াত কোরে এতদিনপরে লিপির সাথে দেখা হয়ে যাবে বিপুল এটা কোনদিন ও ভাবে নি l বিপুল হাওড়া স্টেশন এ দিল্লীগামী ট্রেন এর জন্য অপেক্ষা করছিল l একটা ছোট মেয়ে ছুটাছুটি কোরতে কোরতে হঠ্য়াত পড়ে যায় l বিপুল দেখতে পেয়ে দৌড়ে যেয়ে মেয়েটিকে তোলে l তার কাছে প্রশ্ন কোরে জানতে পারে সে তার মায়ের সাথে এসেছে মেয়েটির সাথে বসে বিপুল গল্প কোরতে থাকে l ট্রেন কিছুটা লেট ছিলো l হঠ্য়াত মেয়েটির মা হন্তদন্ত হোয়ে এসেই ছোট মেয়েটিকে বলতে শুরু করেন - "তোকে যে বললাম চুপচাপ বসে থাকতে l একটু অন্যমনস্ক হয়েছি আর সঙ্গে সঙ্গে তুই চলে আসছিস- সেই থেকে তোকে খুজছি- চল-" হঠ্য়াত করে বিপুলের দিকে চোখ যেতেই মেয়েটির মা বলে ওঠে- "বিপুলদা তুমি এখানে"- বিপুল ও এতক্ষণ পরে তাকে চিনতে পারে l কি চেহারা হয়েছে লিপিকার l সেই সুন্দর মুখখানার সাথে এখনকার লিপিকার চেহারার কোনো মিল নেই l এই কি সেই লিপিকা l বিপুল ভাবে এটা কি করে সম্ভব ? কোথায় যাচ্ছে লিপিকা একা মেয়েকে নিয়ে ? ওর স্বামী ই বা কোথায় ? কালো মেঘের মতো একরাশ ঘন চুল; সুন্দর টানা টানা দুটি চোখ , দুধে আলতা গায়ের রং- কোথায় গেলো সে সব ? একি সেই লিপিকা ? যে কিনা একদিন বিপুল কে ভিসন ভালবেসেছিল l বলেছিলো "বিপুলদা আমি তোমায় ভালবাসি"- শুনে বিপুল চমকে উঠেছিল l বিপুল ও লিপিকাকে ভালোবাসত l কিন্তু বুঝতে পারেনি লিপিও তাকে ভালোবাসে l লিপি ছিল বড়লোকের একমাত্র মেয়ে l বিপুল ভেবেছিল ভালোবাসাটা বুঝি তার একতরফা l লিপির আচরনে কোনদিনও সেটা প্রকাশ পায়নি l বিপুল ছিলো গরীব ঘরের সন্তান l চার ভাই বোন তারা l বিপুল ই বড় l বাবা বেসরকারী অফিস এর একজন সাধারণ কর্মচারী l সংসারে অভাব নিত্য সঙ্গী l বিপুল পড়াশুনার ফাঁকে টিউসনি কোরে মাস শেষে যা পেতো মায়ের হাতে তুলে দিত l এমন অনেক দিন ও তাদের গেছে পেট ভরে দুবেলা খেতে পারেনি l এহেন পরিবারের সন্তান সে কিনা বলবে এক্জিকেউতিভ ইন্জিনীয়র এর একমাত্র মেয়েকে ভালবাসে l না কিছুতেই না l তার সামনে এখন অনেক দায়িত্ব l মা বাবার অনেক আশা তাকে নিয়ে l পাশ কোরে বেড়িয়েই যেভাবে হোক একটা চাকরির ব্যবস্থা তাকে করতেই হবে l ছোটভাইবোন গুলিকে মানুষ কোরতে হবে l তাই তার নীরব ভালবাসার কথাটা নীরবেই বুকের ভিতর রেখে দেয় l কিন্তু কলেজ এ রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনে লিপিকার মুখে ওই কথাটি শুনে কিছুক্ষণের জন্য বিপুল বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিল l সম্বিত ফিরে পেয়ে সে লিপিকার কথার উত্তর না দিয়েই যখন চলে যাছিল; লিপিকা তাকে বলেছিলো- "বিপুলদা কিছু বললে না ?" বিপুল সে কথার ও কিছু উত্তর দেয়নি l লিপিকা তখন আবার ও বলল- "কাল টিফিন আওযার এর মধ্যে তোমার উত্তরটা আমার চাই"l বিপুল পরদিন টিফিন পিরিয়ড এ সুযোগ বুঝে লিপিকার হাতে একটি খাম ধরিয়ে