Tuesday, August 30, 2016

"কাঙ্গাল"  ( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
+++++++++++++++++
তোকে ভালোবেসে আমার শেষ সম্বলটুকু ,
তোর হাতে তুলে দিয়েছিলাম ;
বিধবা মা অতি কষ্ট করে -
সেগুলো আমার বিয়ের জন্য গড়িয়েছিলেন |
সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে -
তোর পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো ;
আমি ভেবেছিলাম তুই চাকরী পেলেই তো -
আবার ওগুলো গড়ে নিতে পারবো ,
তোকে নিজের করে পাবো ,সুখী জীবন গড়বো ;
তোকে বিশ্বাস করেছিলাম -
কিন্তু চিনতে পেরেছিলাম না |
তোর পড়াশুনা শেষ হোলো ,
তুই ভালো চাকরীও পেলি ,
আমি কিন্তু তোকে পেলাম না |
ভালোবেসে বিয়ে করলি -
বড়লোকের একমাত্র মেয়েকে ,
আমার সাথে কোনো যোগাযোগ না রেখে !!
তবে আমায় কেনো বলেছিলি ?
 "ভালোবাসি তোকে -"
       আজ মনে হয় -
ভালোবাসতে তুই জানিস না ,
ভালোবাসার মানে তুই বুঝিস না ,
তুই আসলে টাকার কাঙ্গাল ,
তোর কাছে ভালোবাসা নয় -
        টাকাটাই সব |
+++++++++++++++++++
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী  28.8.16 11PM.

Friday, August 26, 2016

*শ্মশান* ( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
~~~~~~~~~~~~~~~~~~
    
    আমি খুব শান্ত ,              
   কোলাহলহীন নিস্তব্ধ ;
   শুধু ব্যথার স্বাক্ষী আমি ,
(তবুও) আমার ভূমি শুধুই পবিত্র |
কেউ সাধ কোরে আসেনা আমার কাছে ,
দুঃখ ,কষ্ট ,কত বেদনার স্বাক্ষী আমি ,
কত হাহাকার ,শত  কাঁন্নার মাঝেও -
আমি নীরব ,নির্বাক এক ভূমি |
   সময়ের আগে আসে যারা ,
   পারিনা আমি তা মানতে ;
   তবুও আমি স্বাক্ষী থাকি -
(হয়রে) হয় আমাকে তা থাকতে |
   বুক ফেঁটে যায় ,আমি নিরুপায় ;
   চিতার আগুনে পুড়ে হয় সব ছাঁই -
   শান্ত আমি ,নির্বাক হয়ে ,
   চেয়ে চেয়ে শুধু দেখি -
   মোর জীবনের খাতা সম ভূমিতে ,
   দুঃখের কথাই শুধু লিখি |
   যুগ পাল্টাবে ,মানুষ বদলাবে -
   আমি বদলাবো না কখনো ;
   এখনো যেমন আছি -
   হাজার বছর পরেও ,
  আমি থাকবো ঠিক  তেমনই তখনও |
*******************************
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী  25.8.16  9-45PM.    
              

Tuesday, August 23, 2016

"ভেকধারী পুরুষতান্তিক সমাজ"
 (নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী)
++++++++++++++++++++++
আদিকাল থেকে চলছে , নারীর প্রতি অত্যাচার -
উড়ছে কথা ,পুরুষ নারীর সমান অধিকার !
কল্যাণময়ী ,স্নেহময়ী ,শক্তিরূপিণী নারী ,
কর্মক্লান্ত পুরুষের জীবনে ,নারীই সুধার বারি |
মায়ের কাছেই সন্তান পায়,শিক্ষা প্রাথমিক ,
নারী নিজহাতে গড়ে,দেশের সু-নাগরিক |
নারী হারাচ্ছে-সীতা ,সাবিত্রী ,দ্রোপদীর যুগ হতে সম্মান,
স্বেচ্ছাচারী পুরুষের দ্বারা-হারাচ্ছে নারী তার মান ,
ভাগ্যভীরু নমনীয় নারী,আজও সমাজে অসহায় ,
অর্থ লিপ্সা পুরুষের চোখে,আজও সে পণ্য সামগ্রী হয় |
নারী কন্যা,নারী বধূ, নারীই মা জননী ,
নারী সেবিকা ,নারী লক্ষ্মী ,নারীই অসুরবিনাশিনী |
তবুও নারীর পৃথিবীতে আসার,নেই কোনোই অধিকার,
যদি জানা যায়, ভূমিষ্ঠ হবে শিশু কন্যা আবার |
শিক্ষা ,দীক্ষায় পারদর্শী নারী -
করছে ঘরে বাইরে কাজ ;
পুরুষের চোখে 'মেয়েছেলে' বলে -
বাঁচাতে পারে না,মাঝে মধ্যেই তাদের লাজ |
সেনানীর বেশে লড়ে চলে তারা ,
বাঁচাতে দেশের মান ;
দেশ পারেনা বাঁচাতে তাদের সম্মান |
পুরুষ গড়েছে নিজ হাতে নারীর কারাগার ,
পুরুষকেই হবে ভাঙতে নিজেই সেই আগার |
পুরুষই করছে নারীর জয়গান ,
'পুরুষ নারীর সমান অধিকার'-
ঘটা করে কোরছে পালন নারী দিবস ফি-বছর ,
মাইক হাতে নারীর জয়গানে মাতিয়ে রাখছে আসর !
সেই পুরুষই রাতের আঁধারে ,লুটছে নারীর মান ,
দিনের আলোতে সাধু সেজে তারা করছে নারীর গুণগান !
