মানুষ চেনা দায় (দ্বিতীয় পর্ব)
মাস দু'য়েক হল কিছু নূতন ছেলেমেয়ে অফিসে জয়েন করেছে।তাদের কাজগুলো নিকিতাকেই দেখতে হয়।এদের মধ্যে অতনু একটু অন্য ধরনের আর অন্যান্যদের থেকে তার বয়সটা একটু বেশিই মনেহয়।কথা কম বলে,চুপচাপ থাকতেই পছন্দ করে।খুব একটা কারো সাথে বিনা প্রয়োজনে কথাও বলে না।আপন মনেই কাজ করে চলে।দেখলেই বোঝা যায় সব সময় যেন ভাবের রাজ্যে বিচরণ করছে।
গতকাল দুপুর তিনটে নাগাদ অফিসে যে যার চেয়ারে বসে কাজ করছিলো।অতনুর থেকে একটু দূরে রুফের একটা বিরাট সিমেন্টের অংশ ভেঙ্গে পড়ে।ঘটনা ঘটার জায়গা থেকে আশেপাশের সকলে প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক তখন ছুটছে।বেশ খানিকটা দূরেই ছিল নিকিতার টেবিল।এই হৈ হট্টগোলের মধ্যেও অতনু তার চেয়ারে বসে এক দৃষ্টিতে কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে কাজেই মগ্ন।অথচ স্টোন,বালি,সিমেন্ট তার টেবিলকেও রেহাই দেয়নি।রাগে গজগজ করতে করতে নিকিতা অতনুর টেবিলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে,
-- আচ্ছা আপনি কি কাজ ছাড়া কিছুই বোঝেন না?নাকি কানেই শুনতে পাননি এত বড় একটা সিমেন্টের চায় ভেঙ্গে পড়েছে!
নিকিতার কথা শেষ হতে না হতেই অতনু চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় আর ঠিক তখনই রুফের আর একটা দিকের অংশ ভেঙ্গে পরে।অতনু হুমড়ি খেয়ে নিকিতার গায়ের উপর পড়ে।
দুজনেই তাল সামলাতে না পেরে অন্য একটি টেবিলের কোণে ধাক্কা খেয়ে পুরো সিমেন্টের উপর।নিকিতা যত না ব্যথা পেয়েছে তার থেকে রাগ তার কয়েক গুণ বেড়ে গেছে।সামনে যারা দাঁড়িয়ে ছিল তারা এসে দুজনকে ধরে তোলে।
মাথা ঠিক রাখার মত অবস্থা তখন নিকিতার ছিল না।রেগেমেগে বেশ খানিকটা কথা অতনুকে তখন শুনিয়ে দেয়।পড়ে জানতে পারে অতনুর বাম হাতটা অনেকটা কেটে গেছে।
বাসের সিটে বসে নিকিতা খেয়াল করে অতনুর বাম হাতটা একটা ব্যান্ডেজ বাঁধা।কিন্তু কি অদ্ভুত অফিসের স্টপেজ আসার আগেই চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়ে নেমে গেলো। নামবার সময় একটুর জন্যও নিকিতার দিকে তাকালো না যেন চেনেই না।নিকিতা মনেমনে ভাবলো "ভারী অদ্ভুত তো।"
ক্রমশ -
No comments:
Post a Comment