হিসাব মেলেনি
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
পাঁচ বছরের ছেলের দুষ্টুমিতে অতিষ্ট হয়ে দীপা একটু বেশ জোরেই ছেলেকে বকা দেয় । একে রথীনের কলেজের সময় হয়ে গেছে ,সে এসে টেবিলে বসে পড়েছে ;অন্যদিকে ছেলে গৌতম রান্নাঘরে ঢুকে একজগ জল ফেলে দিয়ে পালাতে যেয়ে নিজেই মেঝেতে পরে যায় ।দীপা ছেলেকে তুলতে তুলতেই তাকে বকতে শুরু করে ।প্রচন্ড অভিমানী গৌতম ;চোখের থেকে তার সহজে জল পরেনা , খুব জেদীও ।মা তাকে মেঝের থেকে তুলে প্যান্টটা খুলতে গেলে সে বলে ওঠে ,"আমি আমার কাজ নিজেই পারবো ।" দীপা ওকে ছেড়ে দিয়ে রথীনের ভাতের থালা সামনে দিয়ে ওকে খুঁজতে যায় রাগ করে কোথাও বসে আছে কিনা দেখতে । ততক্ষণে গৌতম ভিজে প্যাণ্ট ছেড়ে অন্য একটি প্যাণ্ট পরে দোতলা থেকে নেমে আসছে দেখে । এসেই সে টুক করে বাবার কোলে বসে পরে । দুহাতে বাবার গলা জড়িয়ে ধরে বলে ,"বাবা ,মা খুব দুষ্টু হয়েছে ।এবার যখন আমরা বাইরে ঘুরতে যাব মাকে নেবোনা ।আমি ,তুমি আর কাকু যাবো ।" রথীন হেসে পরে বলে ,"ঠিক বলেছো ; আমিও কদিন ধরে দেখছি মা খুব দুষ্টুমী করছে । এটাই হবে মার শাস্তি ।" বাবা ,ছেলে দুজনেই খুব হাসতে লাগে । দীপা চুপ করে বসে চেয়ারে । রথীনকে ইশারায় বলে মাঝে মাঝে ভাতমাখা গৌতমের মুখে তুলে দিতে ।কারণ গৌতমকে খাওয়ানো খুব কষ্টদায়ক ।যদি তার অন্যমনস্কতায় পেতে কয়েকদলা দেওয়া যায় । রথীনও সুযোগের সদ্ব্যবহারটা করে । কলেজে বেরোনোর সময় হাসতে হাসতে বলে যায় ,"তোমার সবথেকে বড় কাজটি আমি করে দিয়ে গেলাম ; বাড়িতে ফিরলে আমার গিফ্টটা দিও ।" দীপা ছেলের সামনে চোখ পাকিয়ে রথীনের মুখের দিকে তাকায় ।
সোনার সংসার রথীন দাসের ।রসায়নের অধ্যাপক , ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় আর.ডি.,ছোট ভাইয়ের কাছে পিতৃতুল্য দাদা , দীপার কাছে দায়িত্ববান ও প্রেমিক স্বামী , আর ছোট্ট আদরের গৌতমের কাছে ? বায়না করার জায়গা আর খেলার সাথী ।
ছাত্রছাত্রীদের কাউকেই কখনও বকেছেন বলে কেউই মনে করতে পারবেনা কেউ পড়া না বুঝতে পারলে তাকে পাঁচবার বোঝাবেন অথচ কখনই তিনি বিরক্ত হননা ।
স্ত্রী ,পুত্র আর ভাইকে নিয়ে তার সংসার ।ভাই সবেমাত্র একাদশ শ্রেণীতে পরে ।মায়ের মৃত্যুর সময় সে মাধ্যমিক পরীক্ষা ও দিয়ে পারেনি ।বৌদিই এখন তার মা ,বৌদিই তার বন্ধু ।দীপাও তার দেওরকে খুব স্নেহ করে ।শ্বশুড়কে দীপা দেখেনি ।বিয়ের দু'বছরের মাথায় শ্বাশুড়ীও মারা যান ।মৃত্যুর সময় ছোট ছেলে রমেন খুবই ছোট ।