ভেকধারী এই পুরুষতান্তিক সমাজের চাই অবসান -
ফিরিয়ে দাও যুগে যুগে নারীর অর্জিত সম্মান |
++++++++++++++++++++++++++++
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী  22.8.16   10-40PM.

Sunday, August 21, 2016

"লড়তে হবে"  (নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী ).
++++++++++++++++++++++++
এমন দেশে নিলাম জনম ,
জম্ম হোলো বিফল !
নুন আনতে পান্তা ফুরায় ;
চাকরীর বড় আকাল !
কাঁচা লঙ্কা,একটি পেঁয়াজ,একটুখানি নুন ,
জোগাড়ে- খাই যে হিমশিম ;
কারখানাতে ঝুলছে তালা ,
বাজার দর আগুন |
মেয়েরা একলা চলতে গেলে ,
হারাচ্ছে তাদের মানটা !
করলে নালিশ-বেঘোরে দিচ্ছে প্রাণটা |
ভয়ে সবাই মুখ লুকিয়ে ,
চলছে পথে ঘাটে ;
বিপদ দেখলেও এগিয়ে আসেনা ,
নিজের প্রাণটা বাঁচাতে |
সাধারণ মানুষের দুঃখে ,
কাঁদে না কারও প্রাণ ;
বাঁচতে গেলে লড়তে হবে ,
বাঁচাতে হবে নিজের নিজের সম্মান |
++++++++++++++++++++++
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী  20.8.16  10-45PM.

Saturday, August 20, 2016

"ঘুমাতে দাও"  ( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
++++++++++++++++++++++++
একটু আস্তে আস্তে কথা বলো তোমরা -
এতো ক্যামেরা ,এতো কোলাহল কেনো ?
কাল যখন যন্ত্রনায় ও আর্তনাদ করেছে ;
বাঁচাও ,বাঁচাও -বলে চিৎকার করেছে -
কেউ তো ওকে বাঁচাতে আসোনি !
তবে আজ কেনো, এতো মানুষের ভিড় ?
কাল রাতে একদল মানুষরূপী পশু ওকে ছিড়ে খেয়েছে
হয়তো আজ যারা ভিড় করেছে এখানে -
এদের মধ্যেই কেউ আছে ;
যার হাত থেকেও ও রেহাই পাইনি !
আজ এখানে মজা লুটতে এসেছে !
'বিচার চাই -'বলে গলা মেলাচ্ছে |
বিচার ? সেতো প্রহসন মাত্র !
ধর -পাকড় ,জেল -হাজত -
রোজ খবরের কাগজের প্রথম পাতায় ,
বড় বড় করে লেখা হেডলাইন -
'ধর্ষিতার বিচার চাই -'
কিছুদিন পরেই নেতাদের হস্তক্ষেপে ছাড়া পাওয়া ,
মিডিয়ার ছুটাছুটি বন্ধ !
না - কেউ ওর গায়ের উপর -
কোনো ফুলের স্তবক রেখো না ;
অনেক আঘাত ,অনেক কষ্ট পেয়েছে ও ,
ওই ভার ,ওই ফুলের কাঁটার আঘাত ,
আর ওকে দিও না -
ও ঘুমাক ,নিশ্চিন্তে ঘুমাক ,ওকে ঘুমাতে দাও শান্তিতে |
=====__======_=======__===___=
(নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী ) 20.8.16  1AM.

Thursday, August 18, 2016

"যুগের হাওয়া"  (নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
++++++++++++++++++++++
আজকের যুগে আছে কত ,
   পালন করবার দিন !
পিতৃদিবস ,মাতৃদিবস আছে ভালোবাসার ও দিন !
   নারীদিবস ,চকলেটদিবস -
আরও যেন আছে কি সব !
   বছরের একটি দিনই
ঘটা করে চলে এ সব উৎসব !
ছেলের অত্যাচারে মাতা-পিতা ছাড়ছেন ঘর -
   কোথাও সম্পত্তির লোভে করছে খুন মা বাবাকে আবার -
ধর্ষণ হচ্ছে দিনে দুপুরে -
  ঘটা  করে নারী দিবস ,
হচ্ছে পালন ফি-বছরে !
  থাকছে নারী সেই তিমিরে |
কোথাও বাবা মাকে পাঠানো হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে ,
  খবর নেয় না ছেলে তাদের কোনোকালে ,
মৃত্যুর খবর পেলে তাদের ,
  ঘটা করে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করে !
যে পরিবারের ছেলেটি ,
  দিন দুপুরে নারীকে করছে লাঞ্ছনা ,
তারই পরিবারের কেউ হয়তোবা -
   মাইক হাতে জানান দিচ্ছে জনতাকে -
নারীর অপমান আমরা মানবো না !
এই তো হোলো সমাজ মোদের !
  শস্যের মধ্যেই ভুত !
আস্তে আস্তে তলিয়ে যাচ্ছি সবাই ,
  ঘরে বাইরে সকলেই যে অদ্ভুত !
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
(নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী ) 17.8.16 10পাম.

Wednesday, August 17, 2016

         চোখের সামনে পরিচিত মানুষগুলি হঠ্যাৎ করেই যখন বদলে যায় ,তখন নিজের কাছে নিজেকেই যেন অচেনা মনে হয় | তখন আয়নার সামনে দাঁড়ালে হয়তো নিজের পরিবর্তনটাও ধরা পরে | স্থান ও কালভেদে পরিবর্তন হচ্ছে পৃথিবীর ,আর তারই সাথে পাল্লা দিয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে মানুষ ও তার রুচিবোধ | যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে কিছু পরিবর্তন মানুষকে মেনে নিতেই হয় ; সে ক্ষেত্রে পুরনো কিছু ধ্যান ,ধারণাকে বিসর্জন ও দিতে হয় ; কিন্তু কখনোই সেটা নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে নয় |
++++++++++++++++++++ শুভ রাত্রি ...
(নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
"পথ চেয়ে আছি"  ( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
+++++++++++++++++++++++
তোমার আশায় আছি বসে -
   ভাদ্রের খরতাপে ,
বলেছিলে ফিরবে তুমি  ,
   আমায় ভালোবেসে |
বাতাসে যেনো পাই আমি -
   তোমার গায়ের ঘ্রান ,
তোমার তরে  হৃদয় আমার ,
   আজও ভালোবাসায় অম্লান |
আমায় দিয়ে কথা তুমি -
   রাখছো না সে কথা ,
ভালোবাসি বলেই কি ,
   দিচ্ছ এত ব্যথা ?
++++++++++++++++++++
(নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী ) 14.7.16  1AM.

Tuesday, August 16, 2016

"স্বেচ্ছাচার"( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
---------------------------------
জাতির জীবনে এসেছে জোয়ার -
   আমরা হয়েছি স্বাধীন ,
কাগজের পাতায় খবর বেড়োয় -
   টি.ভি .তে কত দেখি অত্যাচারের ছবি |
স্বাধীনতার অর্থ কেউ কেউ নিয়েছে -
   স্বেচ্ছাচারিতা আর উচ্ছঙ্খলতা -
মদ্যপ অবস্থায় ঘুরছে পথে জনতা -
   দেখাচ্ছে তারা ছিনতাই আর রাহাজানিতে -
তাদের পারদর্শিতা -
   রাতের আঁধারে শুধু নয় ;
প্রকাশ্য দিবালোকে করছে তারা ধর্ষণ ও খুন ,
   শিশুকেও দেয় না রেহাই -
তাদের কাছে হয়তো এটাই স্বাধীনতা !!!
এই স্বাধীনতায় কি আমরা চেয়েছিলাম ?
   সত্যিই কি আমরা স্বাধীন ?
হয়তো বিদেশী শক্তি শাসন ক্ষমতায় নেই ,
   কিন্তু স্বাধীনতা কি আমাদের আছে ?
যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে -
   'স্বাধীন'- শব্দটার  ও কি পরিবর্তন হচ্ছে ?
যার যা ইচ্ছা সে তাই করছে -
    হচ্ছে না কোনো প্রতিকার -
শুধুই বাড়ছে অত্যাচারিত মানুষের হার !!
++++++++++++++++++++++++++++
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী   15.8.16  10-40PM.

Saturday, August 13, 2016

সত্যি কারের ভুতের গল্প"...                           1971 সাল / সবে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে / সমরেশ রায় চৌধুরী তার স্ত্রী ,ছেলেমেয়েকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি ফিরে গেছেন / শুধু ভিটেটাই আছে / পাকিস্থানি মিলিটারী তাঁর বাড়ি ঘর - এমন কি বছর মাইনে করা বাড়ির কাজের লোক বীরেন  মান্না কেও মেরে ফেলেছে / শুধু মাত্র নামেই ছিলো তাঁর বাড়ির কাজের লোক / সন্তান সম দেখতেন তাকে / মিলিটারীরা যখন গ্রাম আক্রমন কোরে ,একের পর এক ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে ,যাকেই সামনে পাচ্ছে তাকেই গুলি কোরে মারছে ; তখন সমরেশ বাবু তাঁর বউ ,বাচ্চা ,বৃদ্ধা মা,আর তাঁর বীরেন কে নিয়ে বাড়ির ই একটি জঙ্গলে আশ্রয় নেন / কিন্তু হতভাগ্য বীরেন হঠ্য়াত করেই" আস্ছি "বলেই বেড়িয়ে গেলো / জঙ্গলের মধ্যে বসেই সকলে দেখতে পেলো ,তাদের বাড়ি দাউ ,দাউ কোরে জ্বলছে / কিন্তু বীরেন ফিরছে না দেখে সমরেশবাবু ও তাঁর স্ত্রী অস্থির হোয়ে পড়েন / সন্ধ্যার দিকে সকল ধব্ংস স্তূপের সামনে এসে দাড়ান  অন্ধকার হোয়ে আসছে / ভালো কোরে কিছু দেখা যাচ্ছে না / তবুও তাঁরা বীরেনের নাম ধরে বেশ কয়েকবার ডাকাডাকি করলেন / কিন্তু বীরেনের কোনো সাড়া পেলেন না / গ্রামের সন্ধ্যা ; আজকের দিনের মত কোনো আলো ও ছিলো না / বাসস্থান তো শ্বশান / তাই তাঁরা সময় নষ্ট না  কোরে অনির্দিষ্ট পথের যাত্রা শুরু করলেন / হঠ্য়াত করেই ঈশ্বরের আশীর্বাদের মত একটি পরিচিত মুসলমান ছেলের সাথে দেখা হলো / সেই রাতের মত তাঁরা সেই ছেলেটির বাড়িতেই আশ্রয় নিলেন / কিন্তু বীরেনের চিন্তায় ভোর হতে না হতেই সমরেশবাবু আবার নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন / হঠ্য়াত ই দেখেন বীরেন একটা টিনের কৌটা বুকের সাথে চেপে ধরে উঠান থেকে কিছুটা দুরত্বে আম গাছের