Thursday, March 30, 2017

কবিতা চোরেরা সাবধান
   নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
মাঝে মাঝে চুরি হয় ,
ফেসবুকের কবিতা ,
বোকা চোর ধরা পরে ,
লজ্জায় পড়েনা !
চুরি করে কবি হওয়া যায়না ,
জানে না তারা তা !
ওগো চোর মহারাজ !
শুন দিয়ে মন ,
কবি শুধু টাইম লাইনেই পোস্ট  নয় ,
অনেক গ্র্রুপ ,নিজ পেজ -
এ যে তার কাছে অমূল্য ধন ।
যদি তুমি করো ব্লক ,
আমার প্রোফাইল নামটি দিয়ে ,
অনেক বন্ধু জানাবে আমায় ,
কটূক্তি করবে তোমায় নিয়ে !
ব্লকড হয়ে আছি -
পাবোনা চুরিকরা কবিতা ,
আর তোমার ছবি ,
বন্ধুরা পাঠাবে আমায় ,
হে চোর কবি !
আমি দেবো পোস্ট তখন ,
তোমায় নিয়ে -
হেট্ হবে মাথা তোমার !
লুকাবে কোথায় গিয়ে ?
নন্দা    30.3.17   3PM.
অতীত স্মৃতি
    নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
শুনশান রাস্তা ,
 রাতের আঁধার ,
  জানালায় চোখ রাখি ,
   ঘুম নেই আমার ।
    আনমনে চলে যাই ,
     সেই ছেলেবেলা ,
      বাবা যেন ডেকে বলেন ,
       "ঘুমা মা,উঠতে হবে সকালবেলা ।"
         তিন যুগ হোলো প্রায় ,
          বাবা কাছে নেই আমার ,
           এখনো যে শুনতে পাই ,
            গলা তার বারবার !
             খুব ভোরে চোখ মেলে -
              ঘুম চোখে তাঁকিয়ে ,
               হাসি মুখে বাবা যেন ,
                দাঁড়িয়ে আছেন শিয়রে !
                 "উঠে পর মা তুই ,
                   বই নিয়ে বোস এবার ,
                    সময় যে চলে যায় ,
                     যেতে হবে বহুদূর ।"
                       অতীত স্মৃতি আমার ,
                         বারবার পিছু ডাকে ,
                          কাছে থেকে বাবা যেন ,
                            দুঃখ ,যন্ত্রনা থেকে ,
                             আড়ালে আমায় রাখে ।
নন্দা   30.3.17

Tuesday, March 28, 2017


শেষ নেই
   নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

কষ্টগুলি জমা রেখে ,
ভালথাকার অভিনয়টা চালিয়ে যাওয়া ভালো ,
কি লাভ অন্যকে নিজের কষ্টের কথা বলে ?
হয়তো এমন একটা সময় আসবে -
আমাকেই আঘাত দিতে -
সে এটাকেই হাতিয়ার কোরবে !
তারথেকে ভালো কষ্টটা থাক -
গভীর রাতের জন্য !
যখন অন্ধকারেও মাঝেও -
কষ্টগুলির সাথে মুখোমুখি হওয়া যায় !
আচ্ছা ,চোখের ভিতর যে জলের খনি আছে ,
সেটা কি সমুদ্রের থেকেও গভীর ?
হৃদয় গভীর ! সেই গভীরতার মধ্যে ,
ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে -
কিন্তু সেই হৃদয়ে তো আবার -
কষ্টগুলিও জমা হয় !
ভালোবাসা ,কষ্ট যেখানে জমা হয় ,
সেই গভীর হৃদয়ের কোনো তল আছে কি ?
কতটা কষ্ট ,কতটা ভালোবাসা ?
মাপার কোনো যন্ত্র সত্যিই যদি আবিষ্কৃত হত ,
তাহলেই হয়তো সুখী মানুষগুলিকে -
খুঁজে বের করা যেত !
নন্দা     28.3.17
                   আমাদের বাঙ্গালী সমাজের অন্তরটা অত্যন্ত কালো ; সমাজের মানুষের অন্তর যেন আরও কালো । সমাজ আমাদের খেতে পড়তে দেয়না -এটা ঠিক ; কিন্তু তবুও আমরা এই সমাজকে মেনেই এগিয়ে চলি ভবিৎষতের দিকে ।

