Saturday, April 28, 2018

#অনুগল্প
  বুমেরাং
          নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

          প্রফেসার অনল রায় সারাদিন কলেজে ছাত্র পড়িয়ে,কলেজ ছুটির পরও প্রাইভেট টিউশন করে রাত দশটায় বাড়ি ফিরে রাতে শুতে গিয়ে সদ্য হওয়া পুত্র সন্তানের বাবা, ছেলের কান্নার চিৎকারে উঠে বসে বিরক্তি প্রকাশ করেন।স্ত্রী তখন ছেলেকে সামলাতে সামলাতে বলেন"প্রত্যেক বাবা-মা এভাবেই কষ্ট করে তার সন্তানদের মানুষ করেন এতে এত বিরক্ত হওয়ার কি আছে?"
---তারমানে আমার মাও এই কষ্ট করেই আমায় মানুষ করেছেন আর আমি তার প্রতিদান দিয়েছি মাকে বৃদ্ধাশ্রম পাঠিয়ে!আমি কালই মাকে বাড়িতে নিয়ে আসবো।
      শুনেই স্ত্রী খেঁকিয়ে উঠলো।"আনবে আনো আমি কিন্তু তার কিছুই করতে পারবো না।"
--তোমাকে কিছুই করতে হবেনা।আমি মায়ের জন্য লোক রেখে দেবো। সে ক্ষমতাও আমার আছে ।আর হ্যাঁ তোমার ছেলেকে এমন ভাবে মানুষ কোর যেন তার বিয়ের পর তোমার বৌমার অশান্তির ভয়ে তোমাকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না হয় ;যা আমি করতে বাধ্য হয়েছিলাম, সেও যেন তার মায়ের সর্বক্ষণ দেখাশুনার জন্য একজন আয়া রাখার ক্ষমতা রাখে।
 আমার ভুল আমি কালই শুধরে নেবো।

#  নন্দা 

Friday, April 27, 2018

           ভুল বুঝলে (অনুগল্প)
নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

               ট্যাক্সিটা শিয়ালদহ স্টেশনে দাঁড়ানোর সাথে সাথেই কালবৈশাখির দাপটে নাজেহাল নন্দিতা।চোখেও ভালো করে দেখতে পারছে না,প্রবল হাওয়ার বেগে চোখেও ধুলো ঢুকে গেছে।হঠাৎ একটি হাতের স্পর্শ।মনেহল যেন স্পর্শটি পরিচিত।হাত ধরে সোজা প্লাটফর্মের কাছে এনে নিজের মত লোকটি যখন চলে যাচ্ছে, কোনরকমে চোখটা কচলে নিয়ে নন্দিতা ডাকলো,"এই যে শুনছেন?"লোকটি পিছন ফিরে তাকালো।নন্দিতা দেখলো তিন বছর আগে চরিত্রের দোষ দিয়ে যাকে সে ডিভোর্স দিয়ে চলে এসেছিলো তার সেই পূর্বতন স্বামী।যাকে একদিন সে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো।নন্দিতাকে চুপ করে থাকতে দেখে সুতনু নিজেই বললো,"তোমাকে একটা খবর দেওয়ার ছিলো নন্দা,যাকে নিয়ে আমার সাথে তোমার ঝামেলাটা হয়েছিল সেই রূপালীর একটি মেয়ে হয়েছে।সম্পর্কে আমি তো ওর মামা হই ওর মুখে ভাত আগামীকাল তাই রুপার বাড়িতে চললাম।রুপাকে আমি সত্যিই বোনের চোখে দেখতাম;কিন্তু তোমায় বিশ্বাস করাতে পারিনি। "কথাকটি বলে নন্দিতার উত্তরের অপেক্ষা না করে সুতনু ভিড়ের মধ্যে মিশে গেলো।নন্দিতা চোখভর্তি জল নিয়ে ভিড়ের দিকে তাকিয়ে থাকলো ।

# নন্দা
 ( দার্জিলিং যাওয়ার পথে ট্রেনের ভিতর ।) 12-4-18)

Wednesday, April 25, 2018

বর্তমান যান্ত্রিক সভ্যতায় বহিরঙ্গ সুন্দর,
ভিতরে প্রোথিত অন্যায়,সহস্র পাপ,
অসাধু ও স্বার্থান্ধ মানুষ সৎপথে-
আজ আর ধনী হয়না!
চারিদিকে  অরাজনৈতিকতা,পাপ,অতিলোভ-
সর্বোপরি ধর্ষন দেশটাকে কলুষিত করছে,
মানুষের আচরন দিনকে দিন পশুতুল্য হচ্ছে,
হৃদয় আর বিশ্বাস  নামক শব্দদু'টি-
আভিধানিক অর্থেই রয়ে গেছে!
মানুষের মধ্যে তা বিলুপ্তির পথে;
মূল কারন স্বার্থকেন্দ্রিকতা,গদি ও অর্থলোভ।

           # নন্দা 


Tuesday, April 24, 2018

আমার দিন যাপন
          নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

চিরতরে চলে যেয়ে,
ঠাঁই নিলে হৃদয়ে,
কেন তবে হারাই তোমায়-
প্রতিক্ষণে প্রতিপলে?

নিশীথ রাতে স্বপন মাঝে,
যখন দেখি তোমায়,
হয়না মনে কখনো আমার,
ছেড়ে গেছো আমায়!

ঘুমের মাঝে তোমার সাথে,
বলি কত কথা,
দিনের আলোয় ছবির পানে,
তাঁকিয়ে অশ্রু মোছা।

দিন যাপনের সময় আমার,
এভাবেই যায় চলে,
সকল সময় থাকি আমি-
ব্যথার চাদর জড়িয়ে!

