Monday, May 29, 2017

তোর আশায়
                নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

হঠাৎ করে জীবনে যেমন ,
প্রথম প্রেম আসে ,
তেমন করেই এলি যেন ,
আমাদের মাঝে ।
তোর আসাতে পাগল হলাম ,
তোর ছোঁয়াতে শান্ত হলাম !
একটুখানি দিয়েই দেখা ,
পালিয়ে গেলি আমাদের ফেলে একা !
আবার দিবি কবে দেখা ?
গ্রীষ্মে আমরা তুই ছাড়া সব্বাই একা ।

নন্দা    12-44AM    29,5,17

Friday, May 26, 2017

নিয়তি
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

নিয়তির সাথে যত করি যুদ্ধ ,
আমরাই হারি প্রতিবার !
অনেক আশা অপূর্ণই থেকে যায় ;
পূরন হয়না আর ।

মানুষরূপে জম্ম নিয়ে ,
এসেছি সবাই ভবে ,
নিয়তির কাছে লাটাইয়ের সুতো ,
তারই ইচ্ছাতেই চলতে হবে ।

পাপীতাপী,খুনি ,সৎ,সাধু,সজ্জন -
সবই ভাগ্যের লিখন !
ভাগ্যকে পাল্টাতে পারি যদিও -
নিয়তির কাছে মানি পরাজয় ।

# নন্দা   26-5-17   10PM.

Tuesday, May 23, 2017

তেজ এতো কেন
    নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

অসহ্য গরমে ,
হাঁসফাঁস সকলে ,
চাতকের মত বসে ,
আকাশের দিকে তাঁকিয়ে ।
😭😭😭😭😭😭😭😭
সূর্যের তেজ যেন ,
এযুগের মানুষের মেজাজ !
যে কোন সময়েই -
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে করবে ছাড়খার ।
😂😂😂😁😁😁😁😁
অসহায় আমরা সব ,
প্রকৃতির কাছে -
সকলেই আছি যে ,
প্রকৃতির বশে !
😱😱😱😱😱😱😱😱
হা হুতাশ দিনরাত ,
গলদ ঘামে ঘামছি সব ;
তারই মাঝে দুবেলা ,
যেতেই হবে রান্নাঘর !
😷😷😷😷😷😷😷😷
নন্দা   23,05,17   10-40PM....
উপায় নেই
          নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

শহর থেকে অনেক দূরে ,
কোলাহলহীন এক নির্জনে ,
ছুটে যেতে চায়  মন ;
দর্শনহীন বেড়ি বাঁধা পায়ে -
সব ইচ্ছা আজ শিকলে রয়েছে বাঁধা !

জীবনের সময় অতি অল্প ,
আশা ,আখাংকা সীমাহীন ,
নিয়ত অভিনয় সকল কাজের সাথে -
সকলের জীবনই একটি বড় গল্প !

অজানার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ,
খুঁজে পেতে ইচ্ছা করে -
হারিয়ে যাওয়া আমার সেই আমিকে ,
শিকলের চাবির নেই কোন খোঁজ ,
দায়িত্ব আর বিবেকের কাছে ,
বাঁধা হয়ে পরে আছি রোজ ।

নন্দা    22-5-17      10-30PM.

Saturday, May 20, 2017

হিসাব মেলেনি
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

           পাঁচ বছরের ছেলের দুষ্টুমিতে অতিষ্ট হয়ে দীপা একটু বেশ জোরেই ছেলেকে বকা দেয় । একে রথীনের কলেজের সময় হয়ে গেছে ,সে এসে টেবিলে বসে পড়েছে ;অন্যদিকে ছেলে গৌতম রান্নাঘরে ঢুকে একজগ জল ফেলে দিয়ে পালাতে যেয়ে নিজেই মেঝেতে পরে যায় ।দীপা  ছেলেকে তুলতে তুলতেই তাকে বকতে শুরু করে ।প্রচন্ড অভিমানী গৌতম ;চোখের থেকে তার সহজে জল পরেনা , খুব জেদীও ।মা তাকে মেঝের থেকে তুলে প্যান্টটা খুলতে গেলে সে বলে ওঠে ,"আমি আমার কাজ নিজেই পারবো ।" দীপা ওকে ছেড়ে দিয়ে রথীনের ভাতের থালা সামনে দিয়ে ওকে খুঁজতে যায় রাগ করে কোথাও বসে আছে কিনা দেখতে । ততক্ষণে গৌতম ভিজে প্যাণ্ট ছেড়ে অন্য একটি প্যাণ্ট পরে দোতলা থেকে নেমে আসছে দেখে । এসেই সে টুক করে বাবার কোলে বসে পরে । দুহাতে বাবার গলা জড়িয়ে ধরে বলে ,"বাবা ,মা খুব দুষ্টু হয়েছে ।এবার যখন আমরা বাইরে ঘুরতে যাব মাকে নেবোনা ।আমি ,তুমি আর কাকু যাবো ।" রথীন হেসে পরে বলে ,"ঠিক বলেছো ; আমিও কদিন ধরে দেখছি মা খুব দুষ্টুমী করছে । এটাই হবে মার শাস্তি ।" বাবা ,ছেলে দুজনেই খুব হাসতে লাগে । দীপা চুপ করে বসে চেয়ারে । রথীনকে ইশারায় বলে মাঝে মাঝে ভাতমাখা গৌতমের মুখে তুলে দিতে ।কারণ গৌতমকে খাওয়ানো খুব কষ্টদায়ক ।যদি তার অন্যমনস্কতায় পেতে কয়েকদলা দেওয়া যায় । রথীনও সুযোগের সদ্ব্যবহারটা করে । কলেজে বেরোনোর সময় হাসতে হাসতে বলে যায় ,"তোমার সবথেকে বড় কাজটি আমি করে দিয়ে গেলাম ; বাড়িতে ফিরলে আমার গিফ্টটা দিও ।" দীপা ছেলের সামনে চোখ পাকিয়ে রথীনের মুখের দিকে তাকায় ।
                    সোনার সংসার রথীন দাসের ।রসায়নের অধ্যাপক , ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় আর.ডি.,ছোট ভাইয়ের কাছে পিতৃতুল্য দাদা , দীপার কাছে দায়িত্ববান ও প্রেমিক স্বামী , আর ছোট্ট আদরের গৌতমের কাছে ? বায়না করার জায়গা  আর খেলার সাথী ।