                            সমাজটা এতটাই কলুষিত যে এখানে কোনো অবস্থাতেই একটা পুরুষ ও সমবয়সী একটা নারীর বন্ধুত্বকে  দীর্ঘদিন সু-নজরে দেখেনা । সেখানে যে ভাবেই হোক তারা আঘাত হানবে ! পিতৃমাতৃহীন সমবয়সী দুটি ভাইবোনও যদি দীর্ঘদিন একসাথে থাকে সেখানেও সমাজের মানুষেরা কথা বলতে ছাড়েনা । আমার দেখা একটি ঘটনা - মেয়ের কুষ্ঠি বিচার করে বাবা দেখলেন ,৩৬ বছর আগে মেয়ের বিয়ে দিলে মেয়েটি স্বামীহারা হবে । মা অনেকদিন আগেই গত হয়েছেন । পাড়াপ্রতিবেশীরা বাবা ,মেয়েকে নিয়েও কথা বলতে ছাড়েনি ! এটা কোন সমাজ ? ভালোবাসার সুন্দর সম্পর্কগুলি যাকে সমাজের শিক্ষিত ,ভদ্রলোকেরা (?) অবৈধ প্রেমে পরিণত করে ,যেখানে স্নেহ ,শ্রদ্ধা ,দায়িত্ব ,কর্তব্যগুলিকে কুনজরে দেখে বদনামের ঝড় তুলে দিয়ে সমাজে আখ্যায়িত ভদ্রলোকেরা (?) তাদের মনের কালোদিকটা বের করে দেয় অন্যদের সামনে - তারা কি সত্যিই সম্মানীয় ব্যক্তি ?

                            একটা সম্পর্ক গড়তে অনেকটা সময়ের দরকার । যখন সম্পর্কগুলি তিলতিল করে গড়ে তোলা হয় ; তখন কিন্তু সমাজ বা তার সদস্যরা কিংবা নিকট আত্মীয়রাও পাশে থাকেনা ,কিন্তু কলুষিত করে ভাঙ্গতে পারে ,বদনামের ভাগিদার করতে পারে ! এটাই কি সমাজ ?

দুঃখ- বিপদকে জয় করার মধ্যেই মনুষ্যত্ব । অম্লানবদনে বদনাম বা অপবাদকে সহ্য  করে সবকিছুকে উপেক্ষা করে যদি সম্পর্কগুলিকে রক্ষা করা যায় তাহলে দামী পোশাকপড়া নামী মানুষগুলির মুখে ঝামা ঘষে দেওয়া যায় । আর সহিষ্ণুতাই হচ্ছে সেই শক্তির মূল উৎস ।

                       তাই মনেহয় সুন্দর সম্পর্কগুলিকে নোংরা কথার জন্য নষ্ট না করে সময় দেওয়া উচিত যাতে করে ওই মানুষগুলির ভিতরের কালোদিকগুলিকে সম্পূর্ণভাবে উগরে দিতে পারে  ; তাহলে তাদের ভালোমানুষীর  মুখোশটাও সকলের কাছে খুলে  যাবে । তাই শুধু অপেক্ষা ! সম্পর্কের দ্বার রুদ্ধ করতে নয় ; ঐসব নোংরা মানুষগুলির মুখোশ উন্মোচন করতে !
  নন্দা

Friday, March 24, 2017


কোথায় পাবো সম্মান
   নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
পুকুর ভরা মাছ ,গোলা ভরা ধান -
ছিলো বাস পূর্ব পাকিস্তান ,
সম্মান বাঁচাতে অনেকেই এলো -
সবকিছু ছেড়ে এই হিন্দুস্থান ।
স্বপ্নপুরী ভেবে  যারা হোলো উদবাস্তু -
মাথার উপর হারালো ছাদ ,
ভাঙ্গলো তাদের সকল স্বপন ,
দেখলো তারা- মানুষরূপী এখানেও জীবজন্তু !
কোথায় যাবো বন্ধু বলো ?
কোথায় পাবো মানুষের সম্মান ?
কোথায় বসে লিখবো আমরা ?
ঘুনে ধরা সমাজের কথা !
হারাবোনা একটুও মান ।
নন্দা  23.3.17

