Saturday, July 30, 2022

মানুষ চেনা বড় দায় ( নবম পর্ব)

 মায়ের অসুস্থ্যতার খবর পেয়ে হঠাৎ করেই অতনু গ্রামের বাড়িতে চলে যায়।বিয়ের পর বেশ কিছুদিন তার স্ত্রী তার সাথে থাকলেও পরে সেই যে বাচ্চা হতে সে বাপের বাড়িতে গেছে তারপর সে আর অতনুর কাছে ফিরে আসেনি।অতনু মাঝে মধ্যে তার শ্বশুরবাড়িতে যায়।আদরের দুলালী একাএকা তার সময় কাটে না তাই সে বাপের বাড়িতেই ছেলে নিয়ে থাকা সমীচীন মনে করেছে। অতনু বা তার মায়ের এতে কোনো আপত্তিও নেই; আর থাকলেই বা শুনছে কে? বুদ্ধিমত্তা আর কৃতজ্ঞতা বশত তারা এটাকে সানন্দেই মেনে নিয়েছেন।
  মায়ের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ দেখে সে মাকে কলকাতা নিয়ে আসতে চায়।রায় চৌধুরীবাবু তাকে সমর্থন করেন।একটা গাড়ি ভাড়া করে মাকে নিয়ে কলকাতার এক নামী নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে নিজে হোটেলে থাকতে শুরু করে। আস্তে আস্তে মায়ের অবস্থার উন্নতি হতে থাকে।একদিন ভিজিটিং আওয়ারে অতনুর মা অতনুকে বলেন,
--- ছেলেবেলায় বহুবার তুই তোর বাবার কথা জানতে চেয়েছিস তবে বড় হওয়ার পর কোনদিন আর বাবার কথা আমার কাছে বলিসনি। কিন্তু আমি কোনদিন তোকে তার সম্পর্কে কিছুই বলিনি। আজ আমি তোকে তার সম্মন্ধে কিছু জানাতে চাই।
--- আমি সব জানি মা।ঠাম্মা আমায় সব বলেছেন।কিন্তু তুমি কষ্ট পাবে বলে কোনদিন কিছু তোমায় বলিনি।তাকে আমি চিনি।তিনি কলকাতা শহরে কোথায় থাকেন? কি করতেন সব জানি।
  কথা বলতে বলতে মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে মায়ের দু'চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।হাত দিয়ে মায়ের চোখের জল মুছে দিয়ে বলে,
-- আমি জানি তুমি আজও বাবাকে ভালোবাসো।জীবনের সব থেকে মূল্যবান সময় তো কাটিয়েই ফেলেছো তবে কেন আজ এই চোখের জল ফেলছো?
-- একবার যদি তার সাথে দেখা হত শুধু একটা কথাই জানতে চাইতাম কি ছিলো আমার অপরাধ? তবে একটা কথা ভেবে অবাক হচ্ছি তুই তাকে কিভাবে চিনলি? তার বাড়ি, ঘরের ঠিকানা কিভাবে জানলি?

ক্রমশ 

No comments:

Post a Comment