তলায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছে / সমরেশ বাবু হতভম্ব হয়ে গেলেন / কিন্তু ভেঙ্গে পড়লেন না / এই মুহুত্বে তাঁর করণীয় কাজটা স্থির কোরে ফেললেন / আশে -পাশের বাড়ি থেকে কিছু লোক যোগার কোরে ,তাকে মাটির তলায় চাপা দিলেন / কারণ সেই মুহুত্বে এই ছাড়া তার অন্য কোনো উপায়ও ছিলো না /             পাক্কা দশ মাস / তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে এখানে - ওখানে ঘুরে বেড়ান / দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ছোট একটা বেড়ার ঘর কোরে তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে নিজের ভিটে ই ফিরে আসেন / কাহিনীর সূত্রপাত সেখান থেকেই / প্রথম রাত থেকেই শুধু সমরেশবাবু নন ,বাড়ির সকলেই বীরেনের অস্তিত্ব টের পান /একটা কৌটার মধ্যে কিছু খুচরা পয়সা থাকলে সেটা ঝাঁকালে যেমন আওয়াজ হয় ; ঠিক তেমন কোরেই কেউ যেনো কৌটা ঝাকাচ্ছে / প্রথম অবস্থায় কেউ কিছুই পাত্তা দেন না / কিন্তু রাত যতো বারে পয়সা ঝাকানির আওয়াজ ও ততো বাড়ে / বীরেন যখন সমরেশ বাবুর বাড়িতে কাজ করতো ; তখন তিনি মাঝে ,মাঝে বীরেনকে বছর মাইনে ছাড়াও -হাত খরচ বাবদ কিছু টাকা দিতেন / তার থেকে যেটা বাঁচত ,সে সেটা টিনের কৌটার মধ্যে জমিয়ে রাখত / মিলিটারীর আক্রমনের জঙ্গলে লুকিয়ে থাকার সময় হঠ্য়াত তার ওই পয়সার কথাগুলি মনে পড়ে / আর সেটা নিতে এসেই অকালে প্রাণ হারায় / কিন্তু তার আত্মা বাড়ি ছেড়ে বেড়োতে পারে না / দশ মাস পরে বাড়ি ফিরে তিনি যখন বাগানে বীরেনকে যেখানে পোতা হয়েছিলো ; সেখানে দেখতে যান / তখন দেখেন ,তার হাড় ,মাথার খুলি নানান জায়গায় ইতস্তত ছড়ানো / প্রথম দিন রাতে বীরেনের অত্যাচারের পরে তিনি লোক দিয়ে ওই সব হাড় - গোর ,মাথার খুলি একটা বড়ো গর্ত কোরে তার নীচে পুতে দেন / কিন্তু সেদিন রাতে বীরেনের অত্যাচার আরও কয়েকগুন বেড়ে যায় / সকলের মনে হয় যেনো ,বারান্দার উপর কেউ নাচছে / সঙ্গে কৌটার ভিতর পয়সা ঝাকানোর শব্দ / ঘরের ভিতর সকলে ভয়ে সিটিয়ে থাকে / সকালে আবার তিনি বাগানে যেয়ে দেখেন ,সেই হাড় ,মাথার খুলি আগের মতোই ছড়ানো / আবার তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন / গ্রামের বন্ধুদের পরামর্শে তিনি ডেকে আনেন একজন বড়ো ওঝাকে / ওঝা গণনা কোরে বলেন ," আত্মা বাড়ির ভিতরেই আছে / কিছুতেই মায়া কাটাতে পারছে না" / উপায় হিসাবে বলেন ,"যে আম গাছের কাছে বীরেন মারা যায় ,আজ রাতেই যদি সেই আম গাছের একটা ডাল ভেঙ্গে পড়ে ,তাহলে বুঝতে হবে - আত্মা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে "/ তার জন্য তিনি কি সব মন্ত্র ও পড়েন ,জলও ছিটান / অ -বিস্বস্য় হলেও সত্য - সেদিন মাঝ রাতে আম গাছের একটা ডাল হঠ্য়াত ই ভেঙ্গে পড়ে / সেদিন থেকে বীরেনের অত্যাচার ও বন্ধ হয় / এর বেশ কয়েক বছর পর সমরেশ বাবু গয়ায় যেয়ে বীরেনের পিন্ড দান কোরে আসেন /            6.12.15
"ভাগ্যের লিখন"  ( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী ) ~~~~~~                    দেবতোষ বাবুর স্ত্রী তার ভাসুর দেবপ্রিয় বাবুকে ফোন করে জানান যে অনতিবিলম্বে তিনি যেন মুম্বাই চলে আসেন ডক্টর জবাব দিয়ে দিয়েছেন ; শেষ মুহূর্তে তিনি তার দাদা ও ভাইপোকে দেখতে চান / দেবপ্রিয়বাবুর সাথে তার ভায়ের দেখা নেই প্রায় কুড়ি বছর / সম্পর্ক আছে ঠিকই ; ফোন করে উভয় উভয়ের খবরাখবর নিয়ে থাকেন /কিন্তু দেবতোষবাবু যেমন কখনোই তার দাদাকে মুম্বাই যেতে বলেন না ,অপরদিকে দেবপ্রিয়বাবু ও তার ভাইকে কলকাতায় তাদের পৈতৃক ভিটাতে আসতে বলেন না / সেই যে মুম্বাই চাকরী পেয়ে ভাই চলে গেলো আর কখনোই সে বাড়িতে আসেনি / মা ,বাবা দুজনেই মারা যাওয়ার পর দাদা ভাইকে যেমন আসতে বলেননি ,ভাই ও আসেনি / কিন্তু দু'বারই