Wednesday, March 22, 2017

প্রেমের আবার মাস কি
  নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
বসন্ত আসে প্রকৃতির নিয়মে ,
চারিপাশে শুধু লাল ফুলের সমারোহ ,
পলাশ ,কৃষ্ণচূড়া ,শিমুল -
নাম না জানা কত ফুল !
অনেকে বলেন ,
এই ফাগুন মাসে নাকি -
মনে জাগে প্রেমের আগুন !
প্রেম কি শুধু আসে এই ফাগুনেই ?
ফাগুনে আবির মেখে শরীর রাঙ্গাই ,
মনের আঙ্গীনা রঞ্জিত হয় কি ?
গাছের ডালে কোকিল যখন ;
কুহু স্বরে তার সাথীকে ডাকে ,
অনেকেই তখন তার সাথীহারা জীবনে -
একা ,একাই ঘরে বসে থাকে !
21.3.17  
এ কেমন তুমি
      নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
কবিতা ! তুমি এমন কেন ?
কখনো তুমি চোখে আনো জল ,
কখনো বা তুমি আবেগে ভাষাও ,
মনটা করো উথাল পাতাল !
কবিতা ! তুমি কখনো আসো প্রেমিক রূপে ,
তোমায় কাছে পেয়ে ভাসি আমি আবেগে !
মাঝে মধ্যেই আমায় করো বিরহিনী ,
সকলের মাঝেও হয়ে পড়ি একাকিনী !
কখনোবা তুমি মাতৃরূপে ,কখনো পিতৃরূপে !
দেও আমায় সঙ্গ ,
স্নেহের পরশ বুলিয়ে দাও ,
আমার সারা অঙ্গ ;
বিদ্রোহী হয়ে যুবক ,যুবতীকে করো উদ্বুদ্ধ ।
তুমি অনন্ত --
তোমার মত বন্ধু আর কেউ নেই ,
তুমি আষ্ঠেপৃষ্ঠে আমায় জড়িয়ে আছো ,
নানান রূপে ,নানান ভাবে !
তুমি আমার চিরকালীন বন্ধু ,
যতদিন আমার চোখে দ্যুতি আছে ,
আমি তোমায় ছাড়বো না ।
নন্দা   21.3.17

Monday, March 20, 2017


      জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলে তার তাপ এসে গায়ে লাগে ; মনের ভিতর যখন আগুন জ্বলে কেউই তাকে দেখতে পায়না । দাউ ,দাউ করে জ্বলতে ,জ্বলতে একসময় তুষের আগুনের মত ধিকিধিকি করে আজীবন জ্বলে । অতি কাছের মানুষও তার উত্তাপ পায়না ।
   বিচিত্র এই মানব জনম !
   ঘরে ,বাইরে সর্বত্রই মুখোশ !
নন্দা   20.3.17
#অনুকবিতা
 মনটা যদি হত পরশপাথর !
ভাবনাগুলো মনের ছোঁয়ায় -
     পূর্ণতা পেতো ।
 নন্দা

Sunday, March 19, 2017


মাঝিহীন তরী
  নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
আমার জীবনতরী দিয়েছি ভাসিয়ে ,
মাঝির নেইকো দেখা -
কেমনে আমি পার হবো নদী ,
আমি যে তরীতে একা !
কূলের ঠিকানা জানা নেই আমার ,
বাইতে পারিনা তরী -
উদাসমনে একা বসে সেথায় ,
শুধু ভাবনা সম্বল করি !
কথা ছিলো বাইবো তরী ,
একই বৈঠা হাতে -
হঠাৎ করেই হারালো মাঝি ,
ভেসে গেলো বুঝি অন্য স্রোতে !
নন্দা   19.3.17