                 ছাত্রছাত্রীদের কাউকেই কখনও বকেছেন বলে কেউই মনে করতে পারবেনা কেউ পড়া না বুঝতে পারলে তাকে পাঁচবার বোঝাবেন অথচ কখনই তিনি বিরক্ত হননা ।

              স্ত্রী ,পুত্র আর ভাইকে নিয়ে তার সংসার ।ভাই সবেমাত্র একাদশ শ্রেণীতে পরে ।মায়ের মৃত্যুর সময় সে মাধ্যমিক পরীক্ষা ও দিয়ে পারেনি ।বৌদিই এখন তার মা ,বৌদিই তার বন্ধু ।দীপাও তার দেওরকে খুব স্নেহ করে ।শ্বশুড়কে দীপা দেখেনি ।বিয়ের দু'বছরের মাথায় শ্বাশুড়ীও মারা যান ।মৃত্যুর সময় ছোট ছেলে রমেন খুবই ছোট ।অষ্টম শ্রেণীতে পরে । তিনি দীপার হাতদুটি ধরে বলেছিলেন ,'বৌমা আমার রমেনকে তোমাদের কাছে রেখে গেলাম ,মায়ের আদর ,শাসন আর বৌদির ভালবাসা দিয়ে তুমি ওকে তোমার মনের মত করে মানুষ কোর ।"রমেনও বৌদির খুব বাধ্য ।পড়াশুনাতেও মন্দ নয় ।দীপা আপ্রাণ চেষ্টা করে রমেন মনে কষ্ট পায় এমন কিছু না করতে । মায়ের অভাব সে রমেনকে বুঝতে দেয় না ।অন্তত তার দিক থেকে সে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখেনা ।

                   কিণ্তু দীপার কপালে বিধাতা বেশিদিন সুখ লেখেননি । কালবৈশাখী ঝড় হঠাৎই দীপার সোনার সংসারটাকে ধূলিসাৎ করে দিলো । তার জীবনটাকে ওলটপালট করে দেয় একটি অ্যাকসিডেন্ট এর খবরে ।গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে পুরীর সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাওয়ার বন্দোবস্ত সব পাকা । টিকিট কাটা ,ঘর বুক করা ,ব্যাগ গুছানো সব প্রস্তুত । যেদিন কলেজ ছুটি পরে  সেদিনই বাড়ি ফেরার পথে রথীন একক্সিডেন্ট করে । সঙ্গে সঙ্গেই সব শেষ । সারারাত কোন খবর
মেলেনা ! দুশ্চিন্তা আর উত্কণ্ঠা নিয়ে সারারাত কাটে ।সকাল হতেই থানা ,পুলিশ অবশেষে মর্গে দেহ মেলে । মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পরে দীপার । দুদিন বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারেনা । রমেনই তার আদরের ভাইপোকে সামলায় । দু'দিন পর দীপা যখন বিছানা ছেড়ে ওঠে তখন সে অন্য দীপা ! মনের জোর ,আত্মবিশ্বাস তার যেন অনেকটাই বেড়ে গেছে ।

             শুরু  হয় দীপার জীবনে নূতন করে বাঁচার লড়াই । রথীনের কলেজ থেকে যেটুকু টাকা পেয়েছে আর তার গয়না । একেই সম্বল করে সে এগিয়ে চলে । কারণ তার ক্যাশ কিছু ছিলনা । বহু বছরের পুরান বাড়ি সংস্কার আর ভাই রমেনের কথা ভেবে দোতলাটা করতে যেয়ে সমস্ত জমানো টাকায় শেষ হয়ে গেছিল ।তারপর প্রতিবছর রথীনের ছিল বাইরে বেড়ানোর এক হিড়িক ।