দিয়ে বলল- "গতকাল তুমি আমাকে যে কথাগুলি বলেছিলে তার উত্তরটা দিলাম"l লিপিকা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি বিপুল তাকে প্রত্যখান করবে l তার উত্তরটা যা ছিল তার সার সংক্ষেপ কোরলে দাড়ায়- বিপুল গরিবের সন্তান l তার কাধে অনেক দায়িত্ব l লিপিকার মতো বড়লোকের মেয়েকে তার জীবনে এনে তাকে দারিদ্যের অভিশাপের ভিতর ফেলতে পারবে না l লিপিকা সেদিন কষ্ট পেলেও বিপুলের পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেছিল l বিপুলের প্রতি তার সম্মান ও ভালবাসা দুই ই বেড়ে গেছিল l দুবছরের সিনিয়র বিপুল যতদিন কলেজ এ ছিল তাকে কোনদিনও লিপিকা একথা নিয়ে কিছু আর বলেনি l লিপিকাও দেখেছে বিপুল ও তাকে পারতপক্ষে এড়িয়ে চলত l উভয়য়ের ই ভিতরে একটা চাপা কষ্ট ছিল l কিন্তু কেউ কোনদিনও পরস্পরকে সেটা বুঝতে দেয়নি l চিরদিনের মেধাবী ছাত্র বিপুল গ্রাজুয়েট হয়েই ব্যাঙ্ক এর উচ্চ পদে চাকরি পেয়ে যায় l দুটি বোনের পড়াশুনা শেষের পরে ভালো ঘরে বিয়েও দিয়ে দেয় l ছোট ভাইটি এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে l বাবা বছর দুই আগে গত হয়েছেন l মায়ের বহু পিড়াপিড়ি সর্তেও সে বিয়ে কোরতে রাজী হয়নি l কিন্তু চাকরী পাওয়ার পর সে লিপিকাদের অনেক খোজ করেছে l পুরানো বান্ধবদের কাছ থেকে ঠিকানা জোগার করে সে লিপিকাদের বাড়িতে গেছে l যেয়ে শুনেছে তারা বাড়ী বিক্রি কোরে অন্যত্র চলে গেছেন l কিন্তু বিপুলের মন থেকে লিপিকার ভালবাসা, লিপিকার চেহারা, লিপিকার প্রথম তাকে ভালোবাসার কথা জানানো কোনটাই মুছে যায়নি l লিপিকাকে সে ভালোবেসেছিল সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে l জীবনে প্রথম এবং শেষ ভালবাসা তার l কিন্তু বিশাল কর্ত্যবের সামনে ভালোবাসার বলিদান দিতে হয়েছিল তাকে l কিন্তু আজ সে কোন লিপিকাকে দেখছে ? "বিপুলদা, তুমি আমায় চিনতে পারছ না ?" লিপিকার কথায় বিপুলের সম্বিত ফিরলো l "তোমার এ রকম চেহারা হয়েছে কেন ? তুমি একা মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছ ? তোমার স্বামী কোথায় ?" "আচ্ছা তুমি এতগুলি প্রশ্ন কোরলে আমায় ? দাড়াও -একটা একটা করে উত্তর দি এই যে বললেনা -একা একা, দুকা কোথায় পাব ? তুমিকি আমায় দেখেও কিছু বুঝতে পারছ না ?" এতক্ষনে বিপুল ভালোভাবে লিপিকার মুখের দিকে তাকালো l না- কোথাও কোনো সিদুরের রেখা দেখতে পেলোনা l হাত দুটিও তো ফাকা l লিপিকার কাছে - যেটুকু জানতে পারল পাশ করে বেরোবার পরে বাবার হঠ্য়াত স্ট্রোক হয় l হাসপাতাল থেকে তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেন না l বাবার মৃত্যুর বছর খানেক পর তার বিয়ে হয় একজন বড়ো ব্যবসায়ী র সাথে l দুবছর বাদে তার এই ফুটফুটে মেয়েটির জন্ম l এর কিছুদিনের মধ্যেই স্বামীর ক্যান্সার ধরা পরে l তিন বছর