Saturday, March 18, 2017

স্বপন মাঝে দেখেছিলাম -
বাস্তবেতে দাওনি ধরা -
অশ্রু জলে ভিজেছিলাম -
লাগেনি গায়ে বৃষ্টির ধারা ।
নন্দা
আমার_বাবা
        নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী      
প্রতিটা মেয়ের জীবনে আমার মতে প্রথম পুরুষ তার বাবা । জম্মের পর থেকেই তার সান্নিধ্যে বড় হওয়া ,তার শিক্ষা ,তার রুচি ,তার আদর্শে মানুষ হওয়া ।          
বিচিত্র এই পৃথিবী ! হয়তো আরও বেশি বিচিত্র মানুষ আর মানুষের মন । তাই পৃথিবীতে মানুষের মন আর মনের মানুষ পাওয়া বড়ই কঠিন । কিন্তু সকল মনের অন্তঃপুরে আর একটি  শ্বাশত মন থাকে যেখানে আমার মনেহয় প্রতিটা মেয়ের জীবনে বাবার প্রবেশাধিকার সকলের আগে ।       
পেশায় আমার বাবা ছিলেন একজন আইনজীবী । অতি শান্ত ,মিষ্টভাষী ,মানবদরদী । সব থেকে বড় কথা তিনি ছিলেন বাস্তববাদী । অধিকাংশ কেস তিনি লড়তেন গরীবদের হয়ে ; টাকাপয়সা না নিয়ে । উপরন্ত পকেটের টাকা খরচ করে দূরদূরান্ত থেকে মক্কেলদের দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করতেন ।স্বচ্ছল  পরিবারের সন্তান হওয়ার ফলেই তিনি তার রোজগারের অধিকাংশ টাকা গরীব দুঃখীদের মধ্যেই বিতরন করতেন । বহু গরীব মানুষের সন্তানদের তিনি শুধু অর্থ সাহায্যই নয় ; আমাদের নিজেদের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থাও করেছেন । আমরা অনেকগুলি বোন এবং একটিমাত্র ভাই । আমাদের কখনোই তিনি নাম ধরে ডাকতেন না ,ডাকতেন 'মা' বলে । তাতে যেই সাড়া দিকনা কেনো । কথা বলতেন 'তুমি' করে । আমরা সকলেই যেন ছিলাম তার গর্ভধারিণী ।      সারাদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে তিনি আমাদের পড়াতে বসাতেন । আমার একদিদি যখন বি.এ. পড়ছেন তখন আমার বাবা তাকে একটি ইংরাজি প্রশ্নের উত্তর লিখে দেন । ওই অধ্যাপক সেদিন দিদির খাতাটি নিয়েই ক্লাসের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীদের ওই উত্তর পত্রটি লিখে নিতে বলেন ।         
এহেন মানুষটি সংসার জীবনে ছিলেন খুব উদাসীন । সবকিছু আমার মা ,ঠাকুমাকেই সামলাতে হত । তিনি এতটাই শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন ,পাড়ার লোকেরা কেউ কেউ  তাকে শিবঠাকুর ও বলতেন । খড়ম পরে সিমেন্টের উপর থেকে হাঁটতেন কোনো শব্দ হতনা ।      
    ৮৬ সালের ২৮শে নভেম্বর তিনি মারা যান । আজও তাঁর  শিক্ষা ,তার আদর্শ নিয়ে চলার চেষ্টা করি । বৈবাহিক জীবনেও চেষ্টা করেছি স্বামীর কাছে তার গল্প করেকরে তাঁর আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে । কন্যা ও পুত্রের মধ্যেও তার আদর্শের বীজ বপন করতে সতেষ্ট থেকেছি । এমন একজন মানুষকে বাবা হিসাবে পেয়ে আমি পৃথিবীর সবথেকে সুখী কন্যা বলে নিজেকে মনে করি । পরজন্ম বলে সত্যিই যদি কিছু থাকে আমি জম্মজম্মান্তরে তাঁকেই বাবা হিসাবে পেতে চাই । আজকের যে আমি - আমার শিক্ষা ,ধ্যানধারণা ,রুচি ,দায়িত্ব ,কর্তব্য -সবই আমার বাবার দেওয়া । আমার চোখে শ্রেষ্ঠ আদর্শবাদী মহান মানুষ আমার বাবা । তিনি চলে গেছেন কয়েক যুগ আগে । কিন্তু তার দেওয়া শিক্ষা ছাড়া নিমেষেই আমি অচল ।  
"পিতা  স্বর্গ ,পিতা ধর্ম ------পিয়ন্তে সর্বদেবতা",, 
নন্দা

Friday, March 17, 2017

সত্যিই কি আমরা শিক্ষিত
        নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
দুদিন ধরে অনাহারে ক্লান্ত -
ছোট ছেলেটি আর না পেরে ফুটপাথে শুয়ে ,
সম্মুখে সারি সারি খাবারের দোকান ,
খাবারের গন্ধে ম ম করছে তার চারিদিক ।
খিদের যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে ,
একটা পরোটা সে তুলে নেয় ,
খাওয়া তার আর হয়না ,
চোর অপবাদে তাকে মেরেই -
আধমরা করে রাখে সাধুরা !
যারা কোটি কোটি টাকা চুরি করে ,
তাদের গায়ে কিন্তু আচড়টিও লাগে না !
কখনো থানা ,পুলিশ ,জেলহাজত -
লোক দেখানো কত বিচার !
চুরির টাকা কিন্তু  ফেরৎ পাওয়া যায়না !
তাকে চোর অপবাদে লাথি ,ঘুষিও খেতে হয় না !
কিছুদিন পরেই বুক ফুলিয়ে আত্মসাৎ -
করা টাকা ফুর্তিতে সদব্যবহার করা !
তার নামের পরে 'বাবু' তকমাটিও থেকে যায় !
আর ওই শিশুটির হয়তো লোহার রডের -
গরম ছ্যাঁকায় পিঠে চোর কথাটি -
আজীবন থেকে যায় !
আমরা সমাজের শিক্ষিত(?) এবং ভদ্রলোক(?)  !