অষ্টম শ্রেণীতে পরে । তিনি দীপার হাতদুটি ধরে বলেছিলেন ,'বৌমা আমার রমেনকে তোমাদের কাছে রেখে গেলাম ,মায়ের আদর ,শাসন আর বৌদির ভালবাসা দিয়ে তুমি ওকে তোমার মনের মত করে মানুষ কোর ।"রমেনও বৌদির খুব বাধ্য ।পড়াশুনাতেও মন্দ নয় ।দীপা আপ্রাণ চেষ্টা করে রমেন মনে কষ্ট পায় এমন কিছু না করতে । মায়ের অভাব সে রমেনকে বুঝতে দেয় না ।অন্তত তার দিক থেকে সে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখেনা ।
কিণ্তু দীপার কপালে বিধাতা বেশিদিন সুখ লেখেননি । কালবৈশাখী ঝড় হঠাৎই দীপার সোনার সংসারটাকে ধূলিসাৎ করে দিলো । তার জীবনটাকে ওলটপালট করে দেয় একটি অ্যাকসিডেন্ট এর খবরে ।গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে পুরীর সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাওয়ার বন্দোবস্ত সব পাকা । টিকিট কাটা ,ঘর বুক করা ,ব্যাগ গুছানো সব প্রস্তুত । যেদিন কলেজ ছুটি পরে সেদিনই বাড়ি ফেরার পথে রথীন একক্সিডেন্ট করে । সঙ্গে সঙ্গেই সব শেষ । সারারাত কোন খবর
মেলেনা ! দুশ্চিন্তা আর উত্কণ্ঠা নিয়ে সারারাত কাটে ।সকাল হতেই থানা ,পুলিশ অবশেষে মর্গে দেহ মেলে । মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পরে দীপার । দুদিন বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারেনা । রমেনই তার আদরের ভাইপোকে সামলায় । দু'দিন পর দীপা যখন বিছানা ছেড়ে ওঠে তখন সে অন্য দীপা ! মনের জোর ,আত্মবিশ্বাস তার যেন অনেকটাই বেড়ে গেছে ।
শুরু হয় দীপার জীবনে নূতন করে বাঁচার লড়াই । রথীনের কলেজ থেকে যেটুকু টাকা পেয়েছে আর তার গয়না । একেই সম্বল করে সে এগিয়ে চলে । কারণ তার ক্যাশ কিছু ছিলনা । বহু বছরের পুরান বাড়ি সংস্কার আর ভাই রমেনের কথা ভেবে দোতলাটা করতে যেয়ে সমস্ত জমানো টাকায় শেষ হয়ে গেছিল ।তারপর প্রতিবছর রথীনের ছিল বাইরে বেড়ানোর এক হিড়িক ।
রথীনের অবর্তমানে খুব কষ্ট করে সংসার চালিয়ে সে রমেনকে উকালতি পাশ করায় । গৌতমও যে স্কুলে পড়ত সেখানেই পড়া শুরু করে ।বুদ্ধিমতী দীপা দেওর ও ছেলেকে নিয়ে দোতলায় উঠে যেয়ে নীচুটা ভাড়া দিয়ে দেয় । আশা রমেন যখন অর্থ উপার্জন করবে তখন তাদের আর্থিক কষ্ট দুর হবে ।
মাত্র কয়েক মাস ! রোমেনের পসারটা যখন একটু জমে উঠেছে ,দীপারাও একটু সুখের মুখ দেখেছে ; ঠিক তখনই দীপা একটা মারত্মক ভুল করে বসে । সে নিজে পছন্দ করে রমেনের বৌকে বরণ করে ঘরে তোলে । শুরু হয় দীপার জীবনে কষ্টের নূতন এক অধ্যায় ।