তিনি ভাইকে জানিয়েছেন / দেবতোষ যখন চাকরী পেয়ে মুম্বাই যান ,তখন দেবপ্রিয়বাবু অফিসের কাজে কলকাতার  বাইরে ছিলেন /ছোট ছেলের সাথে বড় বৌমাকে শ্বাশুড়ি পাঠিয়ে দেন ছেলের নুতন কর্মস্থলে সংসারটা গুছিয়ে দেওয়ার জন্য /প্রথম অবস্থায় নিরূপা রাজী হয়না ; কিন্তু স্বামীর অনুরোধে তিনি তার দেওরের সাথে মুম্বাই পাড়ি দেন / কথা হয় অফিসের কাজ সেরে ফেরার পথে তিনি নিরূপাকে সঙ্গে নিয়েই ফিরবেন /অগত্যা নিরূপা রাজী হন /মুম্বাই এসে আট থেকে ন'দিনের মধ্যেই নিরূপা সুন্দর করে তার দেওরের ভাড়া করা ফ্লাটটা গুছিয়ে ফেলেন /বৌদি ,দেওরের সম্পর্ক আর পাঁচটা ঘরের মতোই অত্যন্ত মধুর ,ঠাট্টা- ইয়ার্কির মধ্যেই সীমাবদ্ধ /একদিন দেবতোষ অফিস যাওয়ার সময় বৌদিকে বলে যান যে তার ফিরতে দেরী হবে এবং তিনি খেয়েই আসবেন /যথারীতি নিরূপা রাতের খাবার খেয়ে দেওরের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন / রাত প্রায় একটার সময় দেবতোষ ফ্ল্যাটে ফেরেন /নিরূপা তাকে দেখে থ হয়ে যান /তিনি ভাবেন যে কোনোদিন মদ ছুঁয়েও দেখেনি সে কিনা আকণ্ঠ মদ খেয়ে ফিরেছে /ভালোভাবে দাঁড়াতেও পারছে না / তিনি কোনো রকমে নিজের দম বন্ধ করে দেওরকে এনে খাটের উপর শুইয়ে দেন /আর তখনই ঘটে যায় সেই কলঙ্কৃত অধ্যায় | কিছুতেই নিরূপা দেবতোষের দু'হাতের বন্ধন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না | প্রথমে জোড়াজুড়ি ,ধস্তাধস্তি পরে দেবতোষের পায়ে ধরেও নিজের সম্মান রক্ষা করতে অক্ষম হয় |       পরদিন দেবতোষ যখন ঘুম থেকে ওঠে তখন অনেক বেলা | স্ববতই গতরাতের ঘটনার কথা তার কিছুই মনে পরে না | এত বেলা হয়ে গেছে ,বৌদি তাকে কেনো অফিস যাওয়ার জন্য ডাকেনি ; জানতে ছুটে যায় তার ঘরে | কিন্তু যেয়ে দেখে ঘর শুন্য | রান্না ঘরেও নেই ,আবার ফিরে আসে বৌদির ঘরে | সেখানে সে দেখতে পায় একটি চিঠি পরে রয়েছে খাটের পরে | চিঠিটি খুলে সে পড়তে শুরু করে -    ঠাকুরপো ,                    যে স্নেহের চোখে তোমায় আমি দেখতাম ;তার চরম অপমান কালরাতে তুমি আমার সাথে করেছো | বয়সে বড় হয়েও আমি পা ধরেও তোমার কাছ থেকে আমি আমার সম্মান বাঁচাতে পারিনি | আমি আজই কলকাতায় ফিরে যাচ্ছি | জীবনে কোনোদিনও তোমার মুখ যেন আমায় দেখতে না হয় | তুমি যদি কোনোদিন আর আমার সামনে এসে দাঁড়াও ,সেদিনই আমার জীবনের শেষদিন হবে | আমি এ জীবনে তোমায় আর কোনোদিন ক্ষমা করতে পারবো না ...         এক নিঃশ্বাসে দেবতোষ চিঠিটা পড়ে | একটু একটু করে গতকালের  ঘটনা আপসা আপসা তার মনে পড়তে লাগে | তখন সে দুই হাতে মুখ ঢেকে হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করে | আর মনে মনে বলতে লাগলো ," বিশ্বাস করো কাল রাতে আমার কোনো জ্ঞান ছিলো না | পার্টিতে ওই হুল্লোড় ,শেষে আলাদা করে কোনো এক রুমে কয়েকজন বন্ধু মিলে নীল ছবি আমার সব শিক্ষা ,দীক্ষা ,রুচি - পাল্টে দিয়েছিলো | যা করেছি সে অন্যায়ের কোনো ক্ষমা নেই | ঈশ্বরের নামে শপথ করে বলছি -এ জীবনে এ কালো মুখ আর তোমায় দেখতে হবে না | কোনোদিন তোমার সামনে যেয়ে আমি আর দাঁড়াবো না |              দেবপ্রিয় ফোন পেয়েই কাল বিলম্ব না করেই ছেলেকে নিয়েই প্লেনে রওনা দেন |দেবেশকে বাইরে বসিয়ে রেখে অনেক কাকুতি মিনতি করে  ভিজিটিংস আওয়ারের আগেই তিনি ভায়ের বেডের কাছে এসে দেখেন দেবতোষ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন আর চোখের দু'পাশ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে | তিনি তার মাথার কাছে এগিয়ে যান | অত্যন্ত মৃদু স্বরে ডাকেন -'দেবু' -দেবতোষ চোখ খুলে দাদার দিকে তাঁকিয়ে দেখেন ,এক মাথা সাদা চুল ; তার সুন্দর  ,সুপুরুষ দাদা বুড়ো হয়ে একি চেহারা করেছে ! " দেবু ,আমি এসছি রে ! কেমন আছিস তুই ?