নন্দা   16.03.17 

Wednesday, March 15, 2017

সমাজ কাকে বলে
     নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে -
রাতের আঁধারে রাস্তায় যে মেয়েটি ,
সস্তা দামের মেকাপ মুখে লাগিয়ে ,
ভদ্রলোকের (?) নজরে পড়তে দাঁড়িয়ে থাকে ,
সমাজ তাকে নষ্ট মেয়ে বলে !
স্বামীর অগাধ টাকা ,গাড়িবাড়ি যার আছে -
সে যদি পরপুরুষের সাথে মদ খেয়ে ,
হোটেলে রাত কাটায় -
তাকে কিন্তু ওই নষ্ট মেয়ের দলে ফেলা হয়না !
হয়তো দেখা যায় সেই মহিলাই  বড় বড় অনুষ্ঠানে ,
হীরের অলংকার আর দামি পোশাকে -
সজ্জিত হয়ে সামনের সারিতে বসে আছেন !
যে মেয়েটি পেটের দায়ে নিজেকে বিকালো ,
সমাজের কাছে সে অচ্ছুৎ !
আর শুধুমাত্র ফুর্তি করতে যে -
অন্যের সাথে রাত কাটালো ,
সে সকলের কাছে সম্মানীয়া !
কারণ তার আছে টাকা ,
সবকিছু জেনে বুঝেও সকলে চুপ !
এটাই কি আমাদের সমাজে -
ধনী আর গরীবের পার্থক্য !
নন্দা    15.3.17

Tuesday, March 14, 2017

আবার মিলন হবে
  নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
আমি চলে এলাম তোমাদের ছেড়ে ,
স্বজ্ঞানে - সময় হয়েছে তাই ,
পাঁচ যুগেরও বেশি সময়  একসাথে থেকেছি ,
সুখে ,দুঃখে ,অভাবঅনটনে পরস্পরের পাশে ,
শুরু করেছিলাম একষট্টি বছর আগে ,
শুধু তুমি আর আমি -
আজ সংসার গন্ডিটা অনেক বড় ,
আমি জানি তোমার কোনো অভাব হবেনা ,
থাকবে শুধু আমার জন্য তোমার শুন্যতা ,
এ পারেও তোমার প্রতীক্ষাতে থাকবো ,
একটু ধর্য্য ধরো -
তোমার আমার আবার মিলন হবে ।
বি.দ্র:- আমার বড়দি ও  বড় ভগ্নিপতির একষট্টি বছরের বৈবাহিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে গত 21শে জানুয়ারী । বড়দার  স্মৃতির উর্দ্যেশ্যে আমার এই লেখাটি ।

নন্দা 24.2.17

#অনুকবিতা
    নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

 অমাবশ্যায় আঁধার থাকে ,
পূর্ণিমাতে যেমন আলো ,
মানুষ হয়ে মানুষের ,
কে কবে চেয়েছে ভালো ?

Monday, March 13, 2017


জানো কি
         নন্দা মুখার্জী  রায় চৌধুরী
খেলেছো হোলি  সবাই মিলে ,
মেখেছো মুখে রং !
বলতে পারো কেউ কি তোমার ,
রাঙ্গিয়েছিলো মন ?
প্রকৃতির নিয়মে এ ধরাতলে ,
আসে যে ফাগুন ,
জীবন আমাদের জ্বালাতে পারে ,
একজনই আগুন ।
কাছে সে থাক বা না থাক ,
ভালোবাসা বা বিরহে -
পুড়ে হবে মন ছাই !
কাছে এলে মনে হবে ,
দূরে কোথাও পালাই !
ভালোবাসতে এলে কাছে ,
লজ্জায় হবো লাল ,
তার বিরহে বিরহিনী হয়ে ,
কাটাবো অনন্তকাল ।
শয়নে ,স্বপনে ,দিবস ও রজনীতে -
ভাববো তারই কথা ,
তারই নাম কোরবো জপ ,
দিকনা সে শত ব্যথা ।
নন্দা   12.3.17

Sunday, March 12, 2017


# অনুকবিতা
        নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
রঙ্গিন হোলো শরীর আমার ,
মন রাঙ্গালো কি ?
মন রাঙ্গাতে পারে শুধু ,
প্রিয় মানুষটি ।
নন্দা