              রথীনের অবর্তমানে খুব কষ্ট করে সংসার চালিয়ে সে রমেনকে উকালতি পাশ করায় । গৌতমও যে স্কুলে পড়ত সেখানেই পড়া শুরু করে ।বুদ্ধিমতী দীপা দেওর ও ছেলেকে নিয়ে দোতলায় উঠে যেয়ে নীচুটা ভাড়া দিয়ে দেয় । আশা রমেন যখন অর্থ উপার্জন করবে তখন তাদের আর্থিক কষ্ট দুর হবে ।
মাত্র কয়েক মাস ! রোমেনের পসারটা যখন একটু জমে উঠেছে ,দীপারাও একটু সুখের মুখ দেখেছে ; ঠিক তখনই দীপা একটা মারত্মক ভুল করে বসে । সে নিজে পছন্দ করে রমেনের বৌকে বরণ করে ঘরে তোলে । শুরু হয় দীপার জীবনে কষ্টের নূতন এক অধ্যায় ।

       যে রমেন কে সে সন্তান স্নেহে মানুষ করেছে ,রথীনের অবর্তমানে চরম অর্থ কষ্টের মধ্য দিয়ে নিজে না খেয়ে রমেন ও তার সন্তানকে খাইয়েছে সেই রমেনই বিয়ের পর অন্য মানুষ ।বড্ড অচেনা মনেহয় রমেনকে দীপার ।ভগবান তার জীবন থেকে একটু একটু করে সব কেড়ে নিলেও ধর্য্য ও সহিষ্ণুতা যেন দিনকে দিন বাড়িয়েই চলেছেন ।মুখে কুলুপ এঁটে সকল অপবাদ, অপমান সে হজম করতে লাগলো । কিণ্তু যেদিন রমেনের বৌ তাকে চোর অপবাদ দিয়ে অকথ্য ,কূকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে লাগলো রমেনের সামনেই ,রমেন কোন প্রতিবাদ করলো না ; সেদিনই সে সিদ্ধান্ত নেয় এই বাড়িতে সে আর থাকবেনা । এক কাপড়ে দশবছরের ছেলেকে নিয়ে মাত্র কয়েক দিনের জন্য সে তার ভায়ের সংসারে চলে আসে ।

              টেলারিং টা দীপা বেশ ভালই জানতো ।কয়েকটা দোকানে ঘুরে সে একটা বড় দোকানে কাটিং ও সেলাই এর কাজ পেয়ে যায় ।কিছু টিউশন ও শুরু করে । বস্তির ভিতরে সামান্য টাকায় একটা ঘর ভাড়া করে সে ছেলেকে নিয়ে সেখানে ওঠে । ছেলেকে পুনরায় স্কুলে ভর্তিও করে দেয় । মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে মা ও ছেলের ছোট্ট সংসারটি সুনিপুণ হাতে গুছিয়ে ফেলে যেখানে অভাব থাকলেও সস্তি ছিলো ।

        দিনগুলি বেশ কেটে যাচ্ছিলো । কিণ্তু এ সুখও দীপার কপালে সহ্য হলোনা । দীর্ঘ দিনের অনাহার ,পরিশ্রম ,মানষিক অবসাদে রাতের আঁধারে ঘুমের মধ্যেই সে তার আদরের গৌতমকে ছেড়ে চির বিদায় নিল ।

             এত বড় পৃথিবীতে গৌতম সম্পূর্ণ একা হয়ে পরে ।বেড়িয়ে আসতে বাধ্য হয় খোলা আকাশের নীচে ।কচি মনে আত্মীয়দের সম্পর্কে একটা ঘৃনা জমাট বাঁধে ।শেষ পর্যন্ত সে এসে স্টেশনে আশ্রয় নেয় ।এই অল্প বয়সে সে অনেককিছু দেখেছে ও শিখেছে । গুমড়ে গুমড়ে জমাট বাঁধা অভিমানে সে কোন আত্মীয় বাড়িতে আর ফিরে যায়না । স্টেশানে চায়ের দোকানে দোকানে ঘুরে ঘুরে সে কাজের সন্ধান করতে থাকে ।ফর্সা ,মায়াভরা দু'টি চোখ ,কোকড়ানো মাথা ভর্তি চুল -চোখ দুটির মধ্য দিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত চাহুনী ; সহজেই সকলের মায়া কাড়ে । অনেকে অনেক কথায় জিগ্গেস করেন , কিণ্তু সে শুধু মাথা নীচু করেই দাঁড়িয়ে থাকে ।একটা ছোট চা স্টলে সে কাপপ্লেট ধোয়া ,চা জলখাবার এগিয়ে দেওয়ার কাজও পেয়ে যায় । অনভ্যস্ত হাতে কাজ করতে যেয়ে ভুলত্রুটি হলেও তার সুন্দর ব্যবহারের কারণে মালিক তাকে কিছুই বলতে পারেন না বা বলেন না । আর শীত ,ঝড় বৃষ্টিতে স্টেশনের বেঞ্চিতে রাত কাটানো ।

