Saturday, July 30, 2016

*কিছুই বুঝিস না * ( নন্দা মুখার্জী )
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি ভালোবাসি তোকে অন্তর থেকে -
            তাই যখন তুই আমার -
            চোখের সামনে থাকিস না -
             তখনও আমি তোকে দেখতে পাই -
কারণ কি জানিস ?
              তুই যে আমার অন্তরেই আছিস /
তোর যখন খুব রাগ হয় -
              আমার তখন খুব অভিমান হয় -
               আর আমি এ-ও জানি -
              তুই কাছে টেনে নিলেই -
                আমার অভিমান জল হয়ে যাবে -
কেনো জানিস ?
                আমার জীবনে তুই- ই তো সব /
আবার তোর যখন খুব শরীর খারাপ করে -
               আমি তোকে কাছছাড়া করিনা -
                কারণ আমি জানি -
               আমি তোর কাছে থাকলে -
               তোর শরীর অর্ধেক ভালো হয়ে যাবে -
কারণটা কোনোদিন খুঁজেছিস ?
              তুই ও যে আমায় খুব ভালোবাসিস /
------------------------------------
(নন্দা মুখার্জী ) 28.7.13   2-20AM.             

Friday, July 29, 2016

*বুমেরাং*  (নন্দা মুখার্জী ).
**************************
বাবা,তুমি যাচ্ছ কোথায় ?
   মায়ের সাথে সেজে -
আমায় কেনো বলছো নাগো ?
   তোমাদের সাথে যেতে ?
ছেলের কথা শুনে বাবা ,
   মুচকি হেসে বলেন -
যাচ্ছি আমরা বৃদ্ধাশ্রমে,
   তোমার ঠাকুমা থাকেন যেখানে /
আমাকে তোমরা নিয়ে যাও সাথে ,
   দেখবো আমি জায়গাটা ,
আমি যখন হবো বড়ো  ,
   থাকবে তোমরা কোথায় ?
বুঝতে হবেই আমায় ব্যাপারটা !
তোমরা বলো তোমাদের দেখে ,
   শিখি যেনো  সকল কিছু -
তাইতো আমি শিখতে চাই ,
   ছেলে অনেক বড় হলে ,
কোথায় থাকে বাপ্ ও মায় !
------------------------------
( নন্দা মুখার্জী ) 27.7.16  1 AM.
 
  

Wednesday, July 27, 2016

*আঁধার চারিদিকে*  ( নন্দা মুখার্জী )
""""""""""""""""""""""""""""""""""
আঁধার যেন আসছে ধেয়ে -   
   আলোর বড়োই আকাল -
চারিদিকে ছেয়ে গেছে অন্ধকারে -   
   মনুষ্যত্বের বড়োই অভাব /
  জীবন হয়ে গেছে মূল্যহীন -   
অর্থই যেনো সব -
   নরপশুরা করছে গ্রাস -  
নিরীহ মানুষের প্রাণ /
   নারীর সম্মান হচ্ছে ভূ-লুন্ঠিত -   
শিশুকেও দেয়না রেহাই -
মানুষ নামের অযোগ্য সব -   
  এদের  নেই কোনোই পরিত্রান / 
------------------------------
নন্দা মুখার্জী  27.7.16  1 AM.

Tuesday, July 26, 2016

* হঠ্যাৎ প্লাবন * ( নন্দা মুখার্জী )
===================
গুরুম গুরুম ডাকে মেঘ -
  বৃষ্টি হবে বুঝি -
জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আমি -
  চোখের জল মুছি /
বৃষ্টি যখন বেগে আসে -
  চোখের জলও বাঁধ মানে না যে -
আবীর রঙ্গা ফাগুন যেন -
  জীবন থেকে হারিয়ে গেছে /
মুছে যাচ্ছে অতীত স্মৃতি -
  বয়সের ভারে তারাও নত বুঝি -
দীর্ঘদিনের সোনার সংসার -
  ভেঙ্গে বুঝি এবার হবে খান খান /
ছেলেরা সব পাঠিয়ে দেবে -
  আমায় বৃদ্ধাশ্রমে -
কেউ পারবে না রাখতে আমায় -
  তাদের আলয়ে /
এতো বিশাল বাড়ি তারা -
  দেবে এবার বিক্রি করে -
কিনবে তারা ফ্লাট বুঝি -
  থাকবে যে যার মত করে /
আমার ভার বহন করার -
  একার কারও নেই ক্ষমতা -
পারিনি তাদের কোরতে মানুষ -
  এটাই মোদের অক্ষমতা /
যখন তুমি চলেই গেলে -
  নিয়ে যদি যেতে সাথে -
ফেলে তুমি গেলে আমায় -
  এ কাদের কাছে ?
তোমার সুখের সংসার আমি -
  পারলাম নাগো রাখতে ধরে -
যত শীঘ্র পারো ওগো -
  আমায় আবার কাছে টানো /
--------------------------------
(নন্দা মুখার্জী )  25.7.16  11-45 PM.
*তুমি শুধু আমার*              (নন্দামুখার্জী )
**********************
এমন ভাবে তাকাও কেনো ?
 আমার দিকে তুমি -
বুক যে আমার কেঁপে উঠে ,
 শিহরিত হই আমি /
বলবো বলে অনেক কথা ,
 জমা আমার বুকে ,
তাঁকালে তুমি অমন ভাবে ,
 কথা থেমে যায় মুখে /
সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ,
 বুকেই উঠে ঢেউ ,
তুমি ছাড়া এ জীবনে -
মোর আর তো নেই কেউ /
কেমন কোরে বুঝাবো তোমায় -
 আমার ভালোবাসার কথা ,
আমার জীবনে তুমিই সব ,
 তুমিই যে মোর জীবন দেবতা /
...................................+....................................
নন্দা মুখার্জী   20.7.16   12-30AM.

Monday, July 25, 2016

*আপনজনের আঘাত*  ( নন্দা মুখার্জী )
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ভালোবাসার মানুষগুলো -
 দেয় যখন ব্যথা -
সময়টা তখন থম্কে দাঁড়ায় -
 মনে পড়ে অতীতের কথা /
স্বার্থপর দুনিয়াতে সবাই স্বার্থান্বেষী -
 ভালোবাসার বিনিময়ে আঘাত দেওয়াই -
এটাই আজ হয়ে গেছে -
 সকলের কাছে নীতি /
আপন ,পরের ভেদাভেদ -
 তখন বড্ড বেশি বুকে বাজে -
ইচ্ছা না হলেও অনিচ্ছাতে -
 ভুলতে হয় তাদের সকল কাজে /
বিবেক দরজায় কড়া নাড়ে -
 দরজা তখন বন্ধ তালা -
ভালোবাসার স্মৃতিগুলি -
 বাড়ায় শুধু মনের জ্বালা /
প্রতিবেশী আসে যখন আনন্দানুষ্ঠানে -
 "অমুকে কেনো আসেনি -?"
ইচ্ছা করেই তখন যেনো -
 শুনিনা কিছু কানে /
শ্রদ্ধা,স্নেহ ,ভালোবাসার -
 বড়ই যে জ্বালা -
মাঝে মাঝে জীবনকে করে দেয় -
 অন্ধ ও কালা /
""""""""""""""""""""""""
(নন্দা মুখার্জী ) 24.7.16 1PM.

Sunday, July 24, 2016

*ফাঁকিবাজ*    
(নন্দা মুখার্জী )
মাগো আমায় বলবি না আর - 
শুধু কেবল পড়তে ,
বইয়ের বোঝা পিঠে চাপিয়ে ,
  স্কুলেতে যেতে /
  টিফিন সব খেয়ে নেয় -
   বন্ধুরা সকল মিলে ,
আমি যে মা তোর বোকা ছেলে ,
   দেখি কেবল চেয়ে /
  তার চেয়ে বরং লিখবো আমি -
   বসে গাছের ছাওয়ায় ,
ভরিয়ে দেবো কাগজের পর কাগজ ,   গানে ,গল্পে ,কবিতায় /
  হাসছো কেনো ? শোনো মাগো -
   জানি আমি, বিশ্ব কবির কথা ,
পড়াশুনা কোরবো কম  ,  
লিখবো শুধুই কবিতা /
  যখন  ছিলেন তিনি -
   মায়ের ছোট্ট রবি ,
 তখন কি জানতেন, মা ?  
একদিন হবেন বিশ্বকবি /
  আমিও মা পড়বো কেবল -
   শুধু তোর কাছেতে যত ,
প্রভাতের রবির মতো দেবো কিরণ ,   হবোই হবো বিশ্বখ্যাত /
নন্দা মুখার্জী 24.7.16.
* দুটি মন * ( নন্দা মুখার্জী )
<><><><><><><><><>
অনেকদিন দেখিনা তোমায় -
   একটু দেখতে তোমায় চায় ,
কবে তুমি আসবে কাছে ?
  জানাবে কি আমায় ?
এখন কত সুযোগ আছে -
  খবর করার আদান-প্রদান ,
জিদ ধরে বসে আছো ,
  এতো কিসের অভিমান ?
রাগের মাথায় বলেছিলাম -
  রাখবো না আর যোগাযোগ ,
সেটাই তুমি সত্যি ভাবলে ?
  মনের ব্যথা বুঝলে না /
জানি তুমি ভোলোনি আমায় -
  আমিও যেমন ভুলিনি ,
স্মৃতিগুলি চোখে ভাসে ,
  মনে পড়ে সকল কাজে তোমায় /
আমি যেমন রাখি খবর তোমার -
  তুমিও তেমন রাখো জানি ,
মন দু'টি আছে একই খানে ,
  শুধু দেখা নেই তোমার আমার /
--------------------------------
(নন্দা মুখার্জী )  24.7.16  1-10AM.

Friday, July 22, 2016

* ভালোবাসার মালা * ( নন্দা মুখার্জী )
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মাঝি,তুমি ভাটার সময় -
যাচ্ছ কোথায় নাওটি  বেয়ে ?
কালকে তোমার নায়ে কোরে -
যে বধূটি গেলো শ্বশুরালয়ে -
তার ঠিকানাটি বলো আমায় মাঝি -
ভালোবাসার মালাখানি -
পড়িয়েছিলাম তার গলে -
বাপের সম্মান রাখতে যেয়ে -
আমায় গেলো ছেড়ে চলে ;
চাইনা তাকে নিজের করে ,
সুখী সে হোক অনেক ;
মনটা যখন কাঁদবে আমার ,
দেখতে তাকে যাবো বারেক -
পায়ে পড়ি মাঝি তোমার ,
ঠিকানাটা দাও তার ,
একবার তাকে দেখে শুধু ;
ফিরবো সেই নায়েই আবার /
আমার দ্বারা তার কোনো -
ক্ষতি হবে না ;
চোখের দেখা দেখবো শুধু ,
সে আমায় দেখতে পাবে না /
ভালোবাসতে পারবোনা আমি ,
অন্য যে কাউকে -
না হয় দেখবো স্বপন মাঝেই ,
ভুলতে তাকে পারবো না যে /
-----------------------------
( নন্দা মুখার্জী ) 10.7.16   1 am.