ভুলতে চাই
           নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
রাত বুঝি অনেক হলো -
ঘুমিয়ে পড়েছে সবাই ,
নিঝুম রাতে ঘুমের বদলে -
স্মৃতিগুলি জেগে আমায় ভাবায় ।
প্রতিরাতে আমিও যে চাই ঘুম -
ভুলে যেতে চাই ,
আঘাত ,অপমান আর লাঞ্ছনা -
নিশুতরাতে এরা আমার-
মনের দরজায় কড়া নাড়ে ,
বদ্ধ দরজা খুলতে বাধ্য হই ,
পরিণামে নোনাজলে বালিশ ভেজে !
কি অপরাধে অপরাধী আমি জানিনা -
বিধাতা কেন আমায় নিয়ে নিঠুর খেলা করেন বুঝিনা -
ভালোবাসার বিনিময়ে পাওয়া যায় ভালোবাসা মানিনা ,
জীবনের সুখ ,শান্তি নিয়ে আর আমি ভাবিনা ।
নন্দা  11.03.17  2AM.

#অনুকবিতা
            নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
আকাশে মেঘ জমলে নামে বৃষ্টি -
অপরূপ লাগে বিধাতার সৃষ্টি -
মনের কোণে জমলে ব্যথা -
অশ্রুধারা হয়ে ঝরে পরে মনের কথা ।
নন্দা

Saturday, March 11, 2017

মানেনা মন
            নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
জীবনে স্নেহ ,ভালোবাসার ক্ষেত্রে -
যতবার হোঁচট খেয়েছি ;
ততবারই মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ,
আবার তাদের দিকেই হাত বাড়িয়েছি ;
কখনো সে হাত ধরেছে কেউ ,
কখনো বা কেউ মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়েছে ,
দমে যাইনি - চেষ্টা চালিয়েছি -
মনে ভাবি বিধাতা যখন ,
এত স্নেহ ,ভালোবাসা অন্তরে দিলেন ;
যে মানুষগুলোর ভালো চাইলাম ,
যাদের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ,পরিশ্রম দিলাম -
তিনি তাদের বোধশক্তি দিলেন না কেন ?
তবে কি আমি পরাজিত ?
নাকি এটাই আমার ভাগ্য ?
নন্দা   11.3.17

Tuesday, March 7, 2017


যায় না বোঝা
           নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

সমুদ্রে ওঠে ঢেউ ,
দেখতে লাগে বেশ ,
জীবন নদীতে আসলে তুফান ,
আটকাতে পারো কেউ ?
ঝড় যে আসে ডাইনী বেশে ,
যায়না তারে চেনা !
ভেঙ্গে চুরে সব চছনচ করে ,
তার করণীয় সকলের অজানা !
হারায় তখন জীবনের ছন্দ ,
কেটে যায় তার লয় ,
মুছে যায় স্বরলিপি তার -
ভেসে যায় আনন্দ ।
নন্দা    7.3.17 10PM.

Sunday, March 5, 2017


#অনুকবিতা
          নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
শুকনো পাতা ঝরে যায় ,
প্রকৃতির নিয়মে -
ব্যর্থ জীবনের হাসি,আনন্দ থেমে যায় ,
জীবন যাত্রার অনিয়মে !
নন্দা
ঠিকানাহীন ভাবনা
      নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

মাথার উপরে একটুখানি ছাদ চাই ,
চাই ছাদের উপরে উন্মুক্ত আকাশ ,
যেখানে দাঁড়িয়ে নিতে পারবো -
বুক ভরে নিশ্বাস ।
বর্ষাকালে আকাশ যখন থাকবে মেঘাচ্ছন্ন ,
থাকবে মনটা আমার উদাস ,
একাকী ঘরে হয়ে থাকবোনা বিরহিনী ,
বিরহ ব্যথা ভিজে করবো নির্যাস ।
আমার ভাবনা ,আমার ইচ্ছা -
সে একান্ত আমার ,
পারবেনা বাঁধা দিতে কেউ ,
আমার এলোমেলো ভাবনার ।
  নন্দা   4.3.17   1AM.