প্রথমে চিনতে একটু অসুবিধা হলেও পরে তিনি দাদাকে চিনতে পারেন | কিন্তু কোনো কথা না বলে দাদার হাত দু'টি ধরে তিনি কেঁদেই যান | দেবপ্রিয় বলেন ," কাঁদছিস কেন ? তুই ভালো হয়ে যাবি |" এবার নিজের হাত দু'টি একসাথে জড়ো  করে দাদার দিকে তুলে বলেন ,"আমি আর ভালো হতে চাই না দাদা | মস্ত বড়ো অপরাধী আমি ; আমার পাপের ফলে আজ আমার এই পরিণতি !তুই জানিস না দাদা আমি কি করেছি বৌদির সাথে |" দেবপ্রিয় ভায়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলেন ,"জানি সব জানি | তোর বৌদি আমায় সব বলেছে | ছেড়ে দে ভাই - সে সব কথা | তোর ছেলেকে দেখবি ? ও কিন্তু জানে আমিই ওর বাবা | শুধু ও কেনো - আমি আর তোর বৌদি ছাড়া কেউই জানে না - যে তুই ওর বাবা  ,আর কেউ কোনোদিন জানতেও পারবে না |" দেবতোষ কোনো কথা না বলে চোখ বন্ধ করেই থাকেন | দু'চোখের কোল বেয়ে অবিরাম ধারায় জলের ধারা নেমে চলেছে | দেবপ্রিয় বাইরে বেড়িয়ে যেয়ে ছেলে দেবেশকে ও তার কাকিমাকে (??) ভিতরে ডেকে আনেন | দেবেশ এসে দেবতোষের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত রেখে মুখে এসে পড়া চুলগুলি সরিয়ে দেয় | দেবতোষ চোখ খুলে দেবেশের দিকে তাকান | হঠ্যাৎ দেখা যায় দেবতোষের শরীরটা একটু কেঁপে ওঠে আর সঙ্গে সঙ্গেই চোখ দু'টিও বন্ধ হয়ে যায় |দেবপ্রিয় কানের কাছে মুখ রেখে বেশ কয়েকবার 'দেবু' 'দেবু' - বলে ডাকেন, পরে তিনি বুঝতে পারেন সব শেষ | একটা বড় দীর্ঘশ্বাস বুক চিড়ে বেড়িয়ে আসে |             আনুসঙ্গিগ সব কাজ শেষ করে দেবপ্রিয় তার ভাইবৌকে অনেক কষ্টে রাজী করিয়ে দু'দিনের মাথায় আবার কলকাতায় তিনজন মিলেই রওনা দেন | উড়ন্ত যাত্রার ভিতর তিনি অন্যমনস্ক ভাবেই ফিরে যান - কুড়ি বছর আগের দিনগুলিতে | সেদিন মুম্বাই দেবতোষের ফ্লাট থেকে বেড়িয়ে একাকীই অনেক কাঠ ,খড় পুড়িয়ে নিরূপা রওনা দেয় কলকাতার উদ্দ্যেশে | দুইদিন পরে বাড়িতে ফিরে তিনি  তার স্বামীকে যতশীঘ্র পারেন বাড়িতে আসার জন্য কান্নাকাটি করতে লাগেন | দেবপ্রিয় বাড়ির কুশল সংবাদ জানার পর কিছুটা ভয় পেয়েই স্ত্রী অসুস্থ্য বলে তাড়াতাড়িবাড়ি ফিরে আসেন | নিরূপা সমস্ত ঘটনা তার কাছে খুলে বলেন | সব কিছু শুনে দেবপ্রিয় পাথর হয়ে যান | নিরূপা খুব কান্নাকাটি করতে লাগলে তিনি বলেন ," দুঃস্বপ্ন ভেবে সব কিছু ভুলে যাও | আর কেউ যেন না জানে এই ঘটনার কথা ; আর তা ছাড়া কোনোদিনও এই প্রসঙ্গ মুখেও আনবে না |"      মাস দেড়েকের মধ্যেই নিরূপা বুঝতে পারেন তিনি গর্ভবতী | দশ বছর বিবাহিত জীবনে তাদের কোনো সন্তান হয়নি | নানান পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরা পরে দেবপ্রিয়বাবুরই শারীরিক সমস্যা | দু'জনে সেটা মেনেও নিয়েছিলেন | কিন্তু অকস্যাৎ বীনা মেঘে বজ্র পাতের মতো নিরূপার এই প্রেগন্যান্সি দু'জনকেই পরস্পরকে কাছ থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দেয় | নিরূপা সন্তান নষ্ট করে ফেলতে চায় | কিন্তু বাঁধ সাধেন দেবপ্রিয় | তিনি বলেন ," সব কিছুই ভগবানের পরে ছেড়ে দাও নিরু ; ও যে ভাবে আমাদের কাছে আসতে চাইছে ওকে আসতে দাও | ও তো এই বংশেরই ,ওই রাতের ঘটনাটা ভুলে যাও ,সমস্ত পৃথিবী জানবে ও আমাদেরই সন্তান |" নিরূপা আবার কান্নাকাটি শুরু করেন | তাকে নানান ভাবে বুঝিয়ে দেবপ্রিয় বাচ্চাটাকে রাখতে রাজী করান | সেই সন্তানই দেবেশ - যে দেবপ্রিয় ও নিরুপায় চোখেরমনি ,বংশের একমাত্র সন্তান | দেবতোষ ও ওই ঘটনার সাত ,আট বছর পরে বিয়ে করেন | কিন্তু তার কোনো সন্তান হয়নি |তবে মদটাকে তিনি জীবনের সঙ্গী করে নেন ; সেদিন রাতের ওই ঘটনার পর থেকে | অফিস আর ড্রিঙ্কস | শেষে যা হবার তাই হলো ,আস্তে আস্তে লিভারটাই শেষ  হয়ে গেলো | বেশ কয়েকবার হাসপাতাল ভর্তি ,বাড়িতে এসে আবার সেই একই জিনিস ! শেষরক্ষা এবার আর হয়নি | অকালেই চলে গেলেন ; নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে |

দেবপ্রিয়রা এসে কলকাতার বাড়িতে পৌঁছালেন | নিরূপা দেখলেন ছেলের গলায় ধড়া | দেবপ্রিয়, নিরুপায় মনের অবস্থা কিছুটা আঁচ করতে পেরে বললেন ,"বংশের একমাত্র সন্তান ও -ওকেই তো কাকার কাজটা করতে হবে |" পিছনে বিধবার বেশে শর্মিষ্ঠাকে দেখে তিনি বুঝলেন - এ তার ঠাকুরপোর সদ্য বিধবা স্ত্রী | তিনি দু'হাত বাড়িয়ে তাকে বুকে টেনে নিলেন | জায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে শর্মিষ্ঠা ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন | নিরূপার চোখ থেকেও অবিরাম ধারায় জল পড়তে লাগলো | তিনি দেবেশকে ডেকে বললেন ," দেব ,আজ থেকে তুমি উনাকে 'ছোটমা' বলেই ডাকবে | আর আমার এবং তোমার বাবার অবর্তমানে নিজের মায়ের জায়গাটাতেই তোমার ছোটমাকে রেখো | তোমার ছোটমা কিন্তু তোমার ভীষণ আপন ; এটা সব সময় মনে রাখবে বাবা | আমাকে আর তোমার ছোটমাকে কখনোই ভিন্ন চোখে দেখবে না | এখন আমরা ছাড়া আর আমাদের অবর্তমানে তুমি ছাড়া তোমার ছোটমার কিন্তু আর কেউ নেই |"
!!!!!!!!!!!!!!!!!!;!;!!;;!!!!!!!!!!!!!!!!!
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী  11.8.16 10-30PM.

Thursday, August 11, 2016

*আমি মহান নই* ( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী )
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
দিনরাত পুড়ে পুড়ে হই আমি ছাঁই ,
লোকে বলে আমার জন্য হয় ক্যান্সার ,
টেনশন কমাতে,আলোচনা সভাতে ,
আমার জুড়ি মেলা ভার -
তবুও পোড়া কপাল আমার !
শুধু ক্যান্সারের দায় যেন একাই আমার ,
আমায় নিয়ে হয় কত এক্সপেরিমেন্ট ,
মহানায়ক আমায় খেতে খেতে -
কথা বলতেন বেশ !
শুধু নয় ক্যান্সার !
আমি ফুসফুসের ও নানান রোগের কারণ !
শ্বাসকষ্ট ,ফুসফুস ব্লক আর হয় কাশি ,
ধোঁয়ার গন্ধ যার নাকে যায় -
ক্ষতি হয় তার আরও বেশি ;
একটু একটু করে সকলে ,
তোমরা আমায় ছাড়ো -
ছাঁই হই তোমাদের জন্যই ,
ক্ষতি করি জীবনের আরও বড় !!
-----------------------
( নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী ) 11.8.16  11-20AM.
 
নিন্দা যখন কোরবে লোকে -
    তোমার সকল কাজে -
বুঝবে তুমি একটু হলেও -
   করছো উপকার সমাজের |

Saturday, August 6, 2016

* কেনো প্রভেদ * ( নন্দা মুখার্জী )
++++++=+++====++=++++++++++====
ফুটপথেতে থাকি মোরা -
নেইকো ঘর ,বাড়ি -
বৃষ্টি হলেই কাক ভেজা -
শুধু পড়ে চোখের পানি /
বৃষ্টির ধারা চোখের ধারা -
মিলেমিশে হয় একাকার !
মোছার জন্য থাকেনা আঁচল -
তাও ভিজে একসার /
জম্ম যদি দিলেই প্রভু ,
ঘর দিলে না কেন কভু -
কেনো তোমার এতো ভেদাভেদ ?
বড় ,ছোটোর করলে প্রভেদ /
যাদের আছে অঢেল আছে ,
সে-তো তোমার ই দান ,
একটু হলেও দিতে যদি ,
খেয়ে পড়ে রাখতে পারতাম মান /
যাদের তুমি করেছো বড় !
তারাই আমাদের করছে  হেয় ;
লালসায় ভরা দৃষ্টি তাদের !
করছে হরণ লজ্জা মোদের /
তবুও তারা নামী লোক !
আমরাই শুধু ছোটোলোক !!
-----------------------------\
নন্দা মুখার্জী  3.8.16      1-10AM.
* রঙ্গিন জীবন *
                              ( নন্দা মুখার্জী )
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
জীবনে ভালোবাসার অপর নাম -
            হয়তো জীবনের রং !   
জীবন থেকে রং হারিয়ে যায় তখনই -
           যখন থাকেনা জীবনে ভালোবাসা ,
স্বপ্নগুলো তখন মলিন হয়ে যায় -
           চেষ্টা করেও তাকে রোধ করা যায় না !
যে ছবিতে কোনো রং থাকে না -
           শুধু সাদা পাতা -
সেটা যেমন  কোনো ছবি নয় ,
          যে জীবনে ভালোবাসা থাকে না -
সে জীবনটাও জীবন নয় !!
""""""""""""""""""""""""""""
নন্দা মুখার্জী   6.8.16  2-10AM.