Thursday, July 21, 2016

*বঙ্গ নারী * ( নন্দা মুখার্জী ) ;;;;;;;:;;;;:;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;;:;;              আজ সুমনার গাড়ি হয়েছে ,দু'হাজার স্কোয়ার ফিটের ফ্লাট হয়েছে ,কিন্তু মাকে সে তার কাছে কিছুতেই আনতে পারেনি / ছেলের বয়স এখন তার পাঁচ বছর /ছেলের জম্মের পরেও এ সব তার কাছে দুঃস্বপ্ন ছিলো / নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময় থেকেই মলয়ের সাথে তার বন্ধুত্ব /এক পাড়াতে না হলেও রোজই তার সাথে সুমনার দেখা হতো / সুমনা খুবই সুন্দরী / সুন্দরীদের ভিতর যে একটা অহংকার বোধ চেহারার ভিতরই লুকিয়ে থাকে ;সুমনার ভিতর সেটা ছিলো না ,তার চেহারার ভিতর একটা লক্ষ্মী সুলভ ভাব ছিলো / তাই স্বভাবতই পাড়ার ছেলেদের তার উপর একটু অন্য নজর ছিলো / অবশ্য সুমনার সেদিকে কোনোই ভ্রূক্ষেপ ছিলো না / কিন্তু বে-পাড়ার ছেলে মলয়কে তার ভালো লাগতে শুরু করে /এই ভালোলাগা থেকেই মলয়কে সে ভালোবেসে ফেলে /মলয়ও ঠিক তাই /কিন্তু সুমনার ইস্পাত কঠিন মনের মানুষ বাবা এটাকে কিছুতেই মানতে পারেন না /পাড়ার তাসের আড্ডা থেকেই তিনি জানতে পারেন ,কোন বাড়ির ছেলের সাথে মেয়ে মেলামেশা করছে /তখন সুমনার সবে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে /প্রশান্ত বাবুকে তার নিত্যদিনের তাসের আড্ডা থেকে সময়ের আগেই ঘরে ফিরতে দেখে কমলাদেবী বুঝতেই পারেন -একটা কিছু ঘটেছে /বিশ বছরের বিবাহিত জীবন তার / বিয়ে হয়েছে ,সংসার করতে হয় তাই করছেন / মেয়ে হয়েছে ,ছেড়ে গেলে লোকে কি বলবে - তাই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি প্রশান্তবাবুর শারীরিক ও মানষিক অত্যাচার তিনি মুখ বুজে সহ্য় করে যাচ্ছেন /দাম্পত্য সুখ কি তিনি আগেও বুঝতে পারেননি ; সন্তান হবার পরেও না / স্বশুর ,শ্বাশুড়ি কেউই নেই / ঐ হীনমনা মানুষটির জন্য তিনি বিয়ের পর থেকে  একদিনের জন্যও শান্তি পাননি /অ-কথ্য ,কু-কথ্য ভাষায় গালিগালাজ ,কথায় কথায় বাপ ,মাকে তুলে কথা বলা ;প্রতিবাদ করতে গেলে শারীরিক নির্যাতন / তাই মুখ বুজেই সব সহ্য করা /                    আজ যখন তিনি তার স্বামীকে তার ঘরে ফেরার আগেই ফিরতে দেখেছেন ;তখনি তিনি বুঝে গেছেন কিছু একটা ঝামেলা করতেই তিনি এই অসময়ে ফিরেছেন /ঘরে ফিরেই তিনি চিৎকার করে উঠলেন ,"কোথায় তোমার আদরিনী মেয়ে ? মুখ দেখাবার তো জো রইলো না ; ভবেশবাবুর ছেলের সাথে সে তো কেচ্ছা করে বেড়াচ্ছে "/ কমলাদেবী জানতেন যে মেয়ে মলয়কে ভালোবাসে / মাঝে মধ্যে তার নজরে পড়েছে তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলছে / তিনি যে জানতে পেরেছেন তা তিনি মেয়েকে বলেননি / কারণ তিনি জানতেন মলয় ছেলেটি ভালো এবং ভালো ঘরের সন্তান /তিনি শান্ত সুরে স্বামীর কাছে জানতে চাইলেন ,"কি কেচ্ছা করেছে সেটা কি জেনেছো ?সারাজীবন আমাকে জ্বালাচ্ছ এবার আমার মেয়ের পিছনে লাগলে ?কি করেছে সে ?"এই নিয়ে দু'এক কথায় স্বামী ,স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া / সুমনা বাবাকে ছোট থেকেই খুব ভয় পায় / তাই বাপ ,মায়ের এই চিৎকার চেঁচামেচিতে সে ঘর থেকে বেড়োয় না /প্রশান্তবাবু হুকুম দিলেন ,"ওর আর পড়াশুনার দরকার নেই ,ও যেন বাড়ি থেকে এক পা ও না বেড়োয় /একবার যদি দেখি ও বাড়ি থেকে বেরিয়েছে তাহলে ওকে আমি আর বাড়িতে ঢুকতে দেবো না /এটা তোমার আদরিনীকে জানিয়ে দিও /"  কথা ক'টি বলে আবার তিনি বাইরে বেড়িয়ে গেলেন /কমলাদেবী উঠে মেয়ের ঘরের কাছে যেয়ে তাকে ডেকে আনলেন নিজের কাছে / তার কাছে মলয়ের সম্মন্ধে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব জানতে চাইলেন /মলয় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার / ছ মাস হলো একটা চাকরীতে ঢুকেছে / বড়োলোকের একমাত্র ছেলে / ওর বাবা এখনো চাকরী করেন /সব শুনে তিনি বললেন ,"তোর বাবা কিছুতেই ওকে মেনে নেবে না / তোরা পরস্পরকে যদি সত্যিই ভালোবাসিস আর বিয়ে করতে চাস তাহলে তোকে পালাতে হবে /হ্যা আমি মা হয়ে তোকে বলছি ও যদি রাজি থাকে তাহলে বুঝতে হবে ও তোকে সত্যিই ভালোবাসে /আমার জীবনটাতো নষ্ট হয়েই গেছে /তোর জীবনের প্রতি তোর বাবাকে আমি নাক গলাতে দেবো না /কাল যখন তোর বাবা কাজে বেড়োবে তখন তুই ওকে আসতে বলবি /তুই এক্ষুনি ওকে ফোন কোরে বল ; দেরি করিসনা / কোথার থেকে কি একটা ধরে এনে তোকে তার ঘাঁড়ে চাঁপিয়ে দেবে - তার ঠিক নেই / আমি মানুষটাকে একদম বিশ্বাস করি না / সুমনা মায়ের মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে / মনে মনে ভাবে - যে মা বাবার ভয়ে সব সময় ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে তার আজ এ কি রূপ ! মাকে বলে ," কিন্তু মা এমন হলে বাবা তো তোমায় ছাড়বে না ; খুব মারবে /" "তোর বাবার হাতে মার খেতে খেতে এখন আমার আর ব্যথা লাগে না / কিন্তু তোর কোনো ক্ষতি আমি তোর বাবাকে কিছুতেই কোরতে দেবোনা / যা- আমি যা বলছি তাই কর / তাড়াতাড়ি ফোনটা কর /"
        এই ঘটনার কিছু দিনের মধ্যেই সুমনা মায়ের কথামতো মলয়ের সাথে পালিয়ে যেয়ে কালীঘাট মন্দিরে বিয়ে করে মলয়দের বাড়িতে যায় / কিন্তু মলয়ের বাবা ,মা কিছুতেই এ বিয়ে মেনে নেননা / সেই রাতে মলয় সুমনাকে নিয়ে তার এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেয় / পরেরদিন একটা ছোট ঘর ভাড়া করে আস্তে আস্তে নিজেদের সংসারটাকে গুছিয়ে নেয় / তিনটে বছর খুব কষ্ট করেছে ওরা / তার মধ্যেই ওদের ঘর আলো করে আসে সুমন / সুমনের জম্মের কিছু দিনের মধ্যেই মলয়ের বড়ো কোম্পানিতে ভালো মাইনের চাকরী /