যে রমেন কে সে সন্তান স্নেহে মানুষ করেছে ,রথীনের অবর্তমানে চরম অর্থ কষ্টের মধ্য দিয়ে নিজে না খেয়ে রমেন ও তার সন্তানকে খাইয়েছে সেই রমেনই বিয়ের পর অন্য মানুষ ।বড্ড অচেনা মনেহয় রমেনকে দীপার ।ভগবান তার জীবন থেকে একটু একটু করে সব কেড়ে নিলেও ধর্য্য ও সহিষ্ণুতা যেন দিনকে দিন বাড়িয়েই চলেছেন ।মুখে কুলুপ এঁটে সকল অপবাদ, অপমান সে হজম করতে লাগলো । কিণ্তু যেদিন রমেনের বৌ তাকে চোর অপবাদ দিয়ে অকথ্য ,কূকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে লাগলো রমেনের সামনেই ,রমেন কোন প্রতিবাদ করলো না ; সেদিনই সে সিদ্ধান্ত নেয় এই বাড়িতে সে আর থাকবেনা । এক কাপড়ে দশবছরের ছেলেকে নিয়ে মাত্র কয়েক দিনের জন্য সে তার ভায়ের সংসারে চলে আসে ।
টেলারিং টা দীপা বেশ ভালই জানতো ।কয়েকটা দোকানে ঘুরে সে একটা বড় দোকানে কাটিং ও সেলাই এর কাজ পেয়ে যায় ।কিছু টিউশন ও শুরু করে । বস্তির ভিতরে সামান্য টাকায় একটা ঘর ভাড়া করে সে ছেলেকে নিয়ে সেখানে ওঠে । ছেলেকে পুনরায় স্কুলে ভর্তিও করে দেয় । মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে মা ও ছেলের ছোট্ট সংসারটি সুনিপুণ হাতে গুছিয়ে ফেলে যেখানে অভাব থাকলেও সস্তি ছিলো ।
দিনগুলি বেশ কেটে যাচ্ছিলো । কিণ্তু এ সুখও দীপার কপালে সহ্য হলোনা । দীর্ঘ দিনের অনাহার ,পরিশ্রম ,মানষিক অবসাদে রাতের আঁধারে ঘুমের মধ্যেই সে তার আদরের গৌতমকে ছেড়ে চির বিদায় নিল ।
এত বড় পৃথিবীতে গৌতম সম্পূর্ণ একা হয়ে পরে ।বেড়িয়ে আসতে বাধ্য হয় খোলা আকাশের নীচে ।কচি মনে আত্মীয়দের সম্পর্কে একটা ঘৃনা জমাট বাঁধে ।শেষ পর্যন্ত সে এসে স্টেশনে আশ্রয় নেয় ।এই অল্প বয়সে সে অনেককিছু দেখেছে ও শিখেছে । গুমড়ে গুমড়ে জমাট বাঁধা অভিমানে সে কোন আত্মীয় বাড়িতে আর ফিরে যায়না । স্টেশানে চায়ের দোকানে দোকানে ঘুরে ঘুরে সে কাজের সন্ধান করতে থাকে ।ফর্সা ,মায়াভরা দু'টি চোখ ,কোকড়ানো মাথা ভর্তি চুল -চোখ দুটির মধ্য দিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত চাহুনী ; সহজেই সকলের মায়া কাড়ে । অনেকে অনেক কথায় জিগ্গেস করেন , কিণ্তু সে শুধু মাথা নীচু করেই দাঁড়িয়ে থাকে ।একটা ছোট চা স্টলে সে কাপপ্লেট ধোয়া ,চা জলখাবার এগিয়ে দেওয়ার কাজও পেয়ে যায় । অনভ্যস্ত হাতে কাজ করতে যেয়ে ভুলত্রুটি হলেও তার সুন্দর ব্যবহারের কারণে মালিক তাকে কিছুই বলতে পারেন না বা বলেন না । আর শীত ,ঝড় বৃষ্টিতে স্টেশনের বেঞ্চিতে রাত কাটানো ।