#নন্দা 

Saturday, April 21, 2018

সৌন্দর্যচর্চা ও রুচিবোধ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই যেহেতু স্বতন্ত্র প্রকৃতির তাই তাদের মত ও রুচিরও প্রভেদ থাকে।
             ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকেই আসে ব্যক্তিগত রুচিবোধ।এই রুচিবোধ অর্থ,বংশমর্যাদা বা শিক্ষার মাপকাঠি দিয়ে আসেনা।একই পরিবারের পাঁচটি সন্তানের রুচিবোধ পাঁচ রকম হয়ে থাকে। মানুষের রুচিবোধ অধিকাংশই তার মানসিকতা ও পরিবেশের উপর নির্ভর করে।তাই কথায় বলে,"পন্ডিতের বাড়ির বিড়ালও আড়াই অক্ষর লিখতে জানে"।
             আজকের যুগে অধিকাংশ মানুষই পরিচালিত হন সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের দ্বারা।সুতরাং তাদের পোশাক-পরিচ্ছদে ও আচার ব্যবহারে এক বিশাল পরিবর্তন দেখা যায়।ময়ূর পুচ্ছ পরিধান করলেই যে দাঁড়কাক ময়ূর হয়না এ কথা অনেকেই বোঝার চেষ্টায় করেননা!পরের বুলি আওড়ে আর পরের ভঙ্গি নকল করে নিজের বোধ-বুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে নিজের রুচিবোধকে নিম্নস্তরে নামিয়ে আনেন।যদি প্রত্যেকটা মানুষের মনে এমন ধারণার সঞ্চয় হত-'পরের ভালোকে গ্রহণ করবো আর নিজের মন্দকে পরিহার করবো'-তাহলেও কিছু কিছু মানুষের রুচিবোধ এত নিম্নস্তরে পৌঁছাতোনা!

#  নন্দা  (সম্পুর্ণ নিজস্ব মত)১১-৪-১৮


চাই একজন নেতা ---

কিছুক্ষণ
       নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

ট্রেন ছুটেছে কু-ঝিকঝিক শব্দ করে,
ট্রেন ছুটেছে মাঠ-ঘাট সব পেরিয়ে,
ট্রেন ছুটেছে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে-
ট্রেন ছুটেছে ট্রেন ---
জানলার পাশে বসে আমি দেখি-
বাংলা মায়ের অপরূপ সব দৃশ্য!
কত নর-নারী কাজ করে মাঠে,
নেই কোন ক্লান্তি,মুখে শুধু হাসি,
ছোট ছেলেমেয়ে বই নিয়ে হাতে,
মেঠো পথ ধরে স্কুলে যায় হেঁটে,
দুষ্টু ছেলেরা নদী-নালা পুকুর ঝাঁপায়,
কেউ গাছের ঝুরি ধরে দোল খায়। 
ক্ষণিকের তরে চোখে সব পরে,
দেয়না সময় ট্রেন কাউকেই-
বুকভরে সব দেখার-
নাম না জানা কত বনফুল,
ফুঁটে আছে অবহেলায়!
প্রকৃতি তার অকৃপণ হাতে,
সেজেছে মনের মাধুরী ঢেলে,
দূর থেকে দেখি বাঁশঝাড়গুলো-
মাথা উঁচু করে সব দাঁড়িয়ে-
চায় সে সূর্য্যকে ঢাকতে বুঝি,
সূর্য্য দেয় তারই মাঝে উঁকি।
ট্রেন ছোটে কু-ঝিকঝিক---
আমি ফিরি ছেলেবেলায়।

(দার্জিলিং যাওয়ার পথে ট্রেনের ভিতর।)
১৩-৪-১৮


Tuesday, April 10, 2018

লাগামহীন
      নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটছি---
ঠিক যেন লাগামহীন ঘোড়া---
উদ্দেশ্যবিহীন মোটেই নয়---
যশ,অর্থ সর্বোপরি সুখ---
তবু্ও জীবনে ছুটে চালাটা লাগামহীন---
নির্ঘুম রাতে ছুটে চলার হিসাবে---
উত্তর পরে থাকে শূণ্য---
নূতন প্রভাতে ভুলে যাই---
গতকালের হিসাবের ফল---
অর্ধ সমাপ্ত থেকে আবার ছোটা।

# নন্দা

Monday, April 9, 2018

মিষ্টি রাত
         নন্দা মুখার্জী রায় চৌধুরী

তোমায় ছাড়া যখন আমি একা,
তারাদের মাঝে পাই তোমার দেখা,
মনটা যখন ভীষনভাবে খারাপ,
চাঁদের সাথে জমাই তখন আলাপ,
কষ্টগুলো যায় ভেসে সব আকাশে,
হঠাৎ করেই পাই যে তোমায় পাশে,
রাতটা তখন ভারী মিষ্টি লাগে,
কাছে থাকতে লাগতো যেমন আগে।

#নন্দা

Tuesday, April 3, 2018

              জীবনে সবাই চায় আকাশ ছুঁতে।অনেক ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে তাই সামনের দিকে এগিয়ে চলে।ক্ষণিকের  জীবনে সুখ আর অর্থই যেন কাম্য সকলের!অর্জন করে কেউ সরল কেউবা বাঁকা পথে।জীবনে কখনো কখনো একটা সময় আসে এগুলো সব অর্থহীন মনেহয়। 

                 জীবন যেন একটা হাট!কেনাবেচা শেষে সকলেই যে যার ঘরে ফিরে যাবে।কিন্তু সে ঘরের নেই কোন ঠিকানা তবে সেই অজানা ঘরে যেতে হবেই সকলকে ।