      মলয় যখন ফ্লাট কিনবে ঠিক করছে  ; সুমনা যেয়ে সরাসরি তাকে বললো ,"আমার মায়ের জন্য যেন একটা বেডরুম থাকে / " মলয় কথাটা শুনে তার মুখের দিকে তাকিঁয়ে বলে ," একদম আমার মনের কথাটা বলেছো / আমিও কিন্তু এটা ভেবেছি /"  সুমনার বড়ো ফ্লাট হোলো / মায়ের ঘরটা নিজের হাতে সাজালো / কিন্তু মাকে আসার কথা বললে মা বললেন ,"যাবো নিশ্চয় যাবো - আগে একটা গাড়ি কেন / তোর বাবার নাকের ডগা দিয়ে তোদের গাড়ি চড়ে দাদুভায়ের কাছে চলে যাবো /"  বছর খানেকের মধ্যে গাড়িও কিনলো মলয় / এবার সে নিজেই শ্বাশুড়িমাকে তাদের কাছে যাওয়ার জন্য বললো / শুনে কমলাদেবী বললেন,  "বাবা ,এই বয়সে উনাকে রেখে আমি কি তোমাদের কাছে যেয়ে নিঃশ্চিন্তে দিনের পর দিন থাকতে পারি ?মানুষটাতো নিজে কিছুই পারেনা ; শুধু রাগটাই তার সম্বল /এখন তো আমি তোমাদের কাছে আসছি ,যাচ্ছি - তা নিয়ে তো সে কিছুই বলেনা / আগের থেকে তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে / এখন আমার আর কোনো কষ্ট নেই /তোমরা ভালো আছো ,সুখী আছো - এর থেকে আমার জীবনে আর কি চাই বলো ? আমাকে নিয়ে তোমরা ভেবোনা / আমি এখন খুব ভালো আছি / একমাত্র মৃত্যু ছাড়া ঐ মানুষটাকে ছেড়ে যে আমি কোথাও যেয়ে থাকতে পারবো না বাবা !!"
নন্দা মুখার্জী   19.7..16    1AM.
*আগে কেনো এলেনা*  ( নন্দা মুখার্জী ).
*************************************
অনেকদিন পরে তুমি -
       আমার বাড়ি এলে -
অভিমান আর কোরবো নাগো -
       সে বয়স কবেই গেছে চলে /
সকল কিছু ভুলে যদি -
       আসলে তুমি আবার -
কেনো ক'দিন আগে এলেনা -
      ভুল ভাঙ্গাতে আমার /
তোমার ভালোবাসায় ছিলো -
       আমার মনে দ্বন্দ্ব -
তোমায় আমি ভেবেছিলাম -
     মানুষটা বুঝি তুমি মন্দ /
ভুল যখন ভাঙ্গলো আমার -
      তুমি তখন অনেক দূরে -
সদায় থাকো ব্যস্ত কাজে -
       আমি ছিলাম তোমার বিহনে /
তবুও আমি আশায় ছিলাম -
      একদিন তুমি আসবে -
সত্যি করে বলোতো !
       তুমি কি সেই আগের মতোই -
আমায় ভালোবাসবে ?
( নন্দা মুখার্জী )  15.6.16  2AM.
*বর্বর মানুষ *  ( নন্দা মুখার্জী ).
******************************
মানুষ এখন বর্বরতায় পূর্ণ ,
          হিংসায় ছেঁয়ে গেছে সারা বিশ্ব ,
বিচার বুদ্ধি সকলের পাচ্ছে লোপ ,
          দিনে দিনে বাড়ছে শুধুই লোভ ,
নিরীহ মানুষকে করছে খুন ,
          ধর্মান্ধতার দোহাই দিয়ে ,
ধর্মকেই কোরছে অপমান !
         গীতা,বাইবেল,কোরান- কোথায় আছে লেখা ?
নিরীহ মানুষকে মেরে জেহাদ পাওয়া -
         এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনেও ,
আছে সেই অর্থ লিপ্সা -
         আছে এক ধরণের মানসিক বিকার ,
কিছু বোকা মানুষকে বুঝিয়ে ,
         নিজেরা হেফাজতে থেকে ,
বিকারগ্রস্ত মনের কার্য সিদ্ধি করা ,
        বোকা,অবোধেরা একবার ভাব -
এই নিরীহ মানুষগুলোর মধ্যে ,
         তোর পরিবারেরও কেউ থাকতে পারে !!
-----------------------------------------------
( নন্দা মুখার্জী )  20.7.16   8-45PM.
      

Tuesday, July 19, 2016

*বোঝো না আমায়*  ( নন্দা মুখার্জী )
++++++++++++++++++++++
এখন আমি কাছে আছি ,
   তাই বুঝি আমায় বোঝো না ,
যদি কখনো যাই হারিয়ে ,
   আমায় কিন্তু খুঁজো না /
কাজের শেষে যখন সন্ধ্যায় ,
   ফিরবে তুমি ঘরে ,
ছবির পানে তাকিয়ে কিন্তু ,
   চোখের জল ফেলো না /
সন্ধ্যাবেলায় ভেবো না তুমি ,
   তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালবো আমি ,
তাই বলে তুমি কিন্তু ,
   অন্ধকারে থেকো না /
আমার সাধের তুলসীতলায় ,
   জ্বেলে দিও- প্রদীপ খানি ,
তাঁকিয়ে দেখো শিখাটির দিকে ,
   দেখতে আমায় পাবে তুমি /
এখন আমি আছি কাছে ,
   আমার সকল ভালোবাসা হোলো মিছে ,
সত্যিই যদি যাই হারিয়ে ,
   তখন তুমি বুঝবে কি ?
তুমি কি হারালে  ?
,,,,   ,,        ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
( নন্দা মুখার্জী ) 13.6.16  12-45AM.
 

Monday, July 18, 2016

"একটি কলমের আত্মকাহিনী " ( নন্দা মুখার্জী )
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আমার খুব ইচ্ছা করে ,
    নিজের জীবনী লিখতে -
কিন্তু লিখবো আমি কেমন করে ?
     অন্যের উপরেই তো আমি নির্ভরশীল ,
আমার নিজের কোনো ইচ্ছা শক্তি নেই /
     অন্যেরা আমায় দিয়ে -
তার মনের ইচ্ছা শক্তি ব্যক্ত করে /
     তাতে অবশ্য আমার কোনো দুঃখ নেই  ,
আমার সাহায্যেই তো -
     পৃথিবীতে সকলে বিখ্যাত হয় /
আমার খুব আনন্দ হয় -
     যখন কেউ জগৎখ্যাত হয় ,
তার পিছনে আমার দান যে অনেক ;
     প্রতি মুহূর্তে আমি -
অন্যের জন্য পরিশ্রম করছি -
     কবে,কিভাবে আমার জম্ম হয়েছিল -
সে সম্পর্কে আমার স্পষ্ট কোনো ধারণাও নেই /
এই যে দিনরাত আমি পরিশ্রম করছি -
     তাতে আমার বেশ আনন্দই হয় ,
আমার কষ্ট হয় তখনই -
     যখন কেউ কোনো অসাধু চুক্তি ;
স্বাক্ষর করে আমাকে দিয়ে ,
     প্রতিবাদ কোরতে ইচ্ছা হয় ,
ইচ্ছা করে গর্জে উঠতে -
     বিদ্রোহ কোরতে মন  চাই -
কিন্তু আমি যে অসহায় -
     অন্যের উপর নির্ভরশীল ,
নিজের যে আমার কোনোই ক্ষমতা নেই /
আবার আমি খুব আনন্দ পাই -
     যখন দেখি তোমরা আমাকে  সুন্দর ভাবে ,
কোনো মিউজিয়ামে সাজিয়ে রাখো -
     আর তার নিচুতে-আমাকে দিয়েই লিখে রাখো -
সেই সব মনীষীদের নাম ,
     যাঁরা আমায় দিয়ে লিখেই ;
পৃথিবী বিখ্যাত হয়েছেন ,
     তখন আমার মনে হয় ;
আমার জীবন ধন্য ,
     ধন্য-ঐ সব বিশ্বখ্যাত মনীষীদের জন্য /
( নন্দা মুখার্জী )  23.6.16  12-30AM.

Sunday, July 17, 2016

*পাপাচারীর  ভবিষ্যৎ* ( নন্দা মুখার্জী )
_~_~_~_~_~_~_~_~_~_~_~_~_~_~
পাপের পাল্লা হচ্ছে ভারী -
     পালাবার নেই পথ ,
তাঁকিয়ে দেখো পাপাচারীরা -
     বাইরেটা পুরো অন্ধকার ,
ঠিক যেনো তোমাদের ভবিষ্যৎ /
খুন, রাহাজানি,ছিনতাই ,ধর্ষণ -
     এটাই তোমাদের নিত্য কার্য সাধন ,
পার পাবে না কিছুতেই তোমরা -
     হবেই হবে বিচার ,
থাকবে নেতারা তোমাদের সাথে -
     হয়তো হবে ছাড় কিছু তাতে /
সেটা ক্ষনিকের ভুলো না কিন্তু -
     জনতার দরবারে ভাতে নয় ,
তোমাদের সকলে মারবে হাতে -
     সেদিনের আর নেই বেশী দেরি ,
বাঁচাতে আসবে না কেউ -
   সুখের পায়রারা থাকবে না সাথে ,
মরে পরে রবে তুমি একা পথে /
=================
(নন্দা মুখার্জী ) 15.7.16.  12-30AM

Friday, July 15, 2016

*প্রথম ভালোবাসা* ( নন্দা মুখার্জী )
"""""""""""""""""""""""""""""""""""
ভালোবাসা কথাটা খুব মধুর শুনতে -
 আবার অনেকের কাছে এটা খুব বেদনার -
জীবনের প্রথম ভালোবাসা -
 খুব কম মানুষ ই নিজের কোরে পায় /
আর যারা পায় না -
 আজীবন তারা ভুলতে পারে না -
প্রথম ভালোবাসার স্মৃতি -
 হোক না সে যতই কষ্টের -
তবুও তাকে ভোলা যায় না /
ঝড়ের মতোই জীবনে ভালোবাসা আসে -
 অনেকের জীবন তচনচ করে দেয় -
আবার অনেকের- সুন্দর ভাবে গড়ে দেয় -
 জীবনে প্রথম যে ভালোবাসতে শেখায় -
চরম আঘাতটা হয়তো প্রথম সেই দেয় /
তবুও মানুষ ভুলতে পারে না -
 সেই ভালোবাসার কথা -
প্রথম হাতে হাত রাখার সেই অদ্ভুত অনুভূতি -
 প্রথম ছোঁয়ার শরীর ও মনের শিহরণ !
যা হারিয়ে গেলেও থেকে যায় ,মনের গভীরে /
হয়তো কোনোদিনও তাকে -
 কারও কাছেই আর  প্রকাশ করা যায় না -
কিন্তু সে থাকে - থাকে গহন মনে -
 সকলের ধরা ছোঁয়ার বাইরে /
সে ভালোবাসা যতই -
 লজ্জা ,অপমান আর বেদনার হোক না কেন -
মাঝে মাঝে তারই জন্য -
 রাতের আঁধারে কারও কারও বালিশ ভেজে -
কেউ জানতেও পারে না /
জীবনের প্রথম ভালোবাসাকে কেউ ভুলতে পারে না -
 স-যত্নে না হোক,মনের যে কোনো খানে -
একটা জায়গা তার জন্য আমৃত্য থেকে যায় -
 যে কিছুটা মাঝে মাঝে একাকিত্বকে সঙ্গ দেয় /
*****************************************
( নন্দা মুখার্জী ) 28.6.16  2 AM.
 

Wednesday, July 13, 2016

*স্বপ্নের ভালোবাসা* (নন্দা মুখার্জী )
•••••••••••••••••••••••••••••••••
নাইবা পেলাম এ জনমে ,
     তোমার দেখা আমি -
স্বপ্নে তোমায় দেখি ওগো ,
     স্বপ্নেই থাকো তুমি /
মনটা মোদের নরম যেমন ,
     কঠিন ও হয় তেমন -
তোমায় নিয়ে কল্পনাতে ,
     রচেছি অনেক স্বপন /
একই সাথে থাকতে গেলে ,
     মান-অভিমান,ঝগড়া-ঝাটি হবে ,
স্বপন মাঝেই থাকো তুমি -
     সত্যিকারে এসোনা মোর জীবনে /
স্বপ্নে আমার রাজা তুমি ,
     আমি তোমার রানী ,
তোমায় আমি ভালোবাসি -
     এটাই শুধু জানি /
কাছে তুমি আসলে আমার ,
     যাবে স্বপন ভেঙ্গে ,
মানুষ বড়ো স্বার্থপর হয় -
     এ দুনিয়ার রঙ্গে /

( নন্দা মুখার্জী ) 10.7.16  12-20AM.