Wednesday, August 3, 2016

*একরাশ শুন্যতা* ( নন্দা মুখার্জী )
[[[[[[[[[][[[[[]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]][[[[[[[[[[[
আমার স্বপ্নগুলো ছিলো তোকে ঘিরে -
ভেবেছিলাম অন্ধকারেও হাঁটতে পারবো -
         তোর হাত ধরেই ;
মাঝখানে একটা ভুল বোঝাবুঝিই  ,
তোকে আমার কাছ থেকে সরিয়ে নিলো -
যখন অভিমান করে বসেছিলাম ,
তুই ফিরে এসে আমার মান ভাঙ্গাবি -
             তখনই যদি তোর সাথে -
ভুল বোঝাবুঝিটা মিটিয়ে নিতাম -
তাহলে এই বিশাল শুন্যতা ,
আমায় গ্রাস করতো না -
             যে কথাগুলি তোকে বলা দরকার -
কিন্তু বলতে পারছিনা -
অন্ধকার ঘরে সেই কথাগুলিই ,
অশ্রূ বিন্দু হয়ে ঝরে পড়ছে ;
চেষ্টা করছি তোকে ভুলে থাকতে -
               কিন্তু পারছি কই !
আসলে কি জানিস ?
হৃদয়ে যাকে জায়গা দিয়েছি -
তাকে কি ভুলে যায় কখনো ?
এখন শুধু একটাই চাওয়া -
                তুই ভালো থাকিস /
]]]]]]]]]]][[[[[[[[[[[[]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]]
নন্দা মুখার্জী  2.8.16  10-30PM.

Tuesday, August 2, 2016

"আমরা শিল্পী"  ( নন্দা মুখার্জী )
====================
আমি নইকো কবি -
তবু লিখি কবিতা -
ডাইরীর পাতা ভর্তি করে -
লিখি আমি যা-তা /
কণ্ঠশিল্পী আমি মোটেই নই -
তবু গাই গান -
বাথরুম সিঙ্গার বলে সবাই -
তাতে আমার কিবা এসে যায় ?
একটা কাজ ভালোই পারি ,
করি হরেক রকম রান্না ,
রান্না কিন্তু বড়ো শিল্প  ,
এ কথাটা অনেকেই মানেন না /
শিল্পীর হাতের ছবি যেমন ,
সঠিক রং তুলির ব্যবহারেই হয় সুন্দর ,
রাঁধুনিরও নুন ,হলুদ ,মসলার -
পরিমান জানতে হবে -
তবেই সবে চেঁটে পুটে খাবে /
ঘর গুছানোও নয়কো সহজ কথা -
এটাও এক শিল্প বটে !
করোনা স্বীকার অনেকেই তা -
কিন্তু এটা মানতেই হবে /
তাজমহল যারা গড়েছিলেন ,
সবাই জানে তারা শিল্পী ,
বড় বড় নকশা করা বাড়িগুলি ,
তৈরী করেন যারা -
তারা কেনো নন শিল্পী ?
কথা বলার মাঝেও আছে ,
শিল্পের প্রকাশ -
স্বল্প ভাষী ,মৃদু ভাষী -
এটাই সুন্দর মনের বহিঃপ্রকাশ /
খাওয়ার ভিতর ও আছে শিল্প -
মানো বা না মানো -
জীবনের প্রতি কাজেই আমরা শিল্পী -
যতই হই না আমরা অভাবী !
~~~~~~~~~~~~~~~~~
নন্দা মুখার্জী  31.7.16  12AM.

Monday, August 1, 2016

"বিষন্ন  বেলা"  ( নন্দা মুখার্জী )
------------------------
আকাশ ঘন নীল ,
   গুরু গুরু মেঘের গর্জন ,
চারিদিকে অন্ধকার ,
   বাদ্যের তালে নাচছে যেনো ,
সকল গাছের ডাল /
শন শন বেগে বইছে বাতাস ,
   মন যেনো উরু উরু ,
বজ্রপাতের বিকট ধ্বণি  ,
   যেনো কানে তালা দেয় /
আশে-পাশের বাড়ির থেকে  ,
   আসছে শাঁখের আওয়াজ ,
বৃষ্টি তখনও হয়নি শুরু ,
   আমি বসে জানালায় /
লাগোয়া বাড়িতে আছে এক আমগাছ ,
   কিছু ছোট ছেলেমেয়ে ,
কুড়াচ্ছে সেখানে ঝড়ে পড়া আম ,
   হঠ্যাৎ করেই ফিরে গেলাম  ,
আমার ছেলেবেলায় ,
   বৈশাখ থেকে শ্রাবন মাস ,
ঝড় আসলেই আমগাছের তলায় /
   গুটি থেকে শুরু করে পাঁকা আম ,
খাই বা না খাই -
   ঝড় আসলেই আম কুড়ানোর ,
যেনো এক আনন্দমেলা /
   শিশুসুলভ মনে ছিলোনা কোনো ভয় ,
ঝড়ে কি হতে পারে !
   আজ এই বাধ্যর্কে এসে ,
ওদের দেখে মনে নানান শঙ্কা জাগে  ,
   হারিয়ে গেলো যেনো খুব তাড়াতাড়ি ,
স্বপ্নে বিভোর সেই ছেলেবেলা ,
   আজও মন চায় উঠলে ঝড় ,
সব বাঁধা কাটিয়ে -
   ফিরে যাই ওদের সাথেই আমগাছতলা /
............................................................................. 
নন্দা মুখার্জী  31.7.16  11PM

(1) (নন্দা মুখার্জী )
স্মৃতিগুলি জমে জমে -
হোলো যেন পাহাড় -
যখন তখন চড়াই উৎরাই -
       কষ্ট শুধু পাই -
(2).                        
ভালোবাসার শত জ্বালা -
যখন মেলে অবহেলা -
স্মৃতি তখন জমতে থাকে -
ভুলতে চাইলেও মনে জাগে /
......................................
( নন্দা মুখার্জী ) 1.8.16   12-50আমি.