Monday, February 17, 2025

সন্দেহ বড় রোগ (২ য় পর্ব)

সন্দেহ বড় রোগ (২ য় পর্ব )

  নিজের অফিস রুমে ঢুকে দ্রুত হাতে ড্রয়ার খুলে নিজের কার্ডটি বের করে পিছনে ঘুরতেই দেখে রমেশ এসে দাঁড়িয়েছে। কার্ডটা রমেশের হাতে দিয়ে নিজের চেয়ারে এসে বসেই ঢকঢক করে গ্লাসের পুরো জলটা শেষ করে দেয়। এসির পাওয়ারটাকে ১০ ডিগ্রীতে দিয়ে দেয়। অস্থির লাগছে বিদিশার তখন। মাঝে মাঝেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াচ্ছে, এদিকওদিক তাকিয়ে আবার বসে পড়ছে। কিছুতেই কাজে আর মন বসাতে পারছে না।
 বিদিশা নিজের শরীরটাকে চেয়ারে এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজে থাকে। ফিরে যায় পাঁচ বছর আগের দিনগুলিতে। কলেজে পড়াকালীন সময়ে সুদর্শন যুবক ক্লাসমেট সুনীলকে মন দিয়ে ফেলে। অফ পিরিয়ডে ক্যাম্পাসের ভিতর সবাই মিলে বড় ছাতিম গাছটার নিচে বসে সব গল্প করছিল। সেখানে সুনীলও ছিল। হাসি, ঠাট্টা, হৈ হট্টগোলের মধ্যেও মাঝে মাঝেই সুনীলের দিকে চোখ চলে যাচ্ছিল তার। এটা সুনীলেরও নজর এড়ায় না। আড্ডা শেষে সবাই যখন উঠে ক্লাস রুমের দিকে এগোচ্ছে ঠিক তখনই সুনীল বিদিশার গা ঘেষে এসে দাঁড়িয়ে বলে,
-- একটু কথা আছে দাঁড়িয়ে যা
 বুকের ভিতর বিদ্যুৎ খেলে যায় বিদিশার। সে দাঁড়িয়ে পড়ে। দু'জনে খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে। বিদিশা খুব আস্তে করে বলে,
-- আমার ক্লাস আছে। কী বলবে একটু তাড়াতাড়ি বলো।
-- এ ক্লাসটা আজ আর করা হবে না তোমার। কারণ কথা আমার একটা কিন্তু পরিকল্পনা বিশাল।
-- বুঝলাম না। একটু বুঝিয়ে বলো।
-- আমি যদি খুব ভুল করে না থাকি আমার মনেহচ্ছে তুমি বোধহয় আমাকে --
 বিদিশা চোখ নামিয়ে নেয়
-- আরে চোখ তুলে মুখের দিকে তাকিয়ে বলো, বারবার আড়চোখে এভাবে মুখের দিকে তাকালে অন্যরা কী বলবে?
 সুনীল হাসতে থাকে। বিদিশা উঠে চলে যেতে রেডি হয় কারণ সে বুঝতে পারে সুনীলের কাছে সে ধরা পড়ে গেছে।
-- তুমি যে কথাটা আমায় বলতে পারছো না আমি সেটা বলে দিচ্ছি। আরে এতে লজ্জা পাওয়ার কী আছে? ভালোবাসার কথা বলতে এত লজ্জা পেলে আজীবন দু'জনকেই পস্তাতে হবে।
 হাসতে থাকে সুনীল।
ছাতিম গাছতলায় সুনীল এবার আরও কাছে এগিয়ে আসে বিদিশার। তার ডানহাতটা ধরে বলে,
-- আমিও অনেকদিন ধরে তোমায় কথাটা বলবো ভাবছি। কিন্তু কী জানো? ভয় পাচ্ছিলাম যদি তুমি রাজি না হও? কিন্তু আজ আমি নিশ্চিত হয়েছি তুমিও আমায় ভালোবাসো।
 বিদিশা ফিক করে হেসে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যেতে যেতে বলে,
-- বাকি কথা কাল হবে। তুমিও চলে এসো ক্লাসে --

চলবে ,-

No comments:

Post a Comment