Tuesday, July 12, 2016

*বিদায় বেলায়*(নন্দা মুখার্জী )
*****************                                                                                                                                  
  বন্ধু তুমি হারিয়ে গেছো                                                       
খুজছি তোমায় আবার./                                                                          .
স্মৃতির খাতা হাতরে বেড়ায়.                                                         
দেখা যদি পাই তোমার /                                                                     .
কোথায় ছিলে  তুমি                                          
আর কোথায় ছিলাম আমি                                           
ভাবনা চিন্তা মিলে  মিশে                                             
কখন যে এক হোলো                                                     
 জানেন শুধুই  অন্তর্যামী                                                                                                                             
ঠকিয়ে তুমি ছিলে  আমায়.                                                   . 
বোলবো না সে কথা.                                                                   
তবুও তুমি দিলে কেন                                                
আমায় এতো ব্যথা                                                                                                                  
ছোট বেলায় খেলতাম                                             
আমরা বর বউ                                                
কিশোর বেলায় বলেছিলে                                              
"তুমি ই  আমার বউ "                                                                   
আজকে কেনো ভুলে গেলে                                              
সে সব কথা তুমি                                              .
.কিসের জন্য হারিয়ে গেলে                                              
আমার হতে তুমি./                                                                    
ভুলে গেছো সকল কথা                                         
ভুলে গেছো আমায়                                                      
ভুলতে আমি পারিনা                                   
ভুলতে চেয়েও তোমায় /                            
                             
     বৃষ্টি যখন পরে                                                       আমার
জানলার কাচ টি বেয়ে                                         
চোখের জল ও বাধ মানেনা                                         
আসে সে যে ধেয়ে                                                                 
.এমন একদিন আসবে দেখো                                                   
খুজবে তুমি আমায়                                                
পূর্নিমাতে তারা হয়ে                                                                               
জ্বলব আকাশ পানে                                                                          
শুনবে তুমি বলছে তারা                               
"বন্ধু আসি  তবে বিদায়"                   ১৬.০৬.২০১০.

Sunday, July 10, 2016

দায়িত্ব
 ( Nanda Mukherjee)
**************                                                                                    হঠ্য়াত কোরে এতদিনপরে লিপির সাথে দেখা হয়ে যাবে  বিপুল এটা কোনদিন ও ভাবে নি l  বিপুল হাওড়া স্টেশন এ দিল্লীগামী ট্রেন এর জন্য অপেক্ষা করছিল l  একটা ছোট মেয়ে ছুটাছুটি কোরতে কোরতে হঠ্য়াত পড়ে যায় l  বিপুল দেখতে পেয়ে দৌড়ে যেয়ে মেয়েটিকে তোলে l  তার কাছে প্রশ্ন কোরে জানতে পারে  সে তার মায়ের সাথে এসেছে  মেয়েটির সাথে বসে বিপুল গল্প কোরতে থাকে l  ট্রেন কিছুটা লেট ছিলো l  হঠ্য়াত মেয়েটির মা হন্তদন্ত হোয়ে এসেই ছোট মেয়েটিকে বলতে শুরু করেন -  "তোকে যে বললাম  চুপচাপ বসে থাকতে l  একটু অন্যমনস্ক হয়েছি  আর সঙ্গে সঙ্গে তুই চলে আসছিস-  সেই থেকে তোকে খুজছি-  চল-"  হঠ্য়াত করে বিপুলের দিকে চোখ যেতেই মেয়েটির মা বলে ওঠে-  "বিপুলদা  তুমি এখানে"-  বিপুল ও এতক্ষণ পরে তাকে চিনতে পারে l  কি চেহারা হয়েছে লিপিকার l  সেই সুন্দর মুখখানার সাথে এখনকার লিপিকার চেহারার কোনো মিল নেই l  এই কি সেই লিপিকা l  বিপুল ভাবে এটা কি করে সম্ভব ?  কোথায় যাচ্ছে লিপিকা  একা মেয়েকে নিয়ে ?  ওর স্বামী ই বা কোথায় ?  কালো মেঘের মতো একরাশ ঘন চুল;  সুন্দর টানা টানা দুটি চোখ ,  দুধে আলতা গায়ের রং-  কোথায় গেলো সে সব ?  একি সেই লিপিকা ?  যে কিনা একদিন বিপুল কে ভিসন ভালবেসেছিল l  বলেছিলো "বিপুলদা  আমি তোমায় ভালবাসি"-  শুনে  বিপুল চমকে  উঠেছিল l  বিপুল ও লিপিকাকে ভালোবাসত l  কিন্তু বুঝতে পারেনি লিপিও তাকে ভালোবাসে l  লিপি ছিল বড়লোকের একমাত্র মেয়ে l  বিপুল ভেবেছিল ভালোবাসাটা বুঝি তার একতরফা l  লিপির আচরনে কোনদিনও সেটা  প্রকাশ পায়নি l  বিপুল ছিলো গরীব ঘরের সন্তান l  চার ভাই বোন তারা l  বিপুল ই বড় l  বাবা বেসরকারী অফিস এর একজন সাধারণ কর্মচারী l  সংসারে অভাব নিত্য  সঙ্গী l  বিপুল পড়াশুনার ফাঁকে টিউসনি কোরে মাস শেষে যা পেতো মায়ের হাতে তুলে দিত l  এমন অনেক দিন ও তাদের গেছে পেট ভরে দুবেলা খেতে পারেনি l  এহেন পরিবারের সন্তান সে কিনা বলবে  এক্জিকেউতিভ ইন্জিনীয়র এর একমাত্র মেয়েকে ভালবাসে l  না  কিছুতেই না l  তার সামনে এখন অনেক দায়িত্ব l  মা বাবার অনেক আশা তাকে নিয়ে l  পাশ কোরে বেড়িয়েই যেভাবে হোক একটা চাকরির ব্যবস্থা তাকে করতেই হবে l  ছোটভাইবোন গুলিকে মানুষ কোরতে হবে l  তাই তার নীরব ভালবাসার কথাটা নীরবেই বুকের ভিতর রেখে দেয় l  কিন্তু কলেজ এ রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনে লিপিকার মুখে ওই কথাটি শুনে  কিছুক্ষণের জন্য বিপুল বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিল l  সম্বিত ফিরে পেয়ে সে লিপিকার কথার উত্তর না দিয়েই যখন চলে যাছিল;  লিপিকা তাকে বলেছিলো-  "বিপুলদা কিছু বললে না ?"  বিপুল সে কথার ও কিছু উত্তর দেয়নি l  লিপিকা তখন আবার ও বলল-  "কাল  টিফিন আওযার এর মধ্যে তোমার উত্তরটা আমার চাই"l  বিপুল পরদিন টিফিন পিরিয়ড এ সুযোগ বুঝে লিপিকার হাতে একটি খাম ধরিয়ে দিয়ে বলল-  "গতকাল তুমি আমাকে যে কথাগুলি বলেছিলে তার উত্তরটা দিলাম"l  লিপিকা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি বিপুল তাকে  প্রত্যখান করবে l  তার উত্তরটা যা ছিল  তার সার সংক্ষেপ কোরলে দাড়ায়-  বিপুল গরিবের সন্তান l  তার কাধে অনেক দায়িত্ব l লিপিকার মতো বড়লোকের মেয়েকে তার জীবনে এনে তাকে দারিদ্যের অভিশাপের ভিতর ফেলতে পারবে না l  লিপিকা সেদিন কষ্ট পেলেও বিপুলের পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেছিল l  বিপুলের প্রতি তার সম্মান ও ভালবাসা দুই ই বেড়ে গেছিল l  দুবছরের সিনিয়র বিপুল যতদিন কলেজ এ ছিল তাকে কোনদিনও লিপিকা একথা নিয়ে কিছু আর বলেনি l   লিপিকাও  দেখেছে বিপুল ও তাকে পারতপক্ষে এড়িয়ে চলত l  উভয়য়ের ই ভিতরে একটা চাপা কষ্ট ছিল l   কিন্তু কেউ কোনদিনও পরস্পরকে  সেটা বুঝতে দেয়নি l  চিরদিনের মেধাবী ছাত্র বিপুল গ্রাজুয়েট হয়েই ব্যাঙ্ক এর উচ্চ পদে চাকরি পেয়ে যায়  l  দুটি বোনের পড়াশুনা শেষের পরে ভালো ঘরে বিয়েও দিয়ে দেয় l   ছোট ভাইটি এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে l  বাবা বছর দুই আগে গত হয়েছেন l  মায়ের বহু পিড়াপিড়ি সর্তেও সে বিয়ে কোরতে রাজী হয়নি l  কিন্তু চাকরী পাওয়ার পর সে লিপিকাদের অনেক খোজ করেছে l  পুরানো বান্ধবদের কাছ থেকে ঠিকানা জোগার করে সে লিপিকাদের বাড়িতে গেছে l  যেয়ে শুনেছে তারা বাড়ী বিক্রি কোরে অন্যত্র চলে গেছেন l  কিন্তু বিপুলের মন থেকে লিপিকার ভালবাসা, লিপিকার চেহারা, লিপিকার প্রথম তাকে ভালোবাসার কথা জানানো কোনটাই মুছে যায়নি l  লিপিকাকে সে ভালোবেসেছিল সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে l  জীবনে প্রথম এবং শেষ ভালবাসা তার l  কিন্তু বিশাল কর্ত্যবের সামনে ভালোবাসার বলিদান দিতে হয়েছিল তাকে l   কিন্তু আজ সে কোন লিপিকাকে দেখছে ?  "বিপুলদা, তুমি আমায় চিনতে পারছ না ?"  লিপিকার কথায় বিপুলের সম্বিত ফিরলো l  "তোমার এ রকম চেহারা হয়েছে কেন ?  তুমি একা মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছ ?  তোমার স্বামী কোথায় ?"   "আচ্ছা তুমি এতগুলি প্রশ্ন কোরলে আমায় ?  দাড়াও -একটা একটা করে উত্তর দি  এই যে বললেনা -একা একা,  দুকা কোথায় পাব ?  তুমিকি আমায়  দেখেও কিছু বুঝতে পারছ না ?"  এতক্ষনে বিপুল ভালোভাবে লিপিকার  মুখের দিকে তাকালো l না-         কোথাও কোনো সিদুরের রেখা দেখতে  পেলোনা l   হাত দুটিও তো ফাকা l  লিপিকার কাছে - যেটুকু জানতে পারল পাশ করে বেরোবার পরে বাবার হঠ্য়াত স্ট্রোক হয় l হাসপাতাল থেকে তিনি আর বাড়ি ফিরে আসেন না l   বাবার মৃত্যুর বছর খানেক পর তার বিয়ে হয় একজন বড়ো ব্যবসায়ী র সাথে l দুবছর বাদে তার এই ফুটফুটে মেয়েটির জন্ম l  এর কিছুদিনের মধ্যেই স্বামীর ক্যান্সার ধরা পরে l  তিন বছর চিকিত্সার পর মাসখানেক আগে  মেয়েকে ও তাকে রেখে সঞ্জয় চিরদিনের মতো চলে গেছে l  তারপর থেকে সে কিছুদিন দেওর ও জায়ের সাথে শ্বসুর বাড়িতে ছিলো l  শ্বসুর শ্বাশুড়ি আগেই গত হয়েছেন l  এখন সে চিরকালের জন্য নিজের মায়ের কাছে ফিরে যাচ্ছে l  বিপুল অবাক হয়ে লিপিকার কথা শোনে l  বুকের ভিতরটা তার যন্ত্রনায় ফেটে যাচ্ছে l  এ কি শুনছে সে !!!!  এতদিন সে ভাবতো লিপিকা সুখে সংসার কোরছে l শুধু লিপিকাকে না পাওয়ার যন্ত্রণা টা ছিল l  কিন্তু আজকের পর থেকে যে হাজার গুন যন্ত্রনাটা বেড়ে গেল l  "বিপুলদা, আমার ট্রেন এসে গেছে-  আমরা আসি, আজকে তোমায় দেখে খুব ভালো লাগলো, খুব শান্তি পেলাম l"  "এখন তোমরা কোথায় থাকো"?  বিপুল জিগ্ঘাসা করলো l "বাবার মৃত্যুর পর কটকে মামা বাড়ির কাছে ওই আগের বাড়িটা বিক্রি কোরে মা ছোট একটা বাড়ি কিনেছেন l  এখন থেকে বাকি জীবনটা মেয়েকে নিয়ে সেখানেই থাকব l  আসি-"  মেয়ের হাত ধরে লিপিকা ট্রেন এর দিকে এগিয়ে গেল l  কিছুক্ষণ পরে বিপুলের খেয়াল হোলো লিপিকার ঠিকানাটা তো রাখা হোলো না l  দৌড়ে সে এগিয়ে গেলো l  কিন্তু অত ভিড়ের মাঝে বিপুল লিপিকা বা তার মেয়ে কাউকেই সে দেখতে পেলো না l  বোবা একটা যন্ত্রণা তার ভেতরটা তখন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে l  তার মনে হোতে লাগলো -লিপিকার এই ভয়াবহ পরিণতির জন্য সেই দায়ীl.                                           ১৩ ৯ ১৫