Friday, March 3, 2017

#অনুকবিতা
            নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
আমার ভাবনাগুলো সব এলোমেলো -
কখনোই তারা কবিতা হয়ে ওঠে না -
দিকভ্রান্ত পথিক যেমন -
পায়না খুঁজে তার ঠিকানা ।
                     নন্দা

Thursday, March 2, 2017

#অনুকবিতা
          নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
হৃদয়ে পুঞ্জীভূত যন্ত্রনা ,
জানতে পারেনা কেউ ,
বাঁধ মানেনা চোখের জল ,
স্মৃতি রোমন্থনে সময় কাটানো ।
আশা ,আখাঙ্খা আর ভালোবাসা ,
হারিয়ে ফেলেছি তাদের ঠিকানা ,
লোক দেখানো সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে ,
মনটাই রয়েছে লাগামছাড়া ।
                    নন্দা

Wednesday, March 1, 2017


অবুঝ মন  ( চতুর্থ ও শেষ অংশ )      নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী      
--- তুমি সুখেন্দুকে ভালোবেসে সুখী হয়েছিলে কিন্তু বিপাশা ।
   ---ওটাকে ভালোবাসা বলেনা  । ওকে বলে জীবনে কাউকে আঁকড়ে বেঁচে থাকার জন্য এ্যাডজাষ্টমেন্ট । আর একসাথে থাকতে থাকতে মানুষটার প্রতি মমত্ববোধ ,সহনুভূতি ,কর্তব্য ; যেটাকে বাইরে থেকে দেখে অনেকে ভালোবাসা বলে ভুল করে । হ্যাঁ ,এইভাবে থাকতে থাকতে পরস্পরের প্রতি একটা ভালোবাসা তৈরী হয় ! কিন্তু সেটা জীবনের প্রথম ভালোবাসার কাছে তুচ্ছ । প্রকৃত ভালো তো একবারই বাসা যায় তুষার ,সমস্ত মন ,প্রাণ উজাড় করে । যদি পরস্পরের কেউ একের জীবন থেকে অন্যে হারিয়ে গেলেও মনের ভিতর তারজন্য একটা জায়গা থেকেই যায় - যা শূন্য অবস্থায় সারাটাজীবন পরে থাকে , সে একাকিত্বকে সঙ্গ দেয় , চোখের জল ঝরায় ,বুকটাকে মাঝে মাঝে মরুদ্যান করে তোলে ,বারবার ফিরিয়ে নিয়ে যায় তার ফেলে আসা অতীত জীবনে । তুমি আমার ভালোবাসাকে যদি সামনাসামনি প্রত্যাখ্যান করতে তাহলে হয়তো এত কষ্ট আমি পেতামনা ; কিন্তু আমার ভালোবাসা নিয়ে তুমি ছিনিমিনি খেলেছো নিজের মনের মত করে । নিজের মনগড়া ভাবনাকে প্রশ্রয় দিয়েছো ,আমার মনের ইচ্ছা অনিচ্ছার কোনো দাম দেওয়া তো দূরের কথা - জানতেও চাওনি । জানি আজ এই কথাগুলি বলে কোনো লাভ নেই ,কিন্তু তবুও বলতে বাধ্য হচ্ছি - কারণ কি জানো ? তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার, এখানে আসার পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত কোনো চিড় ধরেনি ।"         
তুষার অন্যমনস্কভাবেই উত্তর দেয় ,"আমিও তোতোমায় সেই একই রকম ভালোবাসি । তাইতো তোমার সব খবর আমার জানা । আমি বিশ্বাস করতাম ,মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত হলেও তোমার সাথে আমার দেখা হবে । আর সেই অপেক্ষাতেই আমি ছিলাম । পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেরদিনই আমি গ্রামে ফিরে যাই । তোমাদের বিয়ের সময় পিসীমা ও সুখেন্দুকে জানিয়ে দেই আমার শরীর খুব খারাপ তাই বিয়েতে উপস্থিত হতে পারবোনা । আস্তে আস্তে সুখেন্দুর সাথে যোগাযোগটাও বন্ধ করি । আর তোমাদের খবর রাখার জন্য পিসীমার সাথে যোগাযোগটা বাড়িয়ে দেই । কলকাতার কলেজ এবং স্কুলগুলিতে চাকরীর আশায় তখন সমানে ইন্টারভিউ দিয়ে চলেছি । আর অন্যদিকে সবকিছু ভুলে