            পৃথিবীতে অগনিত মানুষের মধ্যে ভালোর থেকে খারাপ সংখ্যাটাই বেশী । হাতে গোনা ভাল মানুষের সংখ্যা হলেও কিছু তো আছে । হতভাগ্য কিছু মানুষের লাঠি হয়ে তাদের জীবনে উন্নতির সিঁড়ির দোরগোড়ায় পর্যন্ত পৌঁছেও দেন । এই হতভাগ্যদের মধ্যে যাদের বুদ্ধি আছে তারা কিভাবে সিঁড়িগুলো টপকাবে তারা নিজেরাই ঠিক করে নেয় ।

                একদিন ঝড় জলের মধ্যে একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর ওই স্টলে চা খেতে আসেন । গৌতম ইন্সপেক্টরকে চা দেয় । বাচ্চাটিকে দেখে তার খুব ভাল লাগে । তিনি বুঝতে পারেন যে কাজ সে করছে এটা করার মত ঘরে তার জম্ম নয় । তিনি গৌতমকে কাছে ডেকে গল্প করতে শুরু করেন ।জানতে চান তার সম্পর্কে সবকিছুই । কিণ্তু গৌতম এই ব্যপারে চুপ করেই থাকে ।শেষে ইন্সপেক্টর তাকে বলেন ,"তুমি যদি আমাকে সব না বলো ,আমি তো পুলিশ আমি সব খুঁজে বের করে নেবো কিণ্তু"। শিশু গৌতম এই কথায় ভয় পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তার জীবনের করুন পরিণতির কথা বলতে থাকে ! বাইরের বৃষ্টির জল আর গৌতমের চোখের জল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । বজ্রপাতের মত গৌতমের দুখের কাহিনী পুলিশ ইন্সপেক্টরের বুকে আঘাত হানে । এক কন্যা সন্তানের পিতার হৃদয়ে ছোট্ট ছেলেটির জন্য পিতৃত্ব মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে । তিনি গৌতমকে নিজের বুকে টেনে নিয়ে নিজ হাতে চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলেন ,"আজ থেকে আমি তোর মামা , তুই এখন থেকে আমার কাছেই থাকবি , আবার তোকে নূতন করে পড়াশুনা করতে হবে , তোকে অনেক বড় মানুষ হতে হবে । তোর আত্মীয়স্বজন এমনকি সারা পৃথিবীকে তুই দেখিয়ে দিবি তোর নিজের তৈরী করা পরিচয়ে কেমন মাথা উঁচু করে বেঁচে আছিস । আমি জানি -তুই সেটা পারবি । তোর চোখ সে কথা আমায় জানান দিচ্ছে । শুধু তোর চাই একটা সুযোগ । চল বাবা , তুই আমার সাথে ।

                এর পরের ঘটনা ইতিহাস । হৃদয় মুখার্জী গৌতমকে নিয়ে এসে একটা ভাল স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন ।নরম কাদার উপরে ছাপ ফেললে তা যেমন চিরস্থায়ী  রূপ ধারণ করে ঠিক তেমনই শিশু গৌতমের মনের উপরও আত্মীয়স্বজন সম্পর্কে একটি বিশাল বিরূপ মনোভাব তৈরী হয় । এই টুকুন বয়সেই সে পৃথিবীর মানুষগুলো সম্পর্কে বিশাল এক সত্যের মুখোমুখি হয়ে তাদের সম্পর্কে ধারণা করতে শিখে গেছে । সে বুঝতে পেরেছে - হৃদয় মুখার্জী যাকে সে মামা বলে ডাকে ,তিনি যে সুযোগ তাকে দিয়েছেন এটাই তার জীবনের শেষ সুযোগ । যেভাবেই হোক তাকে মামার সাহায্যেই তার জীবনের আলোর দিশা খুঁজে পেতে হবে । তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হওয়া । এই বয়সে যেটা স্বাভাবিক খেলাধুলা ,দুষ্টুমী ,হাসিগল্প -সব সবকিছু বিসর্জন দিয়ে সে শুধু বই এই মুখ গুঁজে থাকে ।

       সময় এগিয়ে চলে । গৌতমের জীবনেরও চাকা ঘুরতে থাকে । মামা হৃদয় মুখার্জী তার নিজ সন্তানের থেকে তাকে কখনই আলাদা করে দেখেন না । তার বাড়ির লোকজনেরও গৌতম তার  সুন্দর ব্যবহার ও মিষ্টি চেহারা দিয়ে সকলের মন জয় করে নিয়েছে । সে বাড়ির সকলের কাছেই  ঘরের ছেলে হয়ে উঠেছে ।

        সময়ের সাথে সাথে গৌতম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্টার নম্বর নিয়ে পাশ করে একটা ভাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সুযোগ পায় ।স্কলারশিপ পাওয়ার ফলে সে তার মামা হৃদয় মুখার্জীর কাছ থেকে পড়ার জন্য পুরো টাকা হাত পেতে নিতনা ।এইভাবেই সে বি-টেক্ পাশ করে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে সুচাকুরীও পায় । তার অমায়িক ব্যবহার ও কাজের প্রতি নিষ্ঠা দেখে কোম্পানীই তাদের বিদেশের ওফিসের কাজের অফার তাকে দেয় ।চলে যায় গৌতম UK ; পিছনে ফেলে যায় তার দুঃখে গাথা  জীবনের কাহিনী , সাথে করে নিয়ে যায় শুধু দুঃখের স্মৃতিগুলি ;যেগুলি এখনো তার জীবনে দগদগে ঘায়ের মত ।