Friday, July 8, 2016

*সুখে থাকো * ( নন্দা মুখার্জী ) 21.6.16
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কপালে তোমার লাল টিপ -
   দেখতে লাগছে বেশ !
লালপাড়ে হলুদ শাড়িতে -
   তোমায় মানিয়েছে বেশ !
টিপটি যখন পড়ো তুমি -
   ভাবো কি কখনো আমার কথা ?
সকল সুখ তোমার থাক ;
   ভাঙ্গা মনে পড়ে থাক ,
আমার সকল ব্যথা /
বেকার ছেলের ভালোবাসার ,
   নেই যে কোনোই অধিকার -
তাই বুঝি মোর স্বপ্ন ভেঙ্গে ,
   করেছো চুড়মার /
এক গাঁয়েতে থাকার ফলে ,
   একই স্কুলে পড়া -
এক কলেজে ভর্তি হওয়া -
   একই সাথে বাড়ি ফেরা /
কখন যেন ভালোবেসে -
   ফেলেছিলাম তোমায় ,
বুঝতে আমি পারিনি ;
তুমি-ভালোবাসোনা আমায় /
যেদিন প্রথম জানালাম তোমায় -
   আমার ভালোবাসার কথা ;
অট্টহাসি হেসে সেদিন -
   দিলে আমার প্রাণে ব্যথা /
আমায়  কখনোই  ভালোবাসোনি -
   বন্ধু ভেবেই মিশেছো তুমি ,
কখনো প্রেমিক হিসাবে চাওনি /
বেকার আমি-চাকরি পেতে -
   এখনো ঢেড় দেরি ;
ততদিন কি থাকবে বসে ,
   হয়ে তুমি আইবুড়ি /
তোমার কথার উত্তর দিতে -
   কথা থেমে গেলো মুখে ;
হেসে উঠে বললাম তোমায় ,
   কেমন করলাম অভিনয় ?
আমিও যে তোমায় বন্ধুই ভাবি ,
   এ ছাড়া অন্য কিছুই যে নয় /
বুঝতে আমি দিইনি তোমায় -
   আমার মনের কষ্ট ;
সব স্বপ্ন আমার ভেঙ্গে গেলো সেদিন ,
   মনে হোলো,জীবনটাই বুঝি হলো নষ্ট /
আজ যখন তুমি স্বামীর সাথে -
   এসেছো বাপের ঘরে ,
সোনার আভরণে ঢেকে গেছে শরীর ;
   এসেছো দামি গাড়ি চড়ে /
ভাবি আজ, আমি তো কোনোদিন -
   এ সুখ তোমায় পারতাম না দিতে ;
যত কষ্ট সব আমার থাক ,
   তুমি শুধু থাকো সুখে /
( নন্দা মুখার্জী ) 21.6.16  2AM.

"সমাধান"
""""""""                                                             রতন আজ খুব খুশী l  তার মনে হচ্ছে সে তার বাবা আর মামনির জন্য কিছু একটা কোরতে পেরেছে l  এতদিন দুহাত পেতে শুধু বাবা আর মামনির কাছ থেকে নিয়েই গেছে l  বিনিময়ে কিছুই সে কোরতে পারেনি- আর করবেই বা কেমন করে ?  তার তো কোনো উপায় ও ছিলো না l পাচ বছর বয়সে মাকে হারিয়ে মামাবাড়িতে মানুষ l  দাদু, দিদিমা, আর মাসি l মাকে হারিয়ে বাবার হাত ধরে যেদিন ছোট রতন কনিকার সামনে এসে দাড়ায়; তখন কনিকা দুহাত বাড়িয়ে রতনকে বুকে চেপে ধোরে ডুকরে কেদে  ওঠে l দিদির মৃতুর শোক যেনো ছোট রতনকে দেখে দিগুন হোয়ে বুকে চেপে বসে l দিদির মুখটা যেনো কেঁটে রতনের মুখে বসিয়ে দিয়েছে l দাদু দিদিমা বেচে থাকতেই মাসির পড়াশুনা শেষ হোয়ে যায় l  তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেন কণিকার  বিয়ে দেয়ার l কিন্তু কণিকা নাছোরবান্দা l সে চলে গেলে রতনকে কে দেখবে ? রতনও তার মামনিকে পেয়ে মায়ের কষ্টটা আস্তে আস্তে ভুলে যায় l কণিকা রতনকে তাকে মামনি বলে ডাকতে শিখিয়েছে l রতনকে কণিকা চোখে হারায় l হারাধনবাবু কণিকার বাবা অবসরপ্রাপ্ত একজন সরকারি কেরানী l খুব  স্বচ্ছলতা না থাকার কারণে জামাই অর্থ্যাত রতনের বাবা মানস রায়ের কাছ থেকে তাকে টাকা নিতেই হয় l কারণ কণিকা রতনকে বড়ো ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এ ভর্ত্তি করেছে l টিউসন ফি ও অন্যান্য খরচ দিয়ে বেশ কয়েক হাজার টাকা বেড়িয়ে যায় l যেটা হারাধন বাবুর পেনসনের টাকায় সংকুলান হয়না l তাই ইচ্ছা না হলেও জামাই এর কাছ থেকে তাকে টাকাটা নিতেই  হয় l কণিকাও গুটিকয়েক ছেলেমেয়েকে বাড়িতে পড়ায় l মানস বাবুও আর বিয়ে করেন না l বড়ো কোম্পানির সেলস ম্যানেজার এর হোম ডেলিভারে ই চলে যায় l লতিকার ব্যবহৃত জিনিস পরতো আজও তিনি যত্ন কোরে আগের মতন ই গুছিয়ে রেখেছেন l কণিকার তত্ত্বাবধানে রতন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক রেকর্ড মার্কস নিয়ে পাশ করে l মানসবাবুর ইচ্ছা ছিলো ছেলেকে ইন্জিনিয়ারিং পড়ানোর l  কিন্তু কণিকার ইচ্ছা রতন ডাক্তারি পড়ুক l মানস বাবু কণিকার ইচ্ছাকেই সম্মান জানান l কালের নিয়মে দিন মাস বছর ঘুরতে ঘুরতে কনিকারও বিয়ের বয়স পার হয়ে যায় রতন ডাক্তারী পাশ করে প্রাকটিস শুরু করে l দাদুর মৃতুর এক বছরের মধ্যে দিদিমাও গত হয়েছেন l এখন কণিকা  ও রতনের ছোট সংসার l মাঝে মাঝে মানস বাবু আসেন l দু একদিন থেকে আবার ফিরে যান l কণিকা চায়, এবার রতনের বিয়ে দিতে l মানসবাবুর ও এতে সম্মতি আছে l কিন্তু রতন ভাবে যে মানুষ দুটি তাকে মানুষ কোরতে নিজেদের সুখ- স্বছন্দ বিসর্জন দিয়েছেন; তাদের এই ঋণ সে তো কোনদিনও শোধ করতে পারবে না  l তাদের জন্য সে কি কিছুই করতে পারে না ? অনেক ভেবে চিন্তে সে ঠিক করে- মামনির সাথে সে বাবার বিয়ে দেবে l তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে l কেউ ই তো রাজী হবে না l কিন্তু যে ভাবেই হোক রাজী তাদের করাতেই হবে l সে উভয়ের সাথেই আলাদা আলাদা কথা বললো l যথারীতি উভয়েই এটা অসম্ভব বলে জানিয়ে দেয় l এবার শুরু হয় রতনের খেলা l প্রথমে রতন তার মামনির সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলা বন্ধ কোরে দিলো l কণিকাও বুঝতে পারছে ছেলে তার রাগ করেছে l কিন্তু সে যা বলছে সেটাও বা কিকরে সম্ভব ? এর ই মাঝে রতন একদিন ব্রেকফাস্ট না করেই চেম্বার এ চলে যায় l সে জানতো তার মামনিও না খেয়ে থাকবে l মনেও খুব কষ্ট পাবে l কিন্তু কি করবে সে ? সে তো কোনো সমাধানের রাস্তা খুঁজে পারছে না l কণিকা ছেলের মনের অবস্তা বুঝতে পেরে দুজনের ই খাবার নিয়ে সটান চেম্বার এ যেয়ে হাজিরহয়  যথারীতি রতন খেতে চায়না l বার বার রতনকে পিড়াপিড়ি করার পর ছল ছল চোখে কণিকা রতনকে বলে,  "তুই কি চাস বলতো "? রতন তখন বলে, "যতদিন না তোমরা বিয়েতে রাজী হচ্ছো ততদিন আমি কিছুই খাবো না "l "তুই তো জানিস বাবা তোর খাওয়া না হোলে আমি খেতে পারিনা l" "তুমিও তো জানো আমি খিদে সহ্য কোরতে পারিনা l এখন আমার প্রচন্ড খিদেতে কষ্ট হচ্ছে l আর তা ছাড়া আমি তোমায় ছেড়ে থাকতে পারবোনা - সেটা তুমি জানো l আর আমিও জানি তুমি আমায় ছেড়ে থাকতে পারবে না l সারাটা জীবন একা একা কাটিয়েছেন আমরা সবাই মিলে একজায়গায় থাকব l" কণিকা চুপ কোরে কথাগুলি শুনে বলে, "সে হবেক্ষণ আমি তোদের সাথেই যেয়ে থাকবো এখন খেয়ে নে বাবা l" "না তাহবেনা, তুমি তোমার যোগ্য সম্মান নিয়েই ঐ বাড়িতে থাকবে যাতে কেউ কোনদিন তোমায় কিছু বলতে না পারে l তোমায় কেউ কিছু বললে আমি তা মেনে নিতে পারবো না l" কণিকা  বুঝতে পারে এটা রতন কার উদেশ্যে বললো l সে বিয়ে কোরলে যদি তার বৌ তার মামনিকে কিছু বলে সে মেনে নিতে পারবে না l                                                                                            অনেক জোড়া জুড়ির পর কণিকা ও মানসবাবু বিয়েতে রাজী হন l তবে পুরোহিত ডেকে মন্ত্র  উচ্চারণের  মধ্য দিয়ে নয় l রেজিস্ট্রি কোরে কয়েকজন নিকট আত্মীয়র সামনে বিয়ে হয়ে গেল l কণিকা তার রতনকে নিয়ে স্বামীর সংসারে চলে গেল l বিয়ের কয়েকদিন আগে রতন এসে তার বাবার সম্মতি নিয়ে তার মায়ের জিনিস পত্র যেগুলি মানসবাবু এতোকাল আগলে ছিলেন, একটা ট্রান্ক ভর্তি করে স্টোরে রেখে যায় l তার মামনিকে যোগ্য সম্মান দিয়ে নিজের বাড়িতে এনে খুব খুশি l তার মনে হচ্ছে যে সে বিশ্ব জয় করে ফেলেছে l                                                                       এর ঠিক মাস ছয়েক পরে কণিকা নিজে পছন্দ কোরে তার রতনের বৌ সুমনাকে বরণ কোরে ঘরে তোলে l সুমনা ও খুব লক্ষী মন্ত মেয়ে l শ্বসুর শ্বাশুড়ি কে যথেষ্ট শ্রদ্ধা ভক্তি করে l শ্বাশুড়ি যেনো তার বন্ধুর মত l রতন মনে মনে ভাবে ভাগ্য কোরে সে জম্মগ্রহণ করেছিল l কণিকার সংসার সুখে আনন্দে নুতন ছন্দে কালের গতিতে এগিয়ে চলে l দুবছরের মাথায় রতন ও সুমনার একটি ফুটফুটে ছেলে হয় l কণিকা সংসারের সকল দায়িত্ব সুমনাকে দিয়ে তার দাদুভাই কে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ে l                                           ২০ ৯ ১৫
*কিছু না বলা কথা * ( নন্দা মুখার্জী )
++++++++++++++++++++++
টেবিল ল্যাম্পের আলো -
দেখা যায়না খুব একটা ভালো -
তাকে সঙ্গী করেই আমি -
লিখে যাই পাতার পর পাতা -
ভাবের আকাশে বিরাজিত সব -
লিখে যাই একা একা /