চিকিত্সার পর মাসখানেক আগে মেয়েকে ও তাকে রেখে সঞ্জয় চিরদিনের মতো চলে গেছে l তারপর থেকে সে কিছুদিন দেওর ও জায়ের সাথে শ্বসুর বাড়িতে ছিলো l শ্বসুর শ্বাশুড়ি আগেই গত হয়েছেন l এখন সে চিরকালের জন্য নিজের মায়ের কাছে ফিরে যাচ্ছে l বিপুল অবাক হয়ে লিপিকার কথা শোনে l বুকের ভিতরটা তার যন্ত্রনায় ফেটে যাচ্ছে l এ কি শুনছে সে !!!! এতদিন সে ভাবতো লিপিকা সুখে সংসার কোরছে l শুধু লিপিকাকে না পাওয়ার যন্ত্রণা টা ছিল l কিন্তু আজকের পর থেকে যে হাজার গুন যন্ত্রনাটা বেড়ে গেল l "বিপুলদা, আমার ট্রেন এসে গেছে- আমরা আসি, আজকে তোমায় দেখে খুব ভালো লাগলো, খুব শান্তি পেলাম l" "এখন তোমরা কোথায় থাকো"? বিপুল জিগ্ঘাসা করলো l "বাবার মৃত্যুর পর কটকে মামা বাড়ির কাছে ওই আগের বাড়িটা বিক্রি কোরে মা ছোট একটা বাড়ি কিনেছেন l এখন থেকে বাকি জীবনটা মেয়েকে নিয়ে সেখানেই থাকব l আসি-" মেয়ের হাত ধরে লিপিকা ট্রেন এর দিকে এগিয়ে গেল l কিছুক্ষণ পরে বিপুলের খেয়াল হোলো লিপিকার ঠিকানাটা তো রাখা হোলো না l দৌড়ে সে এগিয়ে গেলো l কিন্তু অত ভিড়ের মাঝে বিপুল লিপিকা বা তার মেয়ে কাউকেই সে দেখতে পেলো না l বোবা একটা যন্ত্রণা তার ভেতরটা তখন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে l তার মনে হোতে লাগলো -লিপিকার এই ভয়াবহ পরিণতির জন্য সেই দায়ীl. ১৩ ৯ ১৫
( Nanda Mukherjee)
************** হঠ্য়াত কোরে এতদিনপরে লিপির সাথে দেখা হয়ে যাবে বিপুল এটা কোনদিন ও ভাবে নি l বিপুল হাওড়া স্টেশন এ দিল্লীগামী ট্রেন এর জন্য অপেক্ষা করছিল l একটা ছোট মেয়ে ছুটাছুটি কোরতে কোরতে হঠ্য়াত পড়ে যায় l বিপুল দেখতে পেয়ে দৌড়ে যেয়ে মেয়েটিকে তোলে l তার কাছে প্রশ্ন কোরে জানতে পারে সে তার মায়ের সাথে এসেছে মেয়েটির সাথে বসে বিপুল গল্প কোরতে থাকে l ট্রেন কিছুটা লেট ছিলো l হঠ্য়াত মেয়েটির মা হন্তদন্ত হোয়ে এসেই ছোট মেয়েটিকে বলতে শুরু করেন - "তোকে যে বললাম চুপচাপ বসে থাকতে l একটু অন্যমনস্ক হয়েছি আর সঙ্গে সঙ্গে তুই চলে আসছিস- সেই থেকে তোকে খুজছি- চল-" হঠ্য়াত করে বিপুলের দিকে চোখ যেতেই মেয়েটির মা বলে ওঠে- "বিপুলদা তুমি এখানে"- বিপুল ও এতক্ষণ পরে তাকে চিনতে পারে l কি চেহারা হয়েছে লিপিকার l সেই সুন্দর মুখখানার সাথে এখনকার লিপিকার চেহারার কোনো মিল নেই l এই কি সেই লিপিকা l বিপুল ভাবে এটা কি করে সম্ভব ? কোথায় যাচ্ছে লিপিকা একা মেয়েকে নিয়ে ? ওর স্বামী ই বা কোথায় ? কালো মেঘের মতো একরাশ ঘন চুল; সুন্দর টানা টানা দুটি চোখ , দুধে আলতা গায়ের রং- কোথায় গেলো সে সব ? একি সেই লিপিকা ? যে কিনা একদিন বিপুল কে ভিসন ভালবেসেছিল l বলেছিলো "বিপুলদা আমি তোমায় ভালবাসি"- শুনে বিপুল চমকে উঠেছিল l বিপুল ও লিপিকাকে ভালোবাসত l কিন্তু বুঝতে পারেনি লিপিও তাকে ভালোবাসে l লিপি