পৃথিবীতে অগনিত মানুষের মধ্যে ভালোর থেকে খারাপ সংখ্যাটাই বেশী । হাতে গোনা ভাল মানুষের সংখ্যা হলেও কিছু তো আছে । হতভাগ্য কিছু মানুষের লাঠি হয়ে তাদের জীবনে উন্নতির সিঁড়ির দোরগোড়ায় পর্যন্ত পৌঁছেও দেন । এই হতভাগ্যদের মধ্যে যাদের বুদ্ধি আছে তারা কিভাবে সিঁড়িগুলো টপকাবে তারা নিজেরাই ঠিক করে নেয় ।
একদিন ঝড় জলের মধ্যে একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর ওই স্টলে চা খেতে আসেন । গৌতম ইন্সপেক্টরকে চা দেয় । বাচ্চাটিকে দেখে তার খুব ভাল লাগে । তিনি বুঝতে পারেন যে কাজ সে করছে এটা করার মত ঘরে তার জম্ম নয় । তিনি গৌতমকে কাছে ডেকে গল্প করতে শুরু করেন ।জানতে চান তার সম্পর্কে সবকিছুই । কিণ্তু গৌতম এই ব্যপারে চুপ করেই থাকে ।শেষে ইন্সপেক্টর তাকে বলেন ,"তুমি যদি আমাকে সব না বলো ,আমি তো পুলিশ আমি সব খুঁজে বের করে নেবো কিণ্তু"। শিশু গৌতম এই কথায় ভয় পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তার জীবনের করুন পরিণতির কথা বলতে থাকে ! বাইরের বৃষ্টির জল আর গৌতমের চোখের জল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । বজ্রপাতের মত গৌতমের দুখের কাহিনী পুলিশ ইন্সপেক্টরের বুকে আঘাত হানে । এক কন্যা সন্তানের পিতার হৃদয়ে ছোট্ট ছেলেটির জন্য পিতৃত্ব মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । তিনি গৌতমকে নিজের বুকে টেনে নিয়ে নিজ হাতে চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলেন ,"আজ থেকে আমি তোর মামা , তুই এখন থেকে আমার কাছেই থাকবি , আবার তোকে নূতন করে পড়াশুনা করতে হবে , তোকে অনেক বড় মানুষ হতে হবে । তোর আত্মীয়স্বজন এমনকি সারা পৃথিবীকে তুই দেখিয়ে দিবি তোর নিজের তৈরী করা পরিচয়ে কেমন মাথা উঁচু করে বেঁচে আছিস । আমি জানি -তুই সেটা পারবি । তোর চোখ সে কথা আমায় জানান দিচ্ছে । শুধু তোর চাই একটা সুযোগ । চল বাবা , তুই আমার সাথে ।
এর পরের ঘটনা ইতিহাস । হৃদয় মুখার্জী গৌতমকে নিয়ে এসে একটা ভাল স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন ।নরম কাদার উপরে ছাপ ফেললে তা যেমন চিরস্থায়ী রূপ ধারণ করে ঠিক তেমনই শিশু গৌতমের মনের উপরও আত্মীয়স্বজন সম্পর্কে একটি বিশাল বিরূপ মনোভাব তৈরী হয় । এই টুকুন বয়সেই সে পৃথিবীর মানুষগুলো সম্পর্কে বিশাল এক সত্যের মুখোমুখি হয়ে তাদের সম্পর্কে ধারণা করতে শিখে গেছে । সে বুঝতে পেরেছে - হৃদয় মুখার্জী যাকে সে মামা বলে ডাকে ,তিনি যে সুযোগ তাকে দিয়েছেন এটাই তার জীবনের শেষ সুযোগ । যেভাবেই হোক তাকে মামার সাহায্যেই তার জীবনের আলোর দিশা খুঁজে পেতে হবে । তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হওয়া । এই বয়সে যেটা স্বাভাবিক খেলাধুলা ,দুষ্টুমী ,হাসিগল্প -সব সবকিছু বিসর্জন দিয়ে সে শুধু বই এই মুখ গুঁজে থাকে ।