সকলে ঘুমিয়ে যখন পরে -
নিস্তব্ধ ঘরে, লিখে চলি আনমনে -
ফিরে যাই আমি ;
ফেলে আসা দিনের -
ভালোবাসার সেই অতল গহনে /
সেই অবকাশে,তুমি এসে দাড়াও -
যখন সামনে আমার -
বুকের ভিতর শিহরিত হয় -
জমানো ব্যথা হয় তোলপাড় /
কি জানি তখন কি লিখি আমি ?
সেগুলি কি সবই আমার মনের ব্যথা ?
তোমার মনের কোনো কথা কি -
আমার ডাইরীর পাতায় হয় না লেখা ?
যখন তুমি আনমনা ভাবে -
একলা বসে রবে ঘরে ;
হয়তো কোনো বইয়ের পাতায় -
দৃষ্টি তোমার হবে স্থির ,
ভালোবাসার সেই দিনগুলির কথা -
নাইবা থাকুক মনে ;
আমার নামটি ভোলোনি তুমি -
রেখেছো সংগোপনে -
বইয়ের পাতায় লেখা নামটি দেখে ,
তরতর গতিতে -
পড়ে ফেলবে লেখাটি আমার -
হয়তোবা এক নিঃশ্বাষে /
পড়া শেষে তুমি উদাস হয়ে -
তাকাবে জানালা দিয়ে  ,
মনে মনে বলবে তুমি -
ভুলতে আমি পারিনি গো -
আজ যে তোমায় /
""""""""""""""""""""
 ( নন্দা মুখার্জী ) 1.7.16  3PM.

Thursday, July 7, 2016

..................*নীরব অহংকার*......................                                            ফুলের কানে ভ্রমর যেমন ,                                
চুপি চুপি কথা বলে -                                          
আমার কানেও বলো না তুমি ,                                
" ভালোবাসি শুধু তোমাকে " /.                               
আকাশ পানে মেঘ যেমন -                                 
না ডাকতেই ছুটে যায় ,                                
আমার কাছেও আসো না কেন ?                         
যখন ডাকি না, আমি তোমায় /                         
ঢেউ যেমন আছড়ে পড়ে-                                 
তার নিজের পাড়েই  -                                          তুমি কেনো বাঁধ না মোরে ?                                 তোমার বুকের সাথেই /                                        বারো বছর চন্ডীদাস ছিলেন বসে                              রজকিনীর আশায় -                                     
আমি তো থাকবো সারাজীবন ,                              হয়েই বিভোর ,তোমার ভালোবাসায় /.                       নাইবা এলে কাছে তুমি -                                         নাইবা দিলে বুকেতে স্থান ,                                      তোমার আসন সারাজীবন -                                    আমার বুকেই অবস্থান /                             
28.12.15

নির্মম নিয়তি"  নন্দা মুখার্জী  রায় চৌধুরী                           
দাউ, দাউ করে চিতা জ্বলছে- অধিরবাবু এক দৃষ্টিতে চিতার দিকে তাকিয়ে, অপুর ছেলেবেলার কথা ভাবছেন । চোখ থেকে অবিরাম জলধারা বয়ে চলেছে
মুখে কোনো কথা নেই । সন্ধ্যা থেকেই তিনি যেনো বোবা হয়ে গেছেন ।অনেক পরিশ্রম কোরে, অনেক আশা নিয়ে তিনি ছেলেকে ডাক্তারী পড়িয়েছিলেন। চিরদিনের মেধাবী ছাত্র অপূর্ব, অধিরবাবুর একমাত্র সন্তান। স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে তার বছর পাঁচেক আগে । অপু তখন সবে ডাক্তারী পাশ করেছে ।শোভাদেবির হঠাৎ মৃত্যু।  ব্রেন স্ট্রক। সাজানো, গুছানো সংসারটা অগোছালো হয়ে গেছিল। আস্তে আস্তে সেই শোক কাটিয়েও উঠেছিলেন। আনাড়ি হাতে বাপ, ছেলে সংসারটাকে মোটামুটি গুছিয়ে ও ফেলেছিলেন। অপুর বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে দেখতেও শুরু করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ একি হলো?? সকালে খেয়ে দেয়ে রোজ যেমন নার্সিং হোম   যায় ঠিক তেমন তাই তো বেড়িয়েছিল- বাবার নিজের হাতে করে দেওয়া ডিম , আলু  সেদ্ধ, ভাত খেয়ে। বিনা মেঘে বজ্র পাতের মতো অকসাৎ পাড়ার একটি ছেলে এসে সন্ধ্যায় খবর দিলো, "অপুদার এক্সিডেন্ট হয়েছে, নার্সিং হোমে আছে।" ছুটে গেলেন অধিরবাবু l কিন্তু ডাক্তারদের সব চেষ্টা , অধিরবাবুর ঈশ্বরের কাছে মাথা কোটা সবই নিস্ফল হলো l  অধিরবাবুর কথাও বন্ধ হোলো l আত্মীয় স্বজনেরা যে যা বলছে তিনি মাথা নেড়ে সম্মতি দিচ্ছেন l অধিরবাবু ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ছোট একটা মফসল শহরে l রাত তখন প্রায় দশটা l সকলে মিলে অপুকে নিয়ে পায়ে হেটেই শ্বশান এর দিকে রওনা দিলো l অধিরবাবু সকলের পিছনে তার বন্ধু রমেশ বাবুর সাথে তাদের অনুসরণ করলেন l কেউ একজন হাতে ধরিয়ে দিলো মুখাগ্নির পাঠকাঠি l ধরে নিয়েই তিনি দাড়িয়ে রইলেন l সেই ব্যক্তি ই তার হাত ধরে তাকে চিতার কাছে নিয়ে গেলেন l তিনি অপলক দৃষ্টিতেই তার কাজ সম্পন্ন করলেন l কি করছেন, কেনো কোরছেন কোনো জ্ঞান ই তার যেনো নেই l বন্ধুটি তার হাত ধরে নিয়ে একটি জায়গায় বসিয়ে দিলেন l বাধ্য শিশুর মত তিনি সেখানে বসে থাকলেন l মাত্র কয়েক মিনিট lহঠ্য়াত তার শরীরটা নুইয়ে মাটিতে পোরে গেলো l শ্বশান বন্ধুরা সব ছুটে এলেন l সকলে ভাবলেন, বুঝি বা জ্ঞান হারিয়েছেন l জ্ঞান ফেরাবার জন্য যার যে টুকু শিক্ষা ছিলো, সকলেই টা প্রয়োগ করলেন l কিন্তু জ্ঞান ফিরছে না দেখে তাদের ই মধ্যে কেউ একজন, পাশের এক ডাক্তার কে ডেকে নিয়ে আসলেন l ডাক্তার পরীক্ষা কোরে বললেন, "সব শেষ l আর কিছু করার নেই"l একটু আগে যে চিতায় অধিরবাবুর ছেলেকে দাহ করা হয়েছে, তাঁকে ও  সেই চিতায় তুলে দেওয়া হোলো l সকলে এক দৃষ্টিতে চিতার দিকে তাকিয়ে l তার মধ্যে থেকে অধিরবাবুর অভিন্ন হৃদয় বন্ধু রমেশবাবু বললেন, "ভালোই হোলো- ছেলের মৃত্যু শোক অধিরকে সইতে হোলো না; এবার বাপ বেটা একসঙ্গে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে l"