ছিল বড়লোকের একমাত্র মেয়ে l বিপুল ভেবেছিল ভালোবাসাটা বুঝি তার একতরফা l লিপির আচরনে কোনদিনও সেটা প্রকাশ পায়নি l বিপুল ছিলো গরীব ঘরের সন্তান l চার ভাই বোন তারা l বিপুল ই বড় l বাবা বেসরকারী অফিস এর একজন সাধারণ কর্মচারী l সংসারে অভাব নিত্য সঙ্গী l বিপুল পড়াশুনার ফাঁকে টিউসনি কোরে মাস শেষে যা পেতো মায়ের হাতে তুলে দিত l এমন অনেক দিন ও তাদের গেছে পেট ভরে দুবেলা খেতে পারেনি l এহেন পরিবারের সন্তান সে কিনা বলবে এক্জিকেউতিভ ইন্জিনীয়র এর একমাত্র মেয়েকে ভালবাসে l না কিছুতেই না l তার সামনে এখন অনেক দায়িত্ব l মা বাবার অনেক আশা তাকে নিয়ে l পাশ কোরে বেড়িয়েই যেভাবে হোক একটা চাকরির ব্যবস্থা তাকে করতেই হবে l ছোটভাইবোন গুলিকে মানুষ কোরতে হবে l তাই তার নীরব ভালবাসার কথাটা নীরবেই বুকের ভিতর রেখে দেয় l কিন্তু কলেজ এ রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনে লিপিকার মুখে ওই কথাটি শুনে কিছুক্ষণের জন্য বিপুল বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিল l সম্বিত ফিরে পেয়ে সে লিপিকার কথার উত্তর না দিয়েই যখন চলে যাছিল; লিপিকা তাকে বলেছিলো- "বিপুলদা কিছু বললে না ?" বিপুল সে কথার ও কিছু উত্তর দেয়নি l লিপিকা তখন আবার ও বলল- "কাল টিফিন আওযার এর মধ্যে তোমার উত্তরটা আমার চাই"l বিপুল পরদিন টিফিন পিরিয়ড এ সুযোগ বুঝে লিপিকার হাতে একটি খাম ধরিয়ে দিয়ে বলল- "গতকাল তুমি আমাকে যে কথাগুলি বলেছিলে তার উত্তরটা দিলাম"l লিপিকা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি বিপুল তাকে প্রত্যখান করবে l তার উত্তরটা যা ছিল তার সার সংক্ষেপ কোরলে দাড়ায়- বিপুল গরিবের সন্তান l তার কাধে অনেক দায়িত্ব l লিপিকার মতো বড়লোকের মেয়েকে তার জীবনে এনে তাকে দারিদ্যের অভিশাপের ভিতর ফেলতে পারবে না l লিপিকা সেদিন কষ্ট পেলেও বিপুলের পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেছিল l বিপুলের প্রতি তার সম্মান ও ভালবাসা দুই ই বেড়ে গেছিল l দুবছরের সিনিয়র বিপুল যতদিন কলেজ এ ছিল তাকে কোনদিনও লিপিকা একথা নিয়ে কিছু আর বলেনি l লিপিকাও দেখেছে বিপুল ও তাকে পারতপক্ষে এড়িয়ে চলত l উভয়য়ের ই ভিতরে একটা চাপা কষ্ট ছিল l কিন্তু কেউ কোনদিনও পরস্পরকে সেটা বুঝতে দেয়নি l চিরদিনের মেধাবী ছাত্র বিপুল গ্রাজুয়েট হয়েই ব্যাঙ্ক এর উচ্চ পদে চাকরি পেয়ে যায় l দুটি বোনের পড়াশুনা শেষের পরে ভালো ঘরে বিয়েও দিয়ে দেয় l ছোট ভাইটি এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে l বাবা বছর দুই আগে গত হয়েছেন l মায়ের বহু পিড়াপিড়ি সর্তেও সে বিয়ে কোরতে রাজী হয়নি l কিন্তু চাকরী পাওয়ার পর সে লিপিকাদের অনেক খোজ করেছে l পুরানো বান্ধবদের কাছ থেকে ঠিকানা জোগার করে সে লিপিকাদের বাড়িতে গেছে l যেয়ে শুনেছে তারা