অণুগল্প
ব্লাকবেল্ট
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী
নিজে একজন নামকরা নৃত্যশিল্পী হওয়া স্বর্তেও সকলের অমতে মেয়েকে নিজের নাচের স্কুলে ভর্তি না করে যখন ক্যারাটে স্কুলে ভর্তি করলো মহুয়া তখন শাশুড়ি ও স্বামী তার সাথে প্রচন্ড অশান্তি করেছিলেন| কিন্তু একরোখা মহুয়া কারও কথায় সেদিন কর্ণপাত করেনি| মেয়ে আজ ব্লাকবেল্ট পাওয়ায় সে ভীষণ আনন্দিত|
শহর থেকে একটু দূরে নিজের নাচের স্কুলের মেয়েদের নিয়ে অনুষ্ঠান করে ফেরার পথে রাস্তার মাঝখানে গাড়ি খারাপ হয়ে যায়| শুনশান রাস্তা তার উপর অধিক রাত অল্পবয়সী মেয়েগুলোকে নিয়ে সে তখন অথই সমুদ্রে| ড্রাইভার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গাড়িটিকে তাড়াতাড়ি সারাবার জন্য| ঠিক সেই মুহূর্তে একটি বাইকে করে তিনটি ছেলে এসে অযাচিতভাবে সাহায্য করার জন্য গল্প জুড়ে দিলো| মহুয়া তখন ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপছে| মহুয়ার মেয়ে তখন গাড়ি থেকে নেমে মহুয়ার সামনে গিয়ে ছেলেগুলিকে বলে তাদের কোন সাহায্যের দরকার নেই| অট্টহাসিতে তারা ফেটে পরে| আর ঠিক তখনই একটি ছেলে মহুয়ার মেয়ে মনামীর হাত ধরে টান দেয়| মহুয়া চিৎকার করে ওঠে| বাকি মেয়েগুলোও ভয়ে তখন জড়সড়|
বাড়িতে ফিরে মেয়ের গর্বে গরবিনী মা স্বামী এবং তার মাকে ডেকে হাসতে হাসতে গল্প করতে লাগলো কিভাবে তার ব্লাকবেল্ট পাওয়া মেয়ে তিন তিনটি ছেলেকে ধরাশায়ী করেছে| "ভ্যাগিস আজ মনা আমাদের সাথে ছিলো| ও একাই আজ আমাদের এতগুলো মেয়ের সম্মান বাঁচিয়েছে| আজ তোমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো প্রত্যেকটা মেয়ের ক্যারাটে শেখা কতটা দরকার| শুধু নিজেকে বাঁচাতেই নয় অন্য মেয়েদের সম্মান রক্ষার্থেও প্রত্যেকটা মেয়ের ক্যারাটে শিক্ষাটা জরুরি|"
No comments:
Post a Comment