Wednesday, July 6, 2016

তাঁরা ভরা আকাশে ,                                       
কেউ নেই পাশে,                                             
আমি একা বোসে-                                       
তোমার কথা- ভাবি বেদনাতে -                      
স্মৃতিগুলি ভাষে,                                                    জাগে মনে কত কথা -                                   
সেই সে বিকাল বেলায়-                                
একসাথে বকুল  তলায়-                                            পড়িয়েছিলে মালা খানি -                                           সেই সে মালা শুকিয়ে গেছে আজ -                       
ঝরে গেছে ফুলগুলি -                                        কোথা আছ তুমি ?                                         
আমি জানি না -                                            
আমার জীবন মেঘে ঢাকা -                                          কথা দিয়েছিলে, সাথে সাথে রবে-                             
সে কথা হয়তো ,গিয়েছো ভুলে -                                
কোথা আছ আজ ? কেন চলে গেলে ?                            
শুধু আমায় একা ফেলে / 28.12.15.                                          (আমার গান )..( নন্দা মুখার্জী )
...........*শৈশব স্মৃতি*............                                                           শৈশব স্মৃতি - সতত মধুর হয় -                       
হাসি ,ঠাট্টা ,খুনসুটিতে দিন চলে যায় -             
িনগুলিই শুধু চলে যায় ,                                       
স্মৃতি টুকু রয়ে যায় -                                         
জীবন এগিয়ে চলে ঝড়ের গতিতে                         
আমরাও বেচে থাকি ,                                       
যে যার নিজের মতিতে -                                  
ফেলে আসা শৈশব ,ফেলে আসা দিন ,                           
ফিরবে না জানি আর কোনো দিন -                     
তবুও সে স্মৃতি -                                              
হয়ে  থাকবে, চির  অমলিন l 30.12.15

Tuesday, July 5, 2016


"কপাল"    


(নন্দা মুখার্জী )                                                                 দেবেশ সদ্য়, সদ্য় চাকরি পেয়েছে l সরকারী , সামান্য ক্লাক এর চাকরি l তবুও মায়ের ইচ্ছা বিয়ে দেওয়ার l বাবা, কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মী ছিলেন l এখন মোটা টাকা পেনশন পান l  স্বামী, স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে দেবেশ l সুখী সংসার l কিছুদিন হোলো, দেবেশদের  বাড়ির পাশেই এক পরিবার ভাড়াটিয়া হয়ে এসছে l  মায়ের কাছে দেবেশ গল্প শুনেছে, এক মেয়ে গ্রাজুয়েশন করেছে, আর তার মা বাবা l সচ্ছল পরিবার l মেয়েটি দেখতে নাকি খুব ই সুন্দরী l একদিন দেবেশ ছাদে বিকালের দিকে পায়চারী কোরছে- হঠ্য়াত দেখে মেয়েটিও তাদের ছাদে l  অবাক হোয়ে যায় দেবেশ তাকে দেখে l মনে মনে ভাবে "এতো সুন্দর দেখতে l আচ্ছা, মা তো আমার বিয়ের জন্য মেয়ে খুজছে , এই মেয়ে টাকে  মা চোখে দেখতে পারছে না ?? প্রথম দেখাতেই মেয়েটির প্রেমে পড়ে যায় দেবেশ l মেয়েটি কিন্তু দেবেশ কে খেয়াল ও করে না l কিছুক্ষণ পর মেয়েটি ছাদ থেকে নেমে যায় l দেবেশ ও আনমনা ভাবে নীচে নেমে আসে l প্রায় রোজ ই মেয়েটির সাথে দেবেশের এদিকে ওদিকে যেতে দেখা হতে লাগলো দেবেশ যেন মেয়েটিকে দেখে চোখ ফেরাতেই পারে না এতো তার রূপ l ইতিমধ্যে মেয়েটির নামটা ও জেনে নিয়েছে দেবেশ l ওর ডাক নাম পিউ l পিউকে একদিন বাইরে বেড়োতে  দেখে দেবেশ তার পিছু নেয় l পিউ কিছুটা যেয়ে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে, দেবেশ ঠিক তার পিছনে l পিউ ব্যাগটা খোলে ; ছোট একটা কাগজের চিরকুট ফেলে দিয়েই হন-  হন কোরে হাটতে শুরু করে l দেবেশ আনন্দে আত্মহারা হয়ে কাগজের চিরকুটটা তুলে নেয় l চিরকুটটা খুলে দেখে- তাতে লেখা,  "ও রকম ক্যাবলার মতো আমার দিকে তাকাবে না"l দেবেশ ভাবে,  যাক ক্যাবলা ভাবুক আর যায় ভাবুক মনে হয় চোখের ভাষা টা বুঝতে পেরেছে l কিছুদিন পরে দূর্গা পূজা ছিলো l  পূজার সময় পিউরা গ্রামের বাড়িতে যায় , ভাই ফোটার আগে ফেরে l দেবেশ মায়ের কাছে  গল্প শুনেছে l দেবেশ স্থির করে ভাই ফোটার পরেই মা কে কথাটা বলবে l                                                                    ভাই ফোটার দিন সকাল l হঠ্য়াত কলিং বেলটা বেজে ওঠে l দেবেশ তখনও বিছানা ছাড়েনি l তার মা যেয়েই দরজাটা খুলে দিলেন l ঘর থেকেই দেবেশ শুনতে পেলো- মা বলছেন, "একি মা , মেয়ে একসাথেই l আসুন, আসুন ভিতরে আসুন" l দেবেশ  লাফ দিয়ে উঠে বসলো খাটের উপর l দেবেশ শুনতে পেলো পিউ এর মা বলছেন, "আর বলবেন না দিদি, পিউ এর তো কোনো ভাই নেই l সে এবার বায়না ধরেছে, দেবেশ কে ভাই ফোটা দেবে l আমিও ভাবলাম, ভালোই তো- দেবেশ তো খুব ভালো ছেলে l একটা সম্পর্ক আপনাদের সাথে তৈরি হবে l মেয়ে আজ সকলের আগে ঘুম থেকে উঠে, স্রান সেরে সব গুছিয়ে নিয়ে এসছে l এই নিন, এই পান্জাবী আর পায়জামাটা দেবেশ কে দিন l  ও স্রান সেরে এইটা পড়ে এসে পিউ এর কাছ থেকে ভাই ফোটা টা নিক"l পিউ এর মা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ দেবেশের মায়ের হাতে ধরিয়ে দিলেন l দেবেশ তার নিজের ঘর থেকে সব শুনলো l  তারপর হতভম্ব হোয়ে সেখানেই শুয়ে পড়লো l
সত্যি কারের ভুতের গল্প"...                          
1971 সাল / সবে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে / সমরেশ রায় চৌধুরী তার স্ত্রী ,ছেলেমেয়েকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি ফিরে গেছেন / শুধু ভিটেটাই আছে / পাকিস্থানি মিলিটারী তাঁর বাড়ি ঘর - এমন কি বছর মাইনে করা বাড়ির কাজের লোক বীরেন  মান্না কেও মেরে ফেলেছে / শুধু মাত্র নামেই ছিলো তাঁর বাড়ির কাজের লোক / সন্তান সম দেখতেন তাকে / মিলিটারীরা যখন গ্রাম আক্রমন কোরে ,একের পর এক ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে ,যাকেই সামনে পাচ্ছে তাকেই গুলি কোরে মারছে ; তখন সমরেশ বাবু তাঁর বউ ,বাচ্চা ,বৃদ্ধা মা,আর তাঁর বীরেন কে নিয়ে বাড়ির ই একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন / কিন্তু হতভাগ্য বীরেন হঠ্য়াত করেই" আস্ছি "বলেই বেড়িয়ে গেলো / জঙ্গলের মধ্যে বসেই সকলে দেখতে পেলো ,তাদের বাড়ি দাউ ,দাউ কোরে জ্বলছে / কিন্তু বীরেন ফিরছে না দেখে সমরেশবাবু ও তাঁর স্ত্রী অস্থির হোয়ে পড়েন / সন্ধ্যার দিকে সকল ধব্ংস স্তূপের সামনে এসে দাড়ান  অন্ধকার হোয়ে আসছে / ভালো কোরে কিছু দেখা যাচ্ছে না / তবুও তাঁরা বীরেনের নাম ধরে বেশ কয়েকবার ডাকাডাকি করলেন / কিন্তু বীরেনের কোনো সাড়া পেলেন না / গ্রামের সন্ধ্যা ; আজকের দিনের মত কোনো আলো ও ছিলো না / বাসস্থান তো শ্বশান / তাই তাঁরা সময় নষ্ট না  কোরে অনির্দিষ্ট পথের যাত্রা শুরু করলেন / হঠ্য়াত করেই ঈশ্বরের আশীর্বাদের মত একটি পরিচিত মুসলমান ছেলের সাথে দেখা হলো / সেই রাতের মত তাঁরা সেই ছেলেটির বাড়িতেই আশ্রয় নিলেন / কিন্তু বীরেনের চিন্তায় ভোর হতে না হতেই সমরেশবাবু আবার নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন / হঠ্য়াত ই দেখেন বীরেন একটা টিনের কৌটা বুকের সাথে চেপে ধরে উঠান থেকে কিছুটা দুরত্বে আম গাছের তলায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছে / সমরেশ বাবু হতভম্ব হয়ে গেলেন / কিন্তু ভেঙ্গে পড়লেন না / এই মুহুত্বে তাঁর করণীয় কাজটা স্থির কোরে ফেললেন / আশে -পাশের বাড়ি থেকে কিছু লোক যোগার কোরে ,তাকে মাটির তলায় চাপা দিলেন / কারণ সেই মুহুত্বে এই ছাড়া তার অন্য কোনো উপায়ও ছিলো না /             পাক্কা দশ মাস / তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে এখানে - ওখানে ঘুরে বেড়ান / দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ছোট একটা বেড়ার ঘর কোরে তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে নিজের ভিটে ই ফিরে আসেন / কাহিনীর সূত্রপাত সেখান থেকেই / প্রথম রাত থেকেই শুধু সমরেশবাবু নন ,বাড়ির সকলেই বীরেনের অস্তিত্ব টের পান /একটা কৌটার মধ্যে কিছু খুচরা পয়সা থাকলে সেটা ঝাঁকালে যেমন আওয়াজ হয় ; ঠিক তেমন কোরেই কেউ যেনো কৌটা ঝাকাচ্ছে / প্রথম অবস্থায় কেউ কিছুই পাত্তা দেন না / কিন্তু রাত যতো বারে পয়সা ঝাকানির আওয়াজ ও ততো বাড়ে / বীরেন যখন সমরেশ বাবুর বাড়িতে কাজ করতো ; তখন তিনি মাঝে ,মাঝে বীরেনকে বছর মাইনে ছাড়াও -হাত খরচ বাবদ কিছু টাকা দিতেন / তার থেকে যেটা বাঁচত ,সে সেটা টিনের কৌটার মধ্যে জমিয়ে রাখত / মিলিটারীর আক্রমনের জঙ্গলে লুকিয়ে থাকার সময় হঠ্য়াত তার ওই পয়সার কথাগুলি মনে পড়ে / আর সেটা নিতে এসেই অকালে প্রাণ হারায় / কিন্তু তার আত্মা বাড়ি ছেড়ে বেড়োতে পারে না / দশ মাস পরে বাড়ি ফিরে তিনি যখন বাগানে বীরেনকে যেখানে পোতা হয়েছিলো ; সেখানে দেখতে যান / তখন দেখেন ,তার হাড় ,মাথার খুলি নানান জায়গায় ইতস্তত ছড়ানো / প্রথম দিন রাতে বীরেনের অত্যাচারের পরে তিনি লোক দিয়ে ওই সব হাড় - গোর ,মাথার খুলি একটা বড়ো গর্ত কোরে তার নীচে পুতে দেন / কিন্তু সেদিন রাতে বীরেনের অত্যাচার আরও কয়েকগুন বেড়ে যায় / সকলের মনে হয় যেনো ,বারান্দার উপর কেউ নাচছে / সঙ্গে কৌটার ভিতর পয়সা ঝাকানোর শব্দ / ঘরের ভিতর সকলে ভয়ে সিটিয়ে থাকে / সকালে আবার তিনি বাগানে যেয়ে দেখেন ,সেই হাড় ,মাথার খুলি আগের মতোই ছড়ানো / আবার তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন / গ্রামের বন্ধুদের পরামর্শে তিনি ডেকে আনেন একজন বড়ো ওঝাকে / ওঝা গণনা কোরে বলেন ," আত্মা বাড়ির ভিতরেই আছে / কিছুতেই মায়া কাটাতে পারছে না" / উপায় হিসাবে বলেন ,"যে আম গাছের কাছে বীরেন মারা যায় ,আজ রাতেই যদি সেই আম গাছের একটা ডাল ভেঙ্গে পড়ে ,তাহলে বুঝতে হবে - আত্মা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে "/ তার জন্য তিনি কি সব মন্ত্র ও পড়েন ,জলও ছিটান / অ -বিস্বস্য় হলেও সত্য - সেদিন মাঝ রাতে আম গাছের একটা ডাল হঠ্য়াত ই ভেঙ্গে পড়ে / সেদিন থেকে বীরেনের অত্যাচার ও বন্ধ হয় / এর বেশ কয়েক বছর পর সমরেশ বাবু গয়ায় যেয়ে বীরেনের পিন্ড দান কোরে আসেন /            6.12.15
আমি নই উন্মাদ -                                         
আমি তোমাতেই করিবো বাস -                     
আমি ভালোবাসার পাগলিনী ,                                             শুধু তোমাকেই আমি চিনি -                           
আমি অশান্ত এক ঝড় -                                 
তুমি এসো কাছে -                                         
শান্ত হবো আমি আবার ,                                
আমি পথ চেয়ে ,                                             আজও বোসে আছি -                                      
আমি যে শুধু তোমাকেই- "ভালোবাসি"l      28.12.15