বাড়ী বিক্রি কোরে অন্যত্র চলে গেছেন l কিন্তু বিপুলের মন থেকে লিপিকার ভালবাসা, লিপিকার চেহারা, লিপিকার প্রথম তাকে ভালোবাসার কথা জানানো কোনটাই মুছে যায়নি l লিপিকাকে সে ভালোবেসেছিল সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে l জীবনে প্রথম এবং শেষ ভালবাসা তার l কিন্তু বিশাল কর্ত্যবের সামনে ভালোবাসার বলিদান দিতে হয়েছিল তাকে l কিন্তু আজ সে কোন লিপিকাকে দেখছে ? "বিপুলদা, তুমি আমায় চিনতে পারছ না ?" লিপিকার কথায় বিপুলের সম্বিত ফিরলো l "তোমার এ রকম চেহারা হয়েছে কেন ? তুমি একা মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছ ? তোমার স্বামী কোথায় ?" "আচ্ছা তুমি এতগুলি প্রশ্ন কোরলে আমায় ? দাড়াও -একটা একটা করে উত্তর দি এই যে বললেনা -একা একা, দুকা কোথায় পাব ? তুমিকি আমায় দেখেও কিছু বুঝতে পারছ না ?" এতক্ষনে বিপুল ভালোভাবে লিপিকার মুখের দিকে তাকালো l না- কোথাও কোনো সিদুরের রেখা দেখতে পেলোনা l হাত দুটিও তো ফাকা l লিপিকার কাছে - যেটুকু জানতে পারল পাশ করে বেরোবার পরে বাবার হঠ্য়াত স্ট্রোক হয় l হাসপাতাল থেকে তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেন না l বাবার মৃত্যুর বছর খানেক পর তার বিয়ে হয় একজন বড়ো ব্যবসায়ী র সাথে l দুবছর বাদে তার এই ফুটফুটে মেয়েটির জন্ম l এর কিছুদিনের মধ্যেই স্বামীর ক্যান্সার ধরা পরে l তিন বছর চিকিত্সার পর মাসখানেক আগে মেয়েকে ও তাকে রেখে সঞ্জয় চিরদিনের মতো চলে গেছে l তারপর থেকে সে কিছুদিন দেওর ও জায়ের সাথে শ্বসুর বাড়িতে ছিলো l শ্বসুর শ্বাশুড়ি আগেই গত হয়েছেন l এখন সে চিরকালের জন্য নিজের মায়ের কাছে ফিরে যাচ্ছে l বিপুল অবাক হয়ে লিপিকার কথা শোনে l বুকের ভিতরটা তার যন্ত্রনায় ফেটে যাচ্ছে l এ কি শুনছে সে !!!! এতদিন সে ভাবতো লিপিকা সুখে সংসার কোরছে l শুধু লিপিকাকে না পাওয়ার যন্ত্রণা টা ছিল l কিন্তু আজকের পর থেকে যে হাজার গুন যন্ত্রনাটা বেড়ে গেল l "বিপুলদা, আমার ট্রেন এসে গেছে- আমরা আসি, আজকে তোমায় দেখে খুব ভালো লাগলো, খুব শান্তি পেলাম l" "এখন তোমরা কোথায় থাকো"? বিপুল জিগ্ঘাসা করলো l "বাবার মৃত্যুর পর কটকে মামা বাড়ির কাছে ওই আগের বাড়িটা বিক্রি কোরে মা ছোট একটা বাড়ি কিনেছেন l এখন থেকে বাকি জীবনটা মেয়েকে নিয়ে সেখানেই থাকব l আসি-" মেয়ের হাত ধরে লিপিকা ট্রেন এর দিকে এগিয়ে গেল l কিছুক্ষণ পরে বিপুলের খেয়াল হোলো লিপিকার ঠিকানাটা তো রাখা হোলো না l দৌড়ে সে এগিয়ে গেলো l কিন্তু অত ভিড়ের মাঝে বিপুল লিপিকা বা তার মেয়ে কাউকেই সে দেখতে পেলো না l বোবা একটা যন্ত্রণা তার ভেতরটা তখন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে l তার মনে হোতে লাগলো -লিপিকার এই ভয়াবহ পরিণতির জন্য সেই দায়ীl. ১৩ ৯ ১৫
No comments:
Post a Comment