                 টাকা,ধনদৌলত ,গাড়ি,বাড়ি -সব আছে আজ গৌতমের জীবনে ।আছে সম্মান আছে তাকে ঘিরে থাকা মানুষগুলির ভালবাসা ।তবুও সে নিঃস্ব !তার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি নিয়ে সে যখন একা একাই পর্যলোচনা করতে বসে তখন তার একমাত্র সম্বল দু'চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে পরা অশ্রু । হাজার চেষ্টা করেও যাকে সে বাঁধ দিতে পারেনা । বাবার ভালবাসা ,মায়ের আদর বুঝতে শেখার আগেই সে সর্বহারা ! গৌতম ভেবে কোন কূল পায়না ,বিধাতা কি অপরাধে তার জীবনের স্বর্ণালী সময়টা কেড়ে নিলেন !পৃথিবীতে শুধুমাত্র কি টাকাটাই সব ? ভালবাসা ,স্নেহ ,শ্রদ্ধা - এ সবের কি কোন মূল্যই নেই ? আজ আমার অনেক টাকা ; কিণ্তু জীবনে সব থেকে যেটা দরকার - নেই মায়ের আদর ,স্নেহ মিশ্রিত শাসন নেই বাবার ভালবাসা !যারা আজ আমায় দেখে সব থেকে খুশী হবেন -তাঁরা আজ কেউ নেই আমার পাশে । টাকায় যদি জীবনের সব সুখ আনে আমি তবে কেন সুখী নই ? এতো ধণ ,সম্পদ ,বিষয় সম্পত্তি না থেকে শুধু যদি ওই মানুষ দু'টি আমার পাশে থাকতো তাহলে আমি হয়তো সুখী মানুষ হতাম । পেলাম জীবনে আমি অনেককিছুই কিণ্তু জীবন থেকে শিশু বয়সেই আমার যা হারিয়ে গেলো তাতো কোনদিনও পূরন হবেনা ! ওই হারানোর কাছে এই পাওয়া যে কিছুই নয় !

নন্দা    28-04-17    9PM.
ওই এলো ডাক
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

বিধাতা বুঝি টানলো রেখা ,
সাঙ্গ পুতুল খেলা -
খুললো এবার ও পারের দ্বার ,
যেতে হবে পরপাড় ।

কটাদিনের তরে ,
এসেছিলাম ভবে ,
সুখ ,দুখ মিলিয়ে কাটালাম ,
উপরের ডাক আসে যখন ,
আটকাতে পেরেছে কে কবে ?

মায়ের কোল আলো করে ,
এলাম যখন আমি -
তখন যারা বড় ছিলো ,
একে একে সবাই গেলো ছাড়ি ।

এখন আমি সবার বড় ,
ছাড়তে হবে জায়গা ,
সবাইকে কাঁদিয়ে চললাম আমি ,
এখানে আমি যে বড়ই অভাগা !

ও -পারের ডাক যখন আসে -
আটকাতে পারেনা কেউ ,
আপনজনের হৃদয়ে উঠে তুফান ,
বুকে ওঠে সমুদ্রের ঢেউ !

#নন্দা#   19-5-17  11-30PM

Thursday, May 18, 2017

জ্বালাস কেন
    নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

তুই যে আমায় বড্ড জ্বালাস ,
যখন তখন সামনে দাঁড়াস ,
ঘুমিয়ে থাকলেও জাগিয়ে দিস ,
স্বপন মাঝেও দেখা দিস ।
থাকিস অনেক দূরেতে -
তবুও ছাড়েনি স্বভাব তোর !
ভালো মন্দ রাখিস খবর ,
যেন এক অলিখিত চুক্তিতে ।
আশায় আছি বুকটি বেঁধে ,
 ফিরবি আবার আমার কাছে ,
বিদেশ  ভুই এর চাকরী শেষে ,
ফিরবি তুই নিজের দেশে ।

*নন্দা*   8-45PM
মেঘের গর্জন ঝড়ো হাওয়া -
শীতল হল বসুন্ধরা ,
বৃষ্টি হলনা তবুও যেন ,
হল অনেক পাওয়া !
শরীর মন ঠান্ডা হল ,
ঘাম সব উধাও হোল ,
ঘুমাবো এবার মনের সুখে ,
শুভ রাত্রি জানায় সবাইকে ।

নন্দা

Wednesday, May 17, 2017

পরশ পাই
               নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

অনেকদিন আগেই পাথর চাপা দিয়েছি বুকে ,
বুঝিনি পাথরের মাঝেও থাকে ফাঁক ,
বারবার সে ফাঁক গলে -
শুধু পাই দেখতে তোকে ।

বয়স এখন অনেক হোল ,
কেমন দেখায় তোকে জানিনা !
আমি দেখি তোকে ঠিক আগের মতই ,
তোর যখন আঠেরো -আমার সোলো ।