থাকার জন্য লেখার পিছনেই বাকি সময় ব্যয় করতে লাগলাম । একবার কলকাতায় ইন্টারভিউ দিতে আসার সময় আমার মানিব্যাগটা পকেটমারী হয়ে যায় । ঘটনাচক্রে ওই পকেটমার রেললাইনে কাটা পরে মারা যায় । সমস্ত আত্মীয়স্বজন,পরিচিত মানুষ ,পাড়াপ্রতিবেশী সকলের কাছে আমি মারা গেলাম । আমার কাছে সেটা শাপে বড় হলো । সেদিন যে ইন্টারভিউটা দিতে গেছিলাম সেই চাকরীটাও আমি পেয়ে গেলাম । এখনো মাসতিনেক চাকরী আছে । পিসীমার কাছ থেকেই খবর পেলাম তোমার আর সুখেন্দুর মেয়ে তৃষার জম্মের । মা ,বাবা মারা যাওয়ার পর গ্রামের বিষয়সম্পত্তি বিক্রি করে পাকাপাকি ভাবে আমার এই 'অপেক্ষা' তৈরী করলাম । পিসীমা মারা যাওয়ার পর আমি ফেসবুক ঘেটে ঘেটে সুখেন্দুর একাউন্ট বের করে সেখান থেকেই তোমাদের যাবতীয় খবরাখবর নিতাম । তৃষার বিয়ের খবরও আমি ওখান থেকেই পাই । এরপর তৃষার সাথে আমার বন্ধুত্ব হয় । আমিই তাকে বলি আমাকে কাকু বলে ডাকতে । তার কাছ থেকেই আমি সুখেন্দুর মৃত্যুর খবর পাই আর এও জানতে পারি কলকাতায় তুমি এখন একই ওই বাড়িতে ..."        তুষারের কথা শেষ হওয়ার আগেই বিপাশা হাতে তালি দিয়ে বলে উঠলো ,
    ---- বাহ্ তুষার বাহ্ ....সত্যি তোমার তুলনা নেই !পুরো রামায়ণ শুনিয়ে গেলে আমায় ! সাতাশ বছর ধরে আমার জীবন থেকে হারিয়ে যেয়ে আমার অগোচরে নিত্য আমার খবর রেখে তুমি আমায় কি প্রমান দিতে চাইছো ? তুমি কত মহান ? নাকি তুমি আমায় কত ভালোবাসো ? ভুল করেছিলাম আমি ,তোমায় আমি চিনতে পারিনি ! আসলে তুমি তোমার মনগড়া জীবনে বাস করো ! তুমি এক মানসিক রোগী !" - বলেই বিপাশা উঠে দাঁড়ায় ।
    সকরুণ স্বরে তুষার বিপাশার দিকে তাকিয়ে বলে ,"বিপাশা, কি বললে তুমি ? আমি মানসিক রোগী ? সারাটা জীবন ধরে আমি অপেক্ষা করলাম যারজন্য সে আমায় বলছে আমি মানসিক রোগী !
--- আর কি বলার আছে বলোতো ?
---আচ্ছা বিপাশা ,একটা কথা আমায় বলতো ? তোমায় ভালোবেসে ,তোমায় সুখী দেখতে চেয়ে সারাজীবন ধরে কষ্ট আর যন্ত্রনা ছাড়া আমি কি পেলাম ?
     এ কথার কোনো উত্তর না দিয়ে বিপাশা বাইরের দিকে পা বাড়ায় ।
---চলে যাচ্ছ ? রাত হয়ে গেছে আজ নাইবা গেলে ?
--- তা আর হয়না তুষার । একজন পরপুরুষের বাড়িতে রাত কাটালে লোকে আমায় কি বলবে ? জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় পিছনে ফেলে এসেছি । যে প্রশ্নের উত্তরটা আমার অজানা ছিলো ,যা আমাকে তিলেতিলে দগ্ধ করেছে - এতগুলো বছর বাদে তার সব উত্তর আমার পাওয়া হয়ে গেছে । আজ থেকে আমার আর কোনো কষ্ট নেই । তোমার সাথে আমার আর কোনোদিন দেখা হবেনা । তুমি ভালো থেকো ।
    বিপাশা বেরিয়ে গেলো । তুষার হতভম্বের মত তার গমন পথের দিকে তাকিয়ে মনেমনে বলতে লাগলো ,ভুল বুঝলে বিপাশা ,খুব ভুল বুঝলে ! ওই সময় আমি ছিলাম অসহায় । আমার কিছুই করার ছিলোনা । আমার চাকরী পেতে বেশ কিছুদিন লেগেছে । সুখেন্দু না হোক অন্য কোনো ছেলের সাথে তোমার বাড়ির লোক বিয়ে দিতোই । আমার মত এক বেকার ছেলের চাকরী পাওয়ার আশায় তোমায় বসিয়ে রাখতো না । স্বীকার তুমি না করলেও আমি জানি তুমি খুব সুখী হয়েছিলে । ভালো থেকো তুমিও । এখন থেকে আমায় শুধু ঘেন্নায় কোরো ।
নন্দা    24.10.16 রাত দশটা