.............*মঙ্গল করো*...............                                                   আরও একটি বছর চলে গেলো -                            
ছোটরা একটু বড়ো হলো -                             
মধ্য বয়সীদের একটি বছর কমে গেলো                
সংসারের যাতা  কলে,পড়েছে সবাই -               
সুখের চেয়ে দুঃখ বেশী,                                
জেনে গেছে সব্বাই -                                       
এমনি করেই কেটে যাবে, সারা বছর ধরি       
দিতেই হবে সকলকে-                                           
জীবন সাগর পারি-                                        
গেলো যে বছর চলে  -                                        
তার দুঃখগুলি যাও ভুলে -                               
অন্ধকারের পড়েই আলো যেমন আসে - অমাবস্যার পড়েই চাঁদ টি তেমন হাসে -              
চাঁদের মতই হাসো,সারা বছর ধরি -                  
দুঃখ ভুলে সবাই মিলে,এক সাথেই চলি -                          
ভালো থেকো,সুস্থ্য থেকো -                              
হোক জীবন সকলের শান্তিময় -                          সকলের করো, মঙ্গল তুমি -                            ওগো - মোদের মঙ্গলময় / 31.12.15
......................*পরজম্ম*.......................                                                           হয়তো জীবনে হারিয়ে যাবো -                         
তোমার হতে আমি -                                          
হাজার তারার মাঝে তখন ,                                  
খুজবে আমায় তুমি -                                      
দেখবে তুমি একটি তাঁরা -                              
দিচ্ছে বেশী আলো -                                       
যেমন কোরে জীবনে তোমায় -                          
বেসেছিলাম, অনেক- ভালো ;                             
চোখ দুটি তোমার ঝাপসা হবে ,                         
মুছবে রুমাল নিয়ে ,                                               আমার পরশ পেয়ো তুমি -                                       
বুকেতে হাত দিয়ে /.                                                      অনেক মানুষ থাকবে পাশে                                              তবুও হবে একা -                                                 
না হয় পেলাম এ জনমে                                         
পরের জনমে পাবোই পাবো দেখা /.           30.12.15

Monday, July 4, 2016

*চোর* (নন্দা মুখাৰ্জী ) 1.7.16
===================
চোর চোর রবে চিৎকার কোরে ..
উঠলো জনতা ,
সবাই দৌড়ালো চোরের পিছনে -
কি চুরি হয়েছে জানে না কেউ তা ,
ধাওয়া কোরলো পথিকেরা সকলে -
আবালবৃদ্ধবনিতা /
চোর পরে ধরা ,
মুখে নেই কথা ,
ছাড়েনা কেউ তারে ,
পিছনে ধাওয়া করা সাধুরা /
বেদম প্রহার ,লাথি ঘুষি সব ,
একে একে পড়লো চোরের গায়ে ,
তবুও সে খোলে না হাত ;
মুঠি কোরে আছে ধরে /
মরণাপন্ন ,অচৈতন্য চোরের ,
 মুঠি খুলে জোড় করে ;
দেখলো সকলে চুরি করেছে সে ,
একটি মাত্র পোড়া রুটি /
যে যার মতন আধমরা চোরকে রেখে ,
যাচ্ছে যখন চলে ;
ছ ,সাত বছরের একটি মেয়ে ,
আসলো দৌড়ে ঐ চোরের কাছে ,
যার কাছে সে চোর নয় ;
শুধু তার বাবা /
কেঁদে বলে বাবা," তুমি কথা বলো -
আর কখনো বলবো না ,
আমার খিদের কথা,
ওরা কেন তোমায় মারলো এতো ,
কেনো দিলো এতো ব্যথা ?"
একখানি রুটি নিয়েছো তুমি ,
কি এমন অপরাধ তাতে ;
ঐ তো সেদিন ঘোষদের বাড়িতে ,
কি জানি কি উৎসব ছিলো ,
কত খাবার তারা ফেলে দিলো বাবা ,
দিলো নাগো আমাদের খেতে /
আস্তে আস্তে ওঠো বাবা তুমি ,
রুটিটা ওদের দাও দিয়ে ;
ঐ রুটির জন্যই মেরেছে তোমায় ,
তাই ওটাই ওদের দাও ফিরিয়ে /
নন্দা মুখাৰ্জী . 1.7.16  9-30PM.

Saturday, July 2, 2016

"পাওনা গণ্ডা" ( নন্দা মুখার্জী ) 22.03.2007.
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
দুঃখ আমাকে পাষান করেছে ,
তাই হয়েছি আজ স্তব্ধ ;
চারিদিকে আজ শুধুই আঁধার -
চারিপাশের দুয়ার বন্ধ /
দিয়েছি অনেক-হারিয়েছি আরও বেশী ,
সহেছি শুধু - হয়নি কিছু লব্ধ ;
পিছন ফিরে তাঁকিয়ে দেখি -
সেখানেই দাঁড়িয়ে -
যেখানে আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম ,
আপনের কাছে হাত বাড়িয়ে /
আপন আমাকে আঘাত করেছে ,
ভেঙ্গেছে আমার বিশ্বাস ;
ভালোবাসা নিয়ে ছিনিমিনি খেলে ,
বন্ধ করেছে আমার নিঃস্বাস /
বিশ্বাস আজ মরীচিকা হয়েছে ,
ভালোবাসা হয়েছে সুখ-পাখি ;
গন্তব্যে পৌঁছাতে তাই বুঝি আমার -
এখনো অনেক বাকী /
হারবোনা আমি কোনো কিছুতেই ,
ভয়ে হটবো না পিছু ;
যে ভাবেই হোক -
আদায় কোরে নেবো ,
আমার জীবনে হারানো সবকিছু /
চালিয়ে যাবো সংগ্রাম আমি ,
যতদিন না হিসাব আমার মেলে ;
পাওনা গণ্ডা পেয়ে গেলেই আমি ,
বাঁচবো জীবনে হেসে - খেলে /
22.3.7