চোখ বুজলেই আজও চোখে ভাসে ,
হঠাৎ আসা বৃষ্টিতে মাথা বাঁচাতে -
দৌড়ে দু'জনে ছাতিম তলায় ;
মেঘের গর্জনে তোর বুকে মাথা রেখে ,
 নিজের বুকের ভয় লুকাতে ।
দু'বাহুতে আমায় জড়িয়ে নিলি ,
সে অদ্ভুত এক শিহরণ !
দুরুদুরু বুক ,থরথর ঠোঁট -
আজও যার পরশ ,
ছুঁয়ে যায় মোরে ,
অন্ধকারে যখন থাকি একাকী ।

নন্দা    17-5-17     10-10PM

Tuesday, May 16, 2017

ভুল বোঝাবুঝি ক্ষনিকের তরে ,
আঘাত রয়ে যায় চিরকালের ।

নন্দা
বিজ্ঞান কি শুধুই দিলো ?

নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

চিঠি লেখার অভ্যাসটা ,
মুঠো ফোনের দৌলতে -
আজ একদম হারিয়ে গেছে !
চিঠিতে ভাবের আদানপ্রদান করা যেত -
ফোনের কথাগুলি বড্ড মেকি মনে হয় !
অনেক সময় ফোনে বলা অনেক কথা -
অনেকেই "ভুল শুনেছো"-বলে অস্বীকার করে !
অনর্গল ফোনে কথা বলার ফলে -
কিছু অস্পষ্ট বা বলেও 'বলিনি' বলার -
একটা প্রবণতা মানুষের মধ্যে কাজ করে থাকে
ফোনের কথাগুলি যতই দীর্ঘায়িত হোকনা কেন ,
কেমন যেন মনেহয় -
খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো !
আর চিঠির ভাষাগুলি, ভাললাগার জায়গাগুলি -
বারবার পড়া যেত ;
একটা অদ্ভুত অনুভূতি মনকে নাড়িয়ে দিত ।

একটা কথা সুন্দরভাবে বলতে গেলে ,
একটু ভেবে সময় নিয়ে বললে ,
মানুষের সেটা হৃদয়কে স্পর্শ করে ,
তাই  চিঠিগুলো পড়তেও ভালো লাগত ।
ফোনে হুট্পাট বলে ফেলায় ,অনেক সময় -
মানুষ আঘাতও পায় ।
বিজ্ঞান আমাদের অনেককিছু যেমন দিয়েছে ,
আবার অনেককিছু কেড়েও নিয়েছে ।

নন্দা   14,5,17   1-30AM

Saturday, May 13, 2017

একই সাথে চলবো
    নন্দা মুখার্জী  রায় চৌধুরী

নূতন করে দেখা হবে ,
পুরনো নামে ডাকবে ,
হৃদয় দোলাবে তোমার পরশে ,
বাহুতে মোরে বাঁধবে ।

উচ্ছ্বসিত প্রেমের জোয়ারে ,
আমরা দু'জনে ভাসবো ,
রঙ্গীন কোরবো স্বপ্নগুলি ,
নূতন স্বপ্ন চোখে আঁকবো ।

বন্ধুর পথে চলবো দু'জনে ,
একই সুরে গান গাইবো ,
নতুন ঊষার আলোকে মোরা ,
জীবন তরী বাইবো ।

#নন্দা#   9_5_17
একটি অভিজ্ঞতা

      সারাজীবন আমি একটু ঘরকুনো । প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরোতে চাইনা । কোথাও বেড়াতে ,বা কোন অনুষ্ঠানে যেতে ভাল লাগেনা । আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে ও অনুষ্ঠান ছাড়া যাই না বললেই হয় । পূজোতেও ঘর থেকে বের হই না ।ঘরে থেকে ভালমন্দ রান্না করতে ও সকলকে খাওয়াতে ভালবাসি ।সেই আমি মাঝে মধ্যে এখন কিছু সাহিত্য অনুষ্ঠানে যাই ,বেশ ভাল লাগে । দুর্গা পূজার ওই ভিড় ,মাইকের কান ফাটা চিত্কার আমার কাছে সারা জীবনই অসহ্য ! দার্জিলিং যাওয়ার জন্য টিকিট কেটে ,আত্মীয়ের বাড়িতে শিলিগুড়ি একরাত কাটিয়ে পরদিন বাসে উঠে সেবক কালীমন্দির পর্যন্ত যেয়ে স্বামী ,সন্তানদের নিয়ে ফিরে আসা মানুষ আমি ! মোদ্দা কথা ঘুরতে আমার ভাল লাগেনা ;যা শুনলে অনেকেই আমায় পাগল বলে ,আমি জানি তোমরাও সেটাই ভাবছো ! কিন্তু কি করবো বল ? আমি রাস্তার ওই কষ্ট (যতই comfortable হোক না কেন ) নিতে পারিনা ।