সময় এগিয়ে চলে । গৌতমের জীবনেরও চাকা ঘুরতে থাকে । মামা হৃদয় মুখার্জী তার নিজ সন্তানের থেকে তাকে কখনই আলাদা করে দেখেন না । তার বাড়ির লোকজনেরও গৌতম তার সুন্দর ব্যবহার ও মিষ্টি চেহারা দিয়ে সকলের মন জয় করে নিয়েছে । সে বাড়ির সকলের কাছেই ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছে ।
সময়ের সাথে সাথে গৌতম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্টার নম্বর নিয়ে পাশ করে একটা ভাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সুযোগ পায় ।স্কলারশিপ পাওয়ার ফলে সে তার মামা হৃদয় মুখার্জীর কাছ থেকে পড়ার জন্য পুরো টাকা হাত পেতে নিতনা ।এইভাবেই সে বি-টেক্ পাশ করে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে সুচাকুরীও পায় । তার অমায়িক ব্যবহার ও কাজের প্রতি নিষ্ঠা দেখে কোম্পানীই তাদের বিদেশের ওফিসের কাজের অফার তাকে দেয় ।চলে যায় গৌতম UK ; পিছনে ফেলে যায় তার দুঃখে গাথা জীবনের কাহিনী , সাথে করে নিয়ে যায় শুধু দুঃখের স্মৃতিগুলি ;যেগুলি এখনো তার জীবনে দগদগে ঘায়ের মত ।
টাকা,ধনদৌলত ,গাড়ি,বাড়ি -সব আছে আজ গৌতমের জীবনে ।আছে সম্মান আছে তাকে ঘিরে থাকা মানুষগুলির ভালবাসা ।তবুও সে নিঃস্ব !তার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি নিয়ে সে যখন একা একাই পর্যলোচনা করতে বসে তখন তার একমাত্র সম্বল দু'চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে পরা অশ্রু । হাজার চেষ্টা করেও যাকে সে বাঁধ দিতে পারেনা । বাবার ভালবাসা ,মায়ের আদর বুঝতে শেখার আগেই সে সর্বহারা ! গৌতম ভেবে কোন কূল পায়না ,বিধাতা কি অপরাধে তার জীবনের স্বর্ণালী সময়টা কেড়ে নিলেন !পৃথিবীতে শুধুমাত্র কি টাকাটাই সব ? ভালবাসা ,স্নেহ ,শ্রদ্ধা - এ সবের কি কোন মূল্যই নেই ? আজ আমার অনেক টাকা ; কিণ্তু জীবনে সব থেকে যেটা দরকার - নেই মায়ের আদর ,স্নেহ মিশ্রিত শাসন নেই বাবার ভালবাসা !যারা আজ আমায় দেখে সব থেকে খুশী হবেন -তাঁরা আজ কেউ নেই আমার পাশে । টাকায় যদি জীবনের সব সুখ আনে আমি তবে কেন সুখী নই ? এতো ধণ ,সম্পদ ,বিষয় সম্পত্তি না থেকে শুধু যদি ওই মানুষ দু'টি আমার পাশে থাকতো তাহলে আমি হয়তো সুখী মানুষ হতাম । পেলাম জীবনে আমি অনেককিছুই কিণ্তু জীবন থেকে শিশু বয়সেই আমার যা হারিয়ে গেলো তাতো কোনদিনও পূরন হবেনা ! ওই হারানোর কাছে এই পাওয়া যে কিছুই নয় !
নন্দা 28-04-17 9PM.