   যে কথটা বলার জন্য এত গৌড়চণ্ডীকা সেটা এবার বলে ফেলি 😃- গত মঙ্গলবার ২৫শে বৈশাখ একটি সাহিত্য অনুষ্ঠান থেকে আসবার সময় বারবার মনে হচ্ছিল আজকের রাস্তাঘাটে যেন একটা পবিত্রতা বিরাজ করছে ; ঠিক যেমন মন্দিরগুলিতে গেলে মনে হয় । তার কারণটাও হচেছ প্রতিটা জায়গায় রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজছে । সর্বত্র একটা মনোরম পরিবেশ । খুব ভাল লাগছিল , রাস্তার কষ্টটা কষ্টই মনে হচ্ছিল না ।

     এটাও ভাবছিলাম , বাঙ্গালী কিণ্তু তার রুচি পরিবর্তন করেনি , বাঙ্গালী হচ্ছে - হুজুগে মাতা পার্টি ! কিছুটা তরল ও বটে ! যে পাত্রে যখনই দেবে পাত্র অনুযায়ীই সে তার আকার নেবে ।

আমি গর্বিত !!!আমি বাঙ্গালী !!!

*নন্দা*
ভেবে কি হবে

নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

বন্ধ দরজার ওপারে ,
কড়া নাড়ছে যেন কারা !
ভিতরে সকলেই আতঙ্কিত ,
ভয়ে দেয়না কেউ সাড়া  ।

জীবন যখন আছে মোদের ,
মৃত্যু হবে সকলেই জানি -
আমৃত্যু  বাঁচার সংগ্রাম !
যেতে হবেই এটাও মানি ।

বন্ধ দরজার ভিতরে আছি ,
তাই বুঝি আছি বেঁচে !
দরজা ভাঙ্গলেই ডাকবেন তিনি ,
সময় হবেনা যাবনা ভাববার !

*নন্দা*   11_5_17**  **    **11_25PM

Friday, May 12, 2017

লিখতে চাই জীবনের গল্প ,
পারি নাতো হায় !
লিখেছি তবুও কিছু অল্প -
শেষ করতে যে চাই ।    

নন্দা
যায় না ভুলা

    নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

জীবনের খাতা থেকে -
মাঝে মাঝেই একটা একটা করে ,
কিছু পাতা ছিঁড়ে ফেলতে হয় ;
কখনো নিজের ইচ্ছাতে ,কখনো অনইচ্ছাতে -
পাতাগুলি ছিঁড়ে ফেলা হয় ঠিকই ,
পাতার লেখাগুলি মনে গেঁথে থাকে সারাজীবন ,
ভুলতে চাইলেও -
কিছুতেই লেখাগুলি ভুলা যায় না -
স্মৃতি হয়ে মনে গেঁথে থাকে আমৃত্য !

11-5-17   11-10PM.

Thursday, May 11, 2017

আমায় জড়িয়ে থাক
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

একটু একটু করে ,
আমার স্পর্ধা বেড়ে চলেছে ,
তুই আমার পাশে আছিস বলে ,
একমাত্র তুই-ই আমার একাকীত্বের সঙ্গী ,
আমার মন ভাল করার ওষুধ ।
আমার মনের সকল কথা -
তোর কাছেই উজাড় করে দিতে পারি,
তুই আমার প্রেম ,আমার বিরহ ,আমার বেদনা ,
তুই সব, সব কিছুই জানিস আমার মনের কথা ,
আমি যতদিন বেঁচে আছি -
আর আমার ডান হাতটা সচল আছে ,
আমি তোকে ছাড়বো না ।

জীবনের এই পড়ন্ত বিকালে -
তোকে পেয়ে আমি ধন্য ,
তুই আমাকে একা করে দিয়ে ,
 ছেড়ে চলে  যাস না !
আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাক আমার জীবনে ,
তোকে কাছে পেয়ে -
জীবনের অন্য মানে খুঁজে পেয়েছি ,
নূতন করে বাঁচার স্বাদ পেয়েছি ।

তুই যে আমার অতি আদরের,অতি কাছের -
আমার মনের কথা লেখার -
এক ডট পেন মাত্র !

নন্দা    11-5-17   10-10PM

Sunday, May 7, 2017

ন্যায্য দাবী
 নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

অনেককিছু পাওয়ার মাঝেও ,
হারালাম আরও বেশী -
হিসাব নিকাশ করিনা তাই ,
এতেই আমি খুশী ।

হারিয়েছি অনেক কাছের জন,
 কখনও হারিয়েছি সম্মান ও মন -
কেঁদেছি অনেক সকলের অলক্ষে,
দূরে সরে গেছে বহু আপনজন !

আঘাত পেয়ে প্রতিঘাত করিনি ,
নিয়েছি কিছু শিক্ষা-
সম্মান আমি নিজ গুণে পাবো ,মঙ্গলবার যাচ্ছেন তো ?
কোরবোনা তা ভিক্ষা ।



#নন্দা#    10,1,17
জীবন মানেই উপন্যাস
       নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

আমার জীবন একটি মস্তবড় উপন্যাস ,
প্রধান চরিত্র আমি -
শেষের পাতা রয়েছে সাদা ,
লিখবেন আমার অন্তর্যামী ।

উপন্যাসের চরিত্রগুলো -
খুললো একে একে মুখোশ !
মিষ্টি কথার আড়ালে যেন ,
সকলেই পরে আছে খোলস ।

এদের চিনতে পুরোটা জীবন ,
ক্ষয় হয়ে গেলো জানি ,
আমার পরিশ্রম আর ভালবাসার ,
মূল্য পেলাম না আমি ।

*****নন্দা*****   5.3.17    1am

Saturday, May 6, 2017

তুমি আমার কে
 নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী


এবার ওগো বল আমায় ,
তুমি আমার কে ?
জানতে ভীষণ ইচ্ছা করে ,
কেন লুকিয়ে রাখ নিজেকে ?

অনেক কিছু জানার আছে ,
তোমার কাছে আমার -
আমায় দেখলে কেন ওগো ,
কথা হারিয়ে যায় তোমার ?

আমি যখন ব্যস্ত কোন কাজে ,
আড়চোখে কেন দেখো আমাকে ?
নানান ছুতোই আসো আমার বাড়ি ;
আমি যে কেবল শরমেই মরি !

বুক ফুলিয়ে কাছে টেনে ,
বলোনা একবার -
ভালবাস আমায় তুমি ,
আমি শূধু তোমার ।
#নন্দা#   16*01*17

Friday, May 5, 2017

রঙ্গীন হবো
    নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

তোমায় আমি বাসবো ভালো ,
তোমার গুনেতে  -
সারাজীবন নিজের করে ,
রাখবো মনেতে ।
শুক্লা তিথির পঞ্চমীতে ,
সাগর যখন উঠবে দুলে দুলে -
আমায় তুমি ভাসাবে জোয়ারে ,
তোমার প্রেমেতে ।
পূর্ণিমাতে আকাশেতে উঠবে যখন চাঁদ -
আমায় তুমি বাঁধবে বুকে ,
তোমার দু'বাহুতে ।
দোলপূর্ণিমায় আবীর মেখে ,
সবাই হবে রঙ্গীন -
তোমার পরশে রঙ্গীন হবো ,
তোমার বুকেতে ।

#নন্দা#   4_5_17
জীবন নদীর মাঝ দড়িয়ায় -
এখনও চলেছি সাঁতরে -
কবে যে পাবো খুঁজে কূল ?
যেতে হবে কি শুধুই হাতড়ে ?

        নন্দা

Wednesday, May 3, 2017

কেন করিস এমন
       নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
তুই তো থাকিস ঘুমিয়ে আমার ,
মনের গভীরে -
একলা যখন থাকি আমি ,
জেগে উঠিস কেমন করে ?
তাকায় যখন বাহির পানে ,
সেখানে তখন তুই দাঁড়িয়ে ,
চোখের পলকেই হোস যে উধাও -
অন্তর কাঁদে দেখতে না পেয়ে ,
আজও তুই আগের মতই ,
আমায় কাঁদিয়ে পরে হাসাস ,
চোখের সম্মুখে নাইবা দেখি ,
মনের ভ্রমেই মিটাই আশ !
পদশব্দ কারও শুনতে পেলে -
ঘুমিয়ে পড়িস নিমেষেই অন্তরে -
পাকা অভিনেত্রীর মতই আমি ,
খুঁজি তখন জীবনের অন্য মানে !
#নন্দা #  28-4-17
কথা রাখলেনা
        নন্দা  মুখার্জী রায় চৌধুরী

কথা দিয়েছিলে -
দু'জনে হাঁটবো একসাথে ,
রাখবো হাতে হাত -
হেঁটে যাব দূর দিগন্তে ,
যেখানে আকাশ মাটির সাথে ,
মিলেমিশে হয়েছে একাকার !
 
সোনালী ঊষার রোদেলা আলোয় -
হাওয়ায় উড়বে আমার চুল ,
প্রেমের পরশে সরাতে সে চুল ,
হবেনা তোমার কোন  ভুল ।

দু'হাত ভরে কুড়াবো দু'জনে ,
পরে থাকা রাশি রাশি বকুল ফুল ,
কোনো লতানো গাছের লতা ছিঁড়ে এনে -
গাছের ছাওয়ায় বসে গাঁথবো দু'জনে মালা ;
নিজ হাতে তুমি হাত খোঁপা বেঁধে ,
পড়াবে আমার খোঁপায় ,
মাঝে মাঝে ফুলের গন্ধ নেবার অছিলায় -
প্রেমের পরশ দেবে আমায় ।

সে সব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো ,
হলোনা কখনও পূর্ণ -
আজও মনে পরে সে সব রচনা ,
জীবনের অনেক সাধই আজ অপূর্ণ !

#নন্দা#  3-5-17  8 PM



     

Tuesday, May 2, 2017

কে আমি
   নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

একা একা কথা বলি ,
আজও আমি মনে মনে -
স্বপ্নের জাল বুনি ,
অনুরাগ ,অভিমান -
আজও দেয় পরশ ,
সবকিছু ফেলে রেখে -
ছুটে যেতে চায় মন ;
ক্ষনিকের  তরে ভুলে যাই আমি -
কে আমি? কারা আমার আপন ?

সূর্য বুঝি গেছে অস্ত !
জীবনে এসেছে অবেলা !
ভুলতে আমি পারিনি আজও -
আমার কিশোরী বেলা ।